ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ বড় ধরনের অভিযোগের খবর পাওয়া যায়নি ॥ অসদুপায় অবলম্বনের জন্য বহিষ্কার ১৬

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু, অনুপস্থিত আট হাজার ৫২০

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু, অনুপস্থিত আট হাজার ৫২০

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের ১০ শিক্ষা বোর্ডের অধিনে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা। প্রথম দিনের পরীক্ষা নিয়ে কোথাও প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ বড় ধরনের কোন অভিযোগের খবর পাওয়া যায়নি, তবে ফরম পূরণ করেও পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল আট হাজার ৫২০ পরীক্ষার্থী। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বহিষ্কার হয়েছে ১৬ শিক্ষার্থী। এদিকে এসএসসি ও এইচএসসিতে ভবিষ্যতে দিনে দুটি করে পরীক্ষা নেয়ার আভাস দিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সেভাবে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বলেছেন, পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নেও নতুন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় শুরু হয় প্রথম দিনের পরীক্ষা। সারাদেশের তিন হাজারেরও বেশি কেন্দ্রে একযোগে শুরু হওয়া এসএসসি ও সমমানের এ পরীক্ষার জন্য এবার ফরম পূরণ করেছে ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ৬১৩ জন শিক্ষার্থী। প্রথম দিন এসএসসিতে বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র, সহজ বাংলা প্রথম পত্র এবং বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রথম পত্রের পরীক্ষা হয়েছে। মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলে কুরআন মাজিদ ও তাজবিদ এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এসএসসি ভোকেশনালে বাংলা-২ (১৯২১) আর দাখিল ভোকেশনালে নতুন সিলেবাসে বাংলা-২ (১৭২১) সৃজনশীল ও পুরাতন সিলেবাসে বাংলা-২ (১৭২১) সৃজনশীল বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনে গিয়ে বাইরে উপস্থিত অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী। মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে একজন অভিভাবক পাবলিক পরীক্ষায় দুটো বিষয়ের পরীক্ষার মধ্যে আরও সময় রাখার দাবি জানান। এ সময় নাহিদ বলেন, ভবিষ্যতে দুই বেলা পরীক্ষা নেয়া হবে, সেই প্রস্তুতি নিন। আগে পাঁচ দিনে সব পরীক্ষা নেয়া হতো। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে নম্বরের তারতম্য অনেক সময় বেশি হয়ে যায়। সেটা কমিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। সব বিষয় সম্পর্কে একটা গাইডেন্সও দেয়া হবে। পাঠ্যপুস্তক নিয়ে দুই বছর ধরে বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে। এবারও পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ফল ঘোষণা করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান ছাড়াও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তারা মন্ত্রীর সঙ্গে কেন্দ্র পরদির্শনে যান। তবে পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা যাতে না হয়, সে বিষয়টি বিবেচনা করে কেবল মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে সঙ্গে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ করেন। এদিকে ঢাকার ন্যাশনাল বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে তাদের নির্দিষ্ট সময়ের ১৫ মিনিট পরে প্রশ্নপত্র দিয়ে আবার নির্ধারিত সময় খাতা নেয়া হয়েছে। এতে তারা ১৫ মিনিট সময় কম পেয়েছে। পরীক্ষার পরপরই বিষয়টি জেলা প্রশাসক, পরীক্ষার কেন্দ্র সচিবসহ সকলকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মিরপুর সিদ্ধান্ত হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম রনি বলেছেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রও পড়েছিল সেখানে। শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি ভালভাবে দেখা দরকার। এ বছর নিয়মিত পরীক্ষার্থী হচ্ছে ১৬ লাখ ৭ হাজার ১২৪ জন। এছাড়া অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হচ্ছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ১৯৮ জন ও বিশেষ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা (১, ২, ৩, ও ৪ বিষয়ে) ১ লাখ ৪৫ হাজার ২৯৮ জন। এসএসসিতে সাত লাখ ২ হাজার ২৯৯ জন ছাত্র ও সাত লাখ ২৩ হাজার ৬০১জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। ছাত্রের তুলনায় ছাত্রী ২১ হাজার ৩০২ জন বেশি। দাখিলে ছাত্র এক লাখ ৩০ হাজার ৫৮৫ জন ও ছাত্রী এক লাখ ২৫ হাজার ৯১৬ জন এবং এসএসসি ভোকেশনালে ছাত্র ৭৭ হাজার ৬১৭জন ও ছাত্রী ২৬ হাজার ৫৯৫ জন । এ বছর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং কারিগরি শিক্ষা নামে দুটি নতুন বিষয় যুক্ত হয়েছে। দেশের বাইরে বিদেশে জেদ্দা, রিয়াদ, ত্রিপোলি, দোহা, আবুধাবি, দুবাই, বাহরাইন এবং ওমানের সাহামে ৮টি পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। পরীক্ষায় বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবং ইংরেজী প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র ছাড়া সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হবে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রালপালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ করা হয়েছে।
×