ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গোপন বৈঠককালে মোহাম্মদপুরে আটক ২৮ জামায়াত নেত্রী রিমান্ডে

নাশকতা ও সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা

প্রকাশিত: ০৫:২০, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

নাশকতা ও সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের ২৮ নারী নাশকতা এবং সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা করতেই জড়ো হয়েছিল। নাশকতাসহ সরকার উৎখাতের পরিকল্পনার বিষয়ে গোপন আলোচনা করতেই তারা গোপন বৈঠক করছিল। মোহাম্মদপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতারকৃতদের দুদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। গত ২ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন তাজমহল রোডের ১১/৭ নম্বর দোতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে গোপন বৈঠক করার সময় গ্রেফতার হয় ২৮ নারী। তারা জামায়াতে ইসলামের বিভিন্ন পর্যায়ের নেত্রী ও কর্মী। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, জামায়াতে ইসলামীর নারী বিভাগের সেক্রেটারি জেনারেল শাহনাজ বেগম (৫৬), রোকন পর্যায়ের নেত্রী নাঈমা আক্তার (৫৫), উম্মে খালেদা (৪০), জোহরা বেগম (৩৫), সৈয়দা শাহীন আক্তার (৪০), উম্মে কুলসুম (৪২), জেসমিন খান (৪৩), খোদেজা আক্তার (৩২), সালমা হক (৪৫), সাকিয়া তাসনিম (৪৭), সেলিমা সুলতানা সুইটি (৪৮), হাফসা (৫৫), আকলিমা ফেরদৌস (৩৭), রোকসানা বেগম (৫১), আফসানা মীম (২৫), শরীফা আক্তার (৫৩), রুবিনা আক্তার (৩৮), তাসলিমা (৫২), আসমা খাতুন (৩৫), সুফিয়া (৪১), আনোয়ারা বেগম (৪৬), ইয়াসমিন আক্তার (৪১), সাদিয়া (৪৫), ফাতেমা বেগম (৫১), উম্মে আতিয়া (৪৬), রুমা আক্তার (৩২), রাজিয়া আক্তার (৪২) ও রাহিমা খাতুন (৩০)। ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার হাফিজ আল ফারুক জনকণ্ঠকে জানান, তাদের সবার কাছ থেকেই একটি করে ব্যক্তিগত ডায়েরি জব্দ হয়। এছাড়াও বাসা থেকে জব্দ হয় নানা ধরনের নথিপত্র। বাড়িটি একজনের নামে বরাদ্দকৃত বলে জানা গেছে। তার বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। জব্দকৃত ডায়েরি ও নথিপত্রে তাদের প্রতিদিনের কর্মকা- লিপিবদ্ধ রয়েছে। এছাড়া নতুন কর্মী সংগ্রহ কার্যক্রম, সম্ভাব্য নতুন কর্মীদের নামীয় তালিকা, পুরনো কর্মীদের নামের তালিকা, তাদের নানাভাবে সহযোগিতাকারী, যোগাযোগ রক্ষাকারীদের নামের তালিকা, নতুন ও পুরনো কর্মীদের সঙ্গে মাসে কতটি মিটিং হয়েছে, আরও কতটি মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে, মিটিংয়ের আলোচনার বিষয়বস্তু, আলোচনার প্রেক্ষিতে বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয়, পুরনো কর্মীদের কর্মকা-সহ দলের ও দলের বাইরের অনেকের সম্পর্কেই ব্যক্তিগত তথ্য রয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। শুক্রবার সকালে মোহাম্মদপুর থানায় এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতারকৃতদের কাছে বই, সাংগঠনিক বিভিন্ন নথিপত্র, উগ্রবাদ ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বই, লিফলেটসহ বিভিন্ন আলামত পাওয়া গেছে। ওই নারীরা নাশকতা ও সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা করতেই জড়ো হয়েছিল। তারা নানাভাবে সরকারকে বিব্রত করার ষড়যন্ত্র করছিল। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে কয়েকজন যুদ্ধাপরাধের দ-প্রাপ্ত আসামিদের পরিবারের সদস্য রয়েছেন। ঢাকা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকেও অনেকেই এসেছেন। অধিকাংশই শিক্ষিত। কেউ কেউ কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তবে অনেকেই তাদের প্রকৃত পরিচয় দিচ্ছেন না। তাদের তাবলীগের কথা বলে ধর্মীয় কর্মকা-ের আড়ালে নাশকতা ছড়ানোর পরিকল্পনা ছিল। আমাদের কোর্ট রিপোর্টার জানান, শুক্রবার বিকেলে ওই মামলায় গ্রেফতারকৃতদের ঢাকার সিএমএম আদালতে সোর্পদ করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেনস্) শরিফুল ইসলাম। ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসাইন শুনানি শেষে প্রত্যেককে ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
×