ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঘ্রাণের অজানাতথ্য

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ঘ্রাণের অজানাতথ্য

সবার ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় সমান নয়। আপনার কাছে যে গন্ধটি ভাল লাগে অন্য কারও কাছে হয়ত সেটি অস্বস্তিকর গন্ধ। এই বিষয়ে করা সর্বশেষ গবেষণা থেকে বলা হয়, যেখানে সকালের নাশতার খাবারের সুবাস একজন পুরুষের পছন্দের গন্ধ, ওই একই গন্ধ একজন নারীর কাছে ভিন্ন ধরনের হতে পারে। এক গবেষণা থেকে জানা যায় যে, কোন ব্যক্তির পারফিউম পছন্দ করার মাধ্যমে আপনি বলে দিতে পারেন আপনার সামনের মানুষটি ঠিক কোন্ ধরনের পরিবেশ থেকে এসেছেন। আসুন জেনে নেয়া যাক আমাদের ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য। ৪ সপ্তাহ পর পর নতুন নাক : আপনি সব সময় কিন্তু একই ধরনের গন্ধ অনুভব করেন না। একজন মানুষের গন্ধ নেয়ার ইন্দ্রিয় প্রতি ২৮ দিন পর পর পুনরায় পরিবর্তন হয়। সে ক্ষেত্রে বলা যায় প্রতি ৪ সপ্তাহ পর পর আপনার একটি করে নতুন নাকের সৃষ্টি হয়। ঘ্রাণ মনে রাখার ক্ষমতা : মানুষের অনুভূতিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে স্পর্শকাতর হচ্ছে ঘ্রাণ। মানুষ একটি গন্ধের ৬৫% মনে রাখতে পারে এক বছর পরও। সেখানে দর্শন ইন্দ্রিয় মনে রাখে মাত্র ৫০%। অন্যান্য ইন্দ্রিয়ের তুলনায় গন্ধ মানুষের অনুভূতির সঙ্গে বেশি জড়িত। এক গবেষণায় বলা হয়, ঘ্রাণ মানুষের প্রশান্তি, ভাল থাকা, অনুভূতি এবং স্মৃতির সঙ্গে প্রায় ৭৫% জড়িত। ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় বিরক্ত হতে পারে : আপনার ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় খুব তাড়াতাড়ি বিরক্ত হয়ে উঠতে পারে। যেমন মনে করুন আপনি কোন বেকারিতে ঢুকলেন এবং খুব সুন্দর সুবাস পেতে থাকলেন কিন্তু হঠাৎ করে যদি আপনাকে বের হয়ে আসতে হয় তাহলে আপনি আর সেই সুন্দর সুবাস পাচ্ছেন না, তখন আপনার ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় বিরক্ত হয়ে ওঠে। দ্রত উন্নতশীল : সকল ইন্দ্রিয়ের মধ্যে শুধু ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় সবচেয়ে দ্রুত বা তাড়াতাড়ি উন্নতি লাভ করে। এমনকি আমাদের জন্মের পূর্বেই এই ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় গঠিত হয় এবং এর কার্যক্রম চালনা করে। নারীর ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় : একজন নারীর ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় একজন পুরুষের তুলনায় বেশি শক্তিশালী। ঋতু এবং ঘ্রাণ : আপনি বসন্ত এবং গ্রীষ্মকালীন সময়ে ভাল ঘ্রাণ অনুভব করেন তার কারণ এই সময়গুলো বাতাসে অনেক ময়েশ্চারাইজার মিশ্রিত থাকে। এই একই কারণে ব্যায়াম করার পরও শক্তিশালী ঘ্রাণ অনুভূত হয় কারণ তখন এটি আনুনাসিক উত্তরণেও ময়েশ্চারাইজার বৃদ্ধি করে। মানুষ স্বল্প ক্ষমতাসম্পন্ন : একজন মানুষের অন্য একজন মানুষের ঘ্রাণ বা গন্ধ শনাক্ত করার ক্ষমতা কোষ প্রায় ৫ থেকে ৬ মিলিয়ন। কিন্তু প্রাণী রাজ্যের তুলনায় এটি কিছুই নয়। খরগোশের ঘ্রাণ শনাক্ত করার ক্ষমতা ১০০ মিলিয়ন আর কুকুরের ২২০ মিলিয়ন। স্বতন্ত্র ঘাম : স্বতন্ত্র ঘামের মাধ্যমে অপরাধীদের ধরা সম্ভব হবে অদূর ভবিষ্যতে। ইসরাইলের রসায়নবিদগণ বলছেন, মানুষ যে খাবার খায়, যে ওষুধ বা ড্রাগ গ্রহণ করে, লিঙ্গ এমনকি তার চিন্তাভাবনা সব মিলিয়ে একটি মানুষের স্বতন্ত্র ঘাম তৈরি হয়। তেল আবিব ইউনিভার্সিটির রসায়নবিদ ড. মাইকেল গজিন এবং তার দল কাজ করছেন, মানুষের ঘামের উপাদান অনুসারে আলাদা পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য। তাদের দাবি, প্রত্যেক মানুষের আলাদা এবং স্বতন্ত্র কেমিক্যাল ফিঙ্গার প্রিন্ট রয়েছে। প্রাণীর পছন্দের ঘ্রাণ : যেখানে মানুষের পছন্দের ঘ্রাণ থাকতে পারে সেখানে প্রাণীর নয় কেন। বিড়াল পছন্দ করে ভ্যালেরিয়ান নামক এক ধরনের গুল্মের গন্ধ, সিংহ পছন্দ করে পুদিনা পাতার গন্ধ এবং উট পছন্দ করে তামাকের গন্ধ। এরিয়া সাইজ : মানুষ মস্তিষ্ক প্রায় ১০ হাজার ঘ্রাণ প্রক্রিয়া করতে পারে ডাকটিকেট মাপের একটি জায়গা থেকে। তবে এর পুরোটাই স্নায়বিক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। নতুন গাড়ির ঘ্রাণ : নতুন জামা বা জুতার গন্ধ সবাইকে আনন্দিত করে তবে সবচেয়ে আনন্দিত করে নতুন গাড়ির গন্ধ। এই ঘ্রাণটি গাড়ির ভেতরে প্রায় ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত থাকে। ঘুমের মধ্যে ঘ্রাণ : আপনি কি আপনার ঘুমের মধ্যে ঘ্রাণ নিতে পারেন? না, কারণ আপনি যখন ঘুমান তখন আপনার ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় বন্ধ থাকে। ঘ্রাণ এবং স্বাদ : শুধু ঘ্রাণের মাধ্যমে ৭৫-৯৫% বলে দেয়া সম্ভব যে, ওই খাবারটি কতটুকু সুস্বাদু বা কী জাতীয় খাবার। ঘ্রাণ শক্তিহীনতা রোগ : ঘ্রাণ শক্তিহীনতা এক ধরনের রোগ, যাকে বলা হয় এ্যানোসমিয়া বা ঘ্রাণ শক্তির লোপ। হোটেল ঘ্রাণ : যুক্তরাষ্ট্রে চেইন হোটেলগুলো তাদের নিজস্ব ঘ্রাণ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। যেমন শেরাটন ব্যবহার করে ডুমুর, লবঙ্গ এবং জেসমিনের ঘ্রাণ। ওয়েস্টিনের লবিতে থাকে সাদা চায়ের গন্ধ। আর ফোর পয়েন্টের ভেনাসে থাকে দারুচিনির ঘ্রাণ। ঘ্রাণের আকর্ষণীয়তা : যারা ঘ্রাণে আকর্ষিত হন ঘ্রাণ নেয়ার পদ্ধতি তাদের জন্য একটি বড় ব্যাপার। একজন নির্দিষ্ট মেয়ে ছেলেদের টি-শার্ট পরতে শুরু করলেন কিন্তু যারা সত্যি ঘ্রাণের প্রতি আকৃষ্ট তারা মেয়েটিকে চিনতে পারলেন এবং তাকে ইঙ্গিত করলেন। এটা মেয়েটির আকর্ষণীয় শরীরের গন্ধের মাধ্যমে সম্ভব। খারাপ ঘ্রাণ : যারা অনেক দরিদ্র তারা সাধারণত কাকোসমিয়া রোগে ভোগেন। কারণ তারা সব সময় নোংরা পরিবেশে থাকেন, নোংরা খাবার খান এবং সব সময় খারাপ ঘ্রাণ নিতে থাকেন। এটা এতটা খারাপ যে এক গুচ্ছ সতেজ ফুলের ঘ্রাণ তাদের কাছে খারাপ বা বাজে লাগে। এমনকি তারা এই ফুলের গন্ধে বমি করে দিতে পারেন। আফরিনা ফেরদৌস তথ্য সূত্র : মিরর
×