ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি গ্রীসের

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি গ্রীসের

দীর্ঘদিন ধরে ঋণ ভারে জর্জরিত ইউরোপীয় দেশ গ্রীস। এরই মধ্যে দেশটির কৃষকেরা আবার বিক্ষোভে নেমেছেন। তারা সড়ক ও সীমান্ত চৌকি অবরোধ করছেন। এতে মনে হচ্ছে, দেশটি আবার সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে। খবর গার্ডিয়ানের। কৃষকদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সামাজিক অস্থিরতার নিয়মিত চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর থেকে কোনভাবেই বের হতে পারছে না গ্রীস। সাত বছরের বেশি সময় ধরে চলছে দেশটির অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং এর আগেও ঋণ সঙ্কটের অভিজ্ঞতা নিয়েছে তারা। ইইউ থেকে বেরিয়ে যেতে ব্রিটেনের ভোটের কারণে গত বছরের সৃষ্ট জল্পনা-কল্পনা এবং সমানভাবে ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিতভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার ঘটনায় দেউলিয়াত্ব ঠেকাতে গ্রীসের কঠিন লড়াই লোকচক্ষুর আড়াল হয়ে যায়। এথেন্স ও তাদের ঋণদাতাদের মধ্যে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচী (বেইলআউট) নিয়ে আলোচনা থেমে গেছে। আর তাই গ্রেক্সিট বা ইইউ থেকে গ্রীসের বেরিয়ে যাওয়া সম্ভাবনা আবারও দেখা দিয়েছে। দেশটির বন্ডের মুনাফার পরিমাণ বেড়ে গেছে। দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে দুই বছর মেয়াদী সরকারী বন্ডের মুনাফা ৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে এবং আতঙ্কগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা তাদের পণ্য অন্য দেশে স্বল্প মূল্যে বিক্রি করে দিয়েছেন। ২০১৫ সালে মহাসংকটে সর্বশেষ যে তিক্ত বাগ্বিত-ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা আবার নতুন করে দেখা দিয়েছে। গ্রীসের বিখ্যাত রাজনৈতিক ভাষ্যকার প্যান্টেলিস ক্যাপসিস বলেন, আমি খুবই উদ্বিগ্ন, আমরা ইইউয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের দিকে যাচ্ছি। অনেক লক্ষণ দেখা দিয়েছে, যার মাধ্যমে ক্ষমতাসীন সিরিজা পার্টির লোকেরা ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নানা পরিকল্পনার কথা ভাবছেন। যেটি নিশ্চিত তাহলো আমরা খুবই কঠিন সময়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। যেখান থেকে ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। ইইউয়ের অধীনে তৃতীয় বেইলআউটের কথা বিবেচনায় এথেন্সকে চলতি সপ্তাহে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে, গ্রীসকে দেয়া ৮ হাজার ৬শ’ কোটি ইউরোর ঋণ সহায়তা প্যাকেজের জন্য বেঁধে দেয়া শর্ত পুরোপুরি বাস্তবায়ন না করা পর্যন্ত সংকট মোচনে আর কোন তহবিল সরবরাহ করা হবে না। এদিকে আগামী জুলাইয়ে দেশটিকে ৭৪০ কোটি ইউরো ঋণ পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু দেশটির খেলাপী হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। কারণ ওই সময়ে মধ্যে দেশটির রাজকোষ শূন্য হয়ে পড়বে। বর্তমান বেইলআউটের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ঋণদাতারা অতিরিক্ত ব্যয়সংকোচন ব্যবস্থার দাবি করার কারণে অচলাবস্থা আরও ঘনীভূত হয়েছে। পোলিং ইনস্টিটিউট আলকোর প্রধান কস্তাস প্যানাগোপুলস বলেন, আমরা যা দেখছি তা প্রকৃত অর্থনীতির জন্য একটি দুর্যোগ। কারণ সবকিছুই স্থবির হয়ে পড়েছে। আমরা যখন অর্থনৈতিক বিপর্যয় নিয়ে কথা বলছি, তখন আবারও গ্রেক্সিট প্রসঙ্গ উত্থাপন করছি। তিনি আরও বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহ গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোন সমঝোতা না হয়, তাহলে আরও অনিশ্চয়তা দেখা দেবে। আমরা জানি না, গ্রীস কীভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবে।
×