ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সার্চ কমিটি কাদের নাম সুপারিশ করে দেখার অপেক্ষায় বিএনপি

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সার্চ কমিটি কাদের নাম সুপারিশ করে দেখার অপেক্ষায় বিএনপি

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ নতুন নির্বাচন কমিশনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সার্চ কমিটি কাদের নাম সুপারিশ করে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে বিএনপি। বিএনপি চায় সার্চ কমিটি বিএনপির দেয়া নাম রাখুক বা না রাখুক নতুন নির্বাচন কমিশনের জন্য তারা যেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করেন। আর তা করা হলে আগে সমালোচনা করলেও পরবর্তীতে সার্চ কমিটিকে ধন্যবাদ দিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে বিএনপি। উল্লেখ্য, ২৫ জানুয়ারি সার্চ কমিটি গঠনের পর থেকেই এ কমিটি নিরপেক্ষ নয় বলে কঠোর সমালেচনা করতে থাকে বিএনপি। কিন্তু এক পর্যায়ে এ কমিটির বিষয়ে কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসে শেস পর্যন্ত সার্চ কমিটি কি করে তা দেখার পক্ষে অবস্থান নেয় দলটি। সেই সঙ্গে সার্চ কমিটির কার্যক্রম বিভিন্নভাবে পর্যবেক্ষণে রাখে তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে আপাতত নেতিবাচক সমালোচনা না করে সার্চ কমিটির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে নতুন নির্বাচন কাছে কাদের নাম প্রস্তাব করে তার জন্য অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। ২৫ জানুয়ারি সুপ্রীমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান করে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচাপতি ওবায়দুল হাসান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মাসুদ আহমেদ, সরকারী কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য শিরীন আখতার। এই সার্চ কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে নতুন নির্বাচন কমিশনের জন্য নাম সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। ২৭ জানুয়ারি সুপ্রীমকোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে প্রথম বৈঠকে বসে সার্চ কমিটি। ওই বৈঠকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়া ৩১টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঁচটি করে নাম চাওয়া ও দেশের ১২ বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের পরামর্শ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরই অংশ হিসেবে ৩০ জানুয়ারি ১২ বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে বৈঠকে করে সার্চ কমিটি। পরদিন ৩১ জানুয়ারি ২৬টি রাজনৈতিক দল তাদের পছন্দের পাঁচজন করে নাম জমা দেয় সার্চ কমিটির কাছে। ১ ফেব্রুয়ারি আবারও চার বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে বৈঠক করে সার্চ কমিটি। এর পর রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে পাওয়া শতাধিক নাম থেকে ২০টি নাম বাছাই করে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়। বৃহস্পতিবার এই নামগুলো নিয়ে অধিকতর পর্যালোচনা করে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করে সার্চ কমিটি। ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নামসহ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সুপারিশ পাঠাবে। এর পরই রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। তবে রাষ্ট্রপতি ১৪ ফেব্রুয়ারির আগেই নতুন নির্বাচন কশিন গঠন করবেন। কারণ কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়ে যাবে। নিরপেক্ষ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ১৩ দফা প্রস্তাবের আলোকে সার্চ কমিটির কাছে ৫ সদস্যের নামের তালিকা জমা দেয় বিএনপি। এই তালিকায় রয়েছে সাবেক সচিব এম আসাফ-উদ-দৌলা, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকীর নাম। ১৮ নবেম্বর বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে ১৩ দফা প্রস্তাব দেন। এর পর সাক্ষাতের সময় চেয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেয় বিএনপি। বিএনপি ১৩ দফা প্রস্তাব দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের জন্য রাষ্ট্রপতিকে আহ্বান জানানোর পর সরকারী দলের পক্ষ থেকে সমালোচনার ঝড় উঠে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের উদ্যোগ নেন এবং সবার আগে ১৮ ডিসেম্বর বিএনপির সঙ্গে সংলাপ করেন। এর পর একে একে বিএনপি ও আওয়ামী লীগসহ ৩১টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি। তারপর তিনি ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি ঘোষণা করেন।
×