ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হামলার জবাব হবে ধ্বংসাত্মক

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

হামলার জবাব হবে ধ্বংসাত্মক

উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করলে তাকে এক কার্যকর ও ধ্বংসাত্মক জবাবের সম্মুখীন হতে হবে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমসম্যাটিস ওই দেশটির প্রতি এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় দুই দিনের সফর শেষে শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। খবর বিবিসি ও গার্ডিয়ান অনলাইনের। উত্তর কোরিয়া দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর কোন হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র পদক্ষেপ নেবে বলে ম্যাটিস সিউল সরকারকে পুনরায় আশ্বাস দেন। জাপানের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে সিউলে ম্যাটিস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বা আমাদের মিত্রদের ওপর যে কোন হামলা এবং পরমাণু অস্ত্রের যে কোনরূপ ব্যবহারের কার্যকর ও ধ্বংসাত্মক জবাব দেয়া হবে। উত্তর কোরিয়া এক নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে উদ্বেগ চলার মধ্যে ম্যাটিস ওই মন্তব্য করলেন। এটি ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য শীঘ্রই এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে। উত্তর কোরিয়ার বারবার ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু পরীক্ষা ও আগ্রাসী বিবৃতি ওই অঞ্চলে ভীতি ও ক্ষোভের সঞ্চার করে চলেছেন। উত্তর কোরিয়া জাতিসংঘের প্রস্তাব ও নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে গত বছর ২০ বারেরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এবং দু’বার পরমাণু পরীক্ষা চালায়। দেশটি নিয়মিতই দক্ষিণ কোরিয়া ও এর প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করার হুমিক দিয়ে থাকে। উত্তর কোরিয়া এর প্রধান ইয়ংরিয়ন পরমাণু স্থাপনায় একটি চুল্লি পুনরায় চালু করেছে বলেও মনে হয়। এ স্থাপনাতে প্লুটোরিয়াম তৈরি করা হয়, যা দেশটির পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচীর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। মার্কিন গবেষণা সংস্থা হ্যাটি এইচ নর্থ এ কথা জানায়। ম্যাটিস বলেন, উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ, এর পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচীর উন্নয়ন এবং আক্রমণাত্মক হুমকি ও আচরণ চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে তিনি তার দক্ষিণ কোরীয় প্রতিপক্ষ হান মিনকুর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। উত্তর কোরিয়ার তৎপরতার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে প্রবৃত্ত হয়। এ মধ্যে রয়েছে থার্মাল হাই এ্যাল্টিচ্যুড এরিয়া ডিফেন্স নামে (থাড) এক মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা। থাড চলতি বছরের শেষদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েন করা হবে বলে প্রত্যাশা করা হয়। দক্ষিণ কোরীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী হান মিনকু থাড মোতায়েনের পরিকল্পনা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ম্যাটিসের সিউল সফর জোরালো মার্কিন সমর্থনের এক স্পষ্ট বার্তা পাঠিয়েছে। প্রতিরক্ষা হিসেবে ম্যাটিসের এটিই প্রথম বিদেশ সফর। হান বলেন, বর্তমান কঠিন নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে ম্যাটিসের কোরিয়া সফর উত্তর কোরিয়ার প্রতি কঠোরতম সতর্কবাণীও বটে। কিন্তু থাড ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অনেক দক্ষিণ কোরীয়র কাছেই অজনপ্রিয়। তাদের আশঙ্কা, ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিগুলো আক্রমণের লক্ষ্যস্থল হতে পরে এবং এতে আশপাশের লোকজনের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। এ পরিকল্পনায় চীনও ক্ষুব্ধ হয়েছে। চীন বলছে, এটি কোরীয় উপদ্বীপের প্রতিরক্ষা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বিস্তৃত। বৃহস্পতিবার চীনকে আবার আশ্বস্ত করতে গিয়ে ম্যাটিস বলেন, থাড নিয়ে উত্তর কোরিয়া ছাড়া অন্য কোন দেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। পূর্ণমাত্রায় উন্নত করা হলে কোন উত্তর কোরীয় আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি হুমকির সৃষ্টি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়া থেকে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার (৫৫,০০০ মাইল) দূর অবস্থিত। আইসিবিএমের ন্যূনতম পাল্লা প্রায় ৫,৫০০ কিলোমিটার (৩,৪০০ মাইল), কিন্তু কোন কোনটি ১০,০০০ কিলোমিটার (৬,২০০ মাইল) বা এরও বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞ বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার দ্রুত সম্প্রসারণশীল পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী রোধের চেষ্টা করতে হলে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে মূলত দুটি উপায় রয়েছে আলোচনা বা সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ। কোন উপায়ই সাফল্যের নিশ্চয়তা দেয় না। আর সামরিক উপায় বিশেষত জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে। এ দুটি দেশ উত্তর কোরিয়া সংলগ্ন মার্কিন মিত্র।
×