ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রিজার্ভ চুরির সাড়ে ৬ কোটি ডলার ফেরত পাওয়া অনিশ্চিত

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

রিজার্ভ চুরির সাড়ে ৬ কোটি ডলার ফেরত পাওয়া অনিশ্চিত

রহিম শেখ ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের আলোচিত রিজার্ভ চুরির এক বছর পূর্ণ হলো আজ। এই সময়ে ১ কোটি ৪৫ লাখ মার্কিন ডলার ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ। এখনও উদ্ধার হয়নি সাড়ে ৬ কোটি ডলার। চুরির এক কোটি ৫৪ লাখ ডলারের এখনও হদিস মেলেনি। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক দাবি করছে, রিজার্ভ চুরির পুরো অর্থই শনাক্ত করা গেছে। এ ঘটনায় অর্থমন্ত্রী একাধিকবার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করার কথা জানালেও পরে সেখান থেকে পিছু হটেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা একটি মামলার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সেই প্রতিবেদন জমার দিন তারিখ দশবারের মতো পেছাল। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য করেছেন বিজ্ঞ আদালত। এদিকে রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংক কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) আপত্তির মুখে রিজার্ভ চুরির বাকি সাড়ে ছয় কোটি ডলার উদ্ধারে দীর্ঘসূত্রতা দেখা দিয়েছে। অর্থ উদ্ধারে এ পর্যন্ত ফিলিপিন্স সরকার তিনটি মামলা করেছে। আরও দুটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। মামলাগুলোই এখন টাকা ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও গণমাধ্যম প্রথম দিকে সরব থাকলেও তিন মাস ধরে এ বিষয়ে তারা নিশ্চুপ। এমনকি অর্থমন্ত্রীর চিঠিরও জবাব দিচ্ছে না ফিলিপিন্স। একইভাবে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক বার বার যোগাযোগ করলেও সাড়া দিচ্ছে না ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক। এ অবস্থায় সহায়ক হিসেবে আন্তর্জাতিক লবিস্ট নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। তবে মামলা না করে কীভাবে টাকা ফেরত আনা যায় সে বিষয়টি নিয়ে ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কারণে মামলা ছাড়া আর কী পদক্ষেপ নেয়া যায় সে ব্যাপারে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ (এপিজি) ও আন্তর্জাতিক এ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের (এএমএলসি) সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ। জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে চুরি করে নেয়া হয়। এর মধ্যে ৬ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের সন্ধান পাওয়া গেছে। আর ১ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের সন্ধান পাওয়া যায়নি। সন্ধান পাওয়া রিজার্ভের অর্থের মধ্যে ২ কোটি ৮০ লাখ ডলার আছে সোনেয়ার রিসোর্ট ও ক্যাসিনো ম্যানিলার ব্যাংক হিসাবে। ১ কোটি ৭০ লাখ ডলার আছে ফিলিপিন্সের রেমিটেন্স কোম্পানি ফিলরেমের হিসাবে। সূত্রমতে, ফিলিপিনো-চায়নিজ ব্যবসায়ী কিম অং ফেরত দিয়েছেন ১ কোটি ৪৫ লাখ মার্কিন ডলার। ৬০ লাখ ডলার এখনও রয়েছে কিম অংয়ের কাছে। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংক কর্পোরেশন (আরসিবিসি) জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির অর্থ তারা ফেরত দেবে না। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের অবহেলার কারণেই রিজার্ভের অর্থ চুরি হয়েছে। সংস্থাটির এ ধরনের ঘোষণা টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়টিকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। এর পর পরই অর্থ উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে ফিলিপিন্স সফর করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। ফিলিপিন্স সরকার রিজার্ভ চুরির অর্থ আদায়ে সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে বলে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলকে আশ্বাস দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান জনকণ্ঠকে বলেন, ফিলিপিন্স থেকে রিজার্ভ চুরির অর্থ ফেরত আনতে সরকার সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনার দায় হিসেবে আরসিবিসি ব্যাংকের বিরুদ্ধে জরিমানা আরোপ করেছে ফিলিপিন্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে প্রমাণিত হয়, চুরির ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে আরসিবিসির। তবে আরসিবিসির অস্বীকৃতি এবং মামলার দীর্ঘসূত্রতায় অর্থ ফেরত পাওয়া বিলম্ব হবে বলে তিনি মনে করেন। সূত্রমতে, চুরি হওয়া রিজার্ভের ২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার সোনেয়ার ক্যাসিনোর কাছে রয়েছে। এ ব্যাপারে ফিলিপিন্সের উচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাসিনোর ব্যাংক হিসাবটি ফ্রিজ (জব্দ) করা হয়। পাশাপাশি ফিলিপিন্সের সুপ্রীমকোর্টের মাধ্যমে ক্যাসিনোর ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ আদেশের পক্ষে অস্থায়ীভাবে আরও একটি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কারণ উচ্চ আদালতের আদেশ যে কোন সময় তুলে নেয়া হলেও সুপ্রীমকোর্টের এ আদেশে ক্যাসিনো কর্তৃপক্ষ হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলন করতে পারবে না। অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, আইন মন্ত্রণালয় অর্থমন্ত্রীকে জানিয়েছে, ফেডারেল রিজার্ভ কিংবা রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে মামলা করা যেতে পারে। তবে তা হবে দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। আন্তর্জাতিক মানি লন্ডারিং আইন অনুযায়ী এ টাকা ফেরত দিতে আরসিবিসি বাধ্য। এ ক্ষেত্রে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংককে পরামর্শ দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। তবে দু-এক জন আন্তর্জাতিক লবিস্ট নিয়োগ করা যেতে পারে বলেও মত দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ ধরনের সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক লবিস্ট কার্যকর ভূমিকা পালন করে বলে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তা জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে তাদের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেয়া যায়, এ ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী। জানা গেছে, অর্থ ফেরত আনতে সরকার গঠিত টাস্কফোর্সের বৈঠক সম্প্রতি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ফিলিপিন্সের এন্টিমানিলন্ডারিং কাউন্সিল (এএমএলসি) এবং বিচার বিভাগের কাছে রিজার্ভ উদ্ধারের আইনী প্রক্রিয়ার অগ্রগতি জানার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নির্দেশ দেয়া হয়। টাস্কফোর্স বৈঠকের কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, গত বছর ১৬ আগস্ট নিউইয়র্কে রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধারের বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক এবং সুইফটের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানে সংস্থাগুলোর কর্তৃপক্ষ চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে। পাশাপাশি এ সংক্রান্ত একটি যৌথ ঘোষণাপত্র জারি করা হয়। ওই ঘোষণাপত্রের সূত্র ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে সহায়তা চেয়েছে এবং যোগাযোগ রাখছে। বৈঠকে টাস্কফোর্সের সভাপতি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির অর্থ ফেরত আনতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নিয়ে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করা প্রয়োজন। এদিকে রিজার্ভ চুরির সঙ্গে দেশী এবং বিদেশী চক্র জড়িত থাকার বিষয়টি সরকার নিশ্চিত হয়েছে। ফলে দেশের বাইরের জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাবছে সরকার। তবে নিয়ম অনুযায়ী বিদেশী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করতে একটি নির্দিষ্ট টাইম ফ্রেম থাকে। এর মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বিদেশীদের বিরুদ্ধে মামলা বা আইনী পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে কোন ধরনের টাইম ফ্রেমের প্রয়োজন আছে কিনা, তা জানার নির্দেশ দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটকে (বিএফআইইউ)। এক্ষেত্রে দেশের বিজ্ঞ আইনজীবীদের মতামত সংগ্রহের কথা বলা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএফআইইউ’র মহাব্যবস্থাপক দেবপ্রসাদ দেবনাথ বলেন, রিজার্ভ চুরির ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে আরসিবিসির বিরুদ্ধে এরই মধ্যে ২ কোটি ১০ লাখ ডলার জরিমানা আরোপ করেছে ফিলিপিন্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি আরসিবিসির ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ফিলিপিন্সের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। এ পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে আরসিবিসি ব্যাংককে রিজার্ভ চুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফিলিপিন্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে যে অর্থ জমা আছে তা পাওয়া যাবে শীঘ্রই। কিন্তু এর জন্য কিছু আইনগত বিষয় রয়েছে। এখন সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাকি অর্থ ফেরত দেয়ার ব্যাপারে ফিলিপিন্স কতটা সহযোগিতা করছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা যথেষ্ট আন্তরিক। এ ক্ষেত্রে আইনগত বিভিন্ন বাধা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ এ ব্যাপারে জনকণ্ঠকে বলেন, চুরি হওয়া অর্থ ফেরত আনা সময়সাপেক্ষ। তবে ফিলিপিন্স আন্তরিক হলে দ্রুত ফেরত আনা যেতে পারে। ফিলিপিন্স কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর ফেডারেল রিজার্ভ চাইলে আরসিবিসিকে অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য করতে পারে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক এ্যান্টি মানি লন্ডারিং আইন অনুযায়ী কোন ব্যক্তি, দেশ বা প্রতিষ্ঠান ফেডারেল রিজার্ভকে ব্যবহার করে এক ডলার মানি লন্ডারিং করলে তার কাছ থেকে দ্বিগুণ হারে জরিমানা আদায় করা যাবে। তবে তা তদন্ত ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। ফিলিপিন্স ও ফেডারেল রিজার্ভ চুপ ॥ ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে চুরি হওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফেরত দেয়া নিয়ে কোন কথা বলছে না ফিলিপিন্স। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও গণমাধ্যম প্রথম দিকে সরব থাকলেও গত তিন মাস ধরে এ ব্যাপারে তারা নিশ্চুপ। এমনকি অর্থমন্ত্রীর চিঠিরও জবাব দিচ্ছে না ফিলিপিন্স। একইভাবে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক বার বার যোগাযোগ করলেও সাড়া দিচ্ছে না ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক। এ অবস্থায় সহায়ক হিসেবে আন্তর্জাতিক লবিস্ট নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। তবে মামলা না করে কীভাবে টাকা ফেরত আনা যায় সে বিষয়টি নিয়ে ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কারণে মামলা ছাড়া আর কী পদক্ষেপ নেয়া যায় সে ব্যাপারে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ (এপিজি) ও আন্তর্জাতিক এ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের (এএমএলসি) সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ। সব অর্থ শনাক্তের দাবি গবর্নরের ॥ গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে গবর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির টাকা উদ্ধারের বিষয়টি বিচারিক প্রক্রিয়ায় আছে। তিনি বলেন, রিজার্ভ হ্যাকিংয়ে ৮১ মিলিয়ন ডলার চলে গেছে। সেই বিষয় আমাদের একাধিক প্রতিনিধি ফিলিপিন্সে গিয়েছেন। গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আমাদের একটি প্রতিনিধি দল গিয়েছিল। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন আইনী প্রক্রিয়ায় আছি। তাৎক্ষণিক যে ১৫ বিলিয়নের মতো আমরা পেয়েছি সেটা একজন অপারেটর সালেন্ডার করে দিয়েছেন। উনি চেয়েছেন এটা দিয়ে দায়মুক্ত হতে। অন্য যেগুলো রয়েছে এর জন্য আমরা ওখানে মিউচুয়াল লিগাল এ্যাসিস্টেন্ট ঠিক করেছি। সেই অনুযায়ী সেখানকার ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস সেটা ডিল করছে। তিনি বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক তাদের সঙ্গে ঢাকা থেকে যোগাযোগ করছি। সবগুলো জুডিশিয়ারি প্রসেসে আছে। তবে এখন সব টাকাই শনাক্ত করা গেছে। সমস্যা সামাধানের পর তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন অর্থমন্ত্রী ॥ একাধিকবার রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করার কথা জানালেও শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে সরে আসেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। প্রতিবেদনের বিষয়ে সর্বশেষ গত মাসে সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি হওয়া অর্থ আদায়ের সমস্যা সামাধান হওয়ার পর তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, নিজের দায় এড়িয়ে কেউ এই রিপোর্ট থেকে সুবিধা পাক- সেটা আমি চাই না। রিজাল ব্যাংক চুরির টাকা নিয়ে বাহাদুরি করছে। তারা এটা করতে পারে না। মুহিত বলেন, টাকার মালিককে টাকা ফেরত দিতেই হবে। তাদের (রিজাল ব্যাংক) আচরণ গ্রহণযোগ্য না। এটার সমাধানের পর প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। সিআইডির প্রতিবেদন ১০ বারের মতো পেছাল ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন দিন ধার্য করা হয়েছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে এই মামলায় ১০ বারের মতো প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হলো। প্রসঙ্গত এ ঘটনায় গত বছরের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের এ্যাকাউন্টস এ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫)-এর ৪ ধারাসহ তথ্য ও প্রযুক্তি আইন, ২০০৬-এর ৫৪ ধারায় ও ৩৭৯ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির দেড় মাস পরে মামলার কারণে, বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ হাতছাড়া হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে সিআইডি। সংস্থাটির উর্ধতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনকণ্ঠকে বলেন, ওই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের চিহ্নিত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মিললে, যেকোন সময় তাদের গ্রেফতার করা হবে। তবে তদন্তে যাদের নাম বেরিয়ে এসেছে, এখনই তাদের নাম প্রকাশ করতে রাজি নয় সিআইডি। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে সাবেক গবর্নর আতিউর রহমানসহ প্রায় ১২০ কর্মকর্তাকে।
×