ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

পুঁজিবাজারে আস্থা সঙ্কট

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

পুঁজিবাজারে আস্থা সঙ্কট

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ৮৫ শতাংশ কোম্পানির দর পতনে সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক কমেছে ২৫৪ পয়েন্ট। এ সময় ডিএসইর লেনদেন কমেছে প্রায় ৪৫ শতাংশ। সদ্য সমাপ্ত সপ্তাহে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৩১টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৪৪টি, দর কমেছে ২৮১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫টির। আর লেনদেন হয়নি ১টি কোম্পানির শেয়ার। মুদ্রানীতিকে কেন্দ্র করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সৃষ্ট আতঙ্কে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে দরপদন হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে মুদ্রানীতিতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫৪ পয়েন্ট বা ৪.৫১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩৬৫ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসইএক্স শরিয়াহ সূচক ৩৮ পয়েন্ট বা ২.৯২ শতাংশ ও ডিএসই ৩০ সূচক ৮২ পয়েন্ট বা ৪ শতাংশ কমেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে ৩৩০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর কমেছে ২৮১টি বা ৮৫.১৫ শতাংশ কোম্পানির। আর দর বেড়েছে ৪৪টি বা ১৩.৩৩ শতাংশ কোম্পানির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৫টি বা ১.৫২ শতাংশ কোম্পানির। এদিকে গত সপ্তাহে মোট ৪ হাজার ৭৯৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহে হয়েছিল ৮ হাজার ৬৫৭ কোটি ১৭ লাখ টাকার। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ৪৪.৫৯ শতাংশ। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, মুদ্রানীতিতে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই। তবে মুদ্রানীতি ঘোষণার পর যেভাবে দরপতন হচ্ছে সেটা স্বাভাবিক নয়। ডিএসইর পরিচালক রকিুবর রহমান বলেন, শেয়ারবাজারে নজরদারি অতীব জরুরী বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নরের এমন মন্তব্যে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ফলে শেয়ার বিক্রির চাপে শেয়ারবাজারে পতন হচ্ছে। এছাড়া কোন কারণ নেই। তবে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এ সময় ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৫ দশমিক ৫শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১ দশমিক ৯ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ। সপ্তাহের শুরুতে ডিএসই’র বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৭৪ হাজার ১১৭ কোটি টাকা। সপ্তাহের শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬২ হাজার ১১৯ কোটি টাকায়। অর্থাৎ গত সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে ৩.২১ শতাংশ। গত সপ্তাহে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। এ সময় কোম্পানির ১৮৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৩.৮৯ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইসলামী ব্যাংকের লেনদেন হয়েছে ১৭২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৩.৬০ শতাংশ। ১৩৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আরএসআরএম স্টিল। লেনদেনে এরপর রয়েছে যথাক্রমে- লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, বারাকা পাওয়ার, সাইফ পাওয়ারটেক, এসিআই লিমিটেড, ইফাদ অটোস, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সাপ্তাহে লেনদেনে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কমেছে ৩.৬৯ শতাংশ। বর্তমানে ডিএসই’র পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৫.৪১ পয়েন্টে। যা গত সপ্তাহের শুরুতে ছিল ১৬ পয়েন্ট। অর্থাৎ পিই কমেছে ০.৫৯ পয়েন্ট বা ৩.৬৯ শতাংশ। বর্তমানে খাতভিত্তিক হিসাবে ব্যাংকিং খাতের পিই অবস্থান করছে ১০.৯১ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতে ৩২.২১, সিরামিকস খাতে ২৭.৬৯, প্রকৌশল খাতে ২১.২৭, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ২২.০৪, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ২৩.৬৫, জ্বালানি ও বিদ্যুত খাতে ১২.৭৭, বীমা খাতে ২০.৫২, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৩০.৫৩, বিবিধ খাতে ২৮.৫৭, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১৮.২০, সেবা ও আবাসন খাতে ১৯.৫৫, ট্যানারি খাতে ১৮.৮২, টেলিযোগাযোগ খাতে ১৮.৯৩, বস্ত্র খাতে ১৫.৫৩ এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাত ২৭.৯৫ পয়েন্টে রয়েছে।
×