ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তেলাপোকার দুধে ভবিষ্যতের সুপারফুড!

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

তেলাপোকার দুধে  ভবিষ্যতের সুপারফুড!

সুপারফুডের খোঁজে বহুকাল ধরেই রয়েছে বিশ্ব। এবার খাদ্যবিজ্ঞানীরা বলেছেন এমন এক খাবারের কথা, যা পুষ্টিতে ভরপুর। এক প্রজাতির তেলাপোকার দুধ থেকেই সন্ধান মিলছে সেই ‘সুপারফুড’-এর। ‘সুপারফুড= নামটা নতুন ও চটকদার হলেও খোঁজটা কিন্তু আদিকালের। কোন খাবারে বেশি পুষ্টি, কোন খাবারের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি= এ সব নিয়েই গবেষণায় ব্যস্ত থাকেন পুষ্টিবিদ আর খাদ্যবিজ্ঞানীরা। আর মাঝে মাঝেই অদ্ভুত সব আবিষ্কারের কথা বলে সবার চোখ কপালে তুলে দেন তাঁরা। তা সে জাপানের সৈকত থেকে পাওয়া সামুদ্রিক আগাছাই হোক অথবা মৌমাছির জড়ো করা ফুলের রেণু। এই যেমন এবার তাঁরা বললেন তেলাপোকার দুধের কথা, যার থেকেই নাকি তৈরি হতে পারে আগামীর ‘সুপারফুড’। ‘সুপারফুড’ তৈরি তো ভাল কথা। কিন্তু তাই বলে তেলাপোকার দুধ দিয়ে? তেলাপোকা ডিম পাড়ে বলেই আমরা জানি। তবে তেলাপোকার এমন কিছু প্রজাতিও আছে যারা ডিম না পেড়ে সরাসরি বাচ্চার জন্ম দেয়। তেমনই এক প্রজাতি প্যাসিফিক বিটল ককরোচ। এদের ওপর গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, এরা নবজাতককে খাওয়ানোর জন্য দুধ-জাতীয় যে তরল নিঃসরণ করে, তার প্রতিটি প্রতিটি কণায় রয়েছে মহিষের দুধের (যা গরুর দুধের চেয়েও বেশি পুষ্টিকর) তিনগুণ বেশি পুষ্টি। ভারতের বেঙ্গালুরুর স্টেম সেল বায়োলজি এ্যান্ড রিজেনারেটিভ মেডিসিন ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী সঞ্চারী ব্যানার্জির কথায়, ‘‘এই তরলের মধ্যে যে ‘ক্রিস্টাল’ আছে, তাতে আমিষ, শর্করা, স্নেহজাতীয় পদার্থ সবই আছে। তার চেয়েও বড় কথা, এই আমিষ একটা দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে যায় (টাইম-রিলিজড), যা স্বাভাবিক হজমের চেয়ে বেশি কার্যকর।’’ তা এই প্রজাতির তেলাপোকার দুধ থেকে ‘সুপারফুড’ তৈরি হবে কি করে? তেলাপোকার খামার করে সেখান থেকে দুধ উৎপাদন করাটা হয়ত খুব বুদ্ধিমানের কাজ হবে না, তাই না? সে কারণে বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন সেই দুধের মধ্যে যে প্রোটিন আছে, তার ‘জিন সিকোয়েন্স’ বের করে তা ল্যাবে উৎপাদন করার। এই জিন সিকোয়েন্স নাকি তাঁরা ইতোমধ্যে বেরও করে ফেলেছেন। এবার তাঁদের প্রচেষ্টা সেটায় ইস্ট (পাঁউরুটি তৈরিতে ব্যবহৃত এক প্রকার ক্ষুদ্র ছত্রাক) ব্যবহার করে বেশি পরিমাণে দুধ উৎপাদন করা। যাঁরা ওজন কমাতে চান বা যাঁরা এমনিতেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত ক্যালোরি খাদ্যের সঙ্গেই গ্রহণ করেন, তাঁদের জন্য এই খাবার নয়। তবে বিশ্বে এখনও এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা অপুষ্টিতে ভুগছেন। তাঁদের জন্য কিন্তু আশীর্বাদ হয়ে আসতে পারে এই ‘দুধ’। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ ক্রিস্টালোগ্রাফি জার্নালে। সূত্র : ডয়েচ ভেলে
×