ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মেসি-সুয়ারেজ ঝলকে ফাইনালের পথে বার্সিলোনা

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মেসি-সুয়ারেজ ঝলকে ফাইনালের পথে বার্সিলোনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুই সুপারস্টার লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজের জ্বলজ্বলে নৈপুণ্যে ভর করে টানা চতুর্থবার ফাইনালের দ্বারপ্রান্তে বার্সিলোনা। বুধবার রাতে স্প্যানিশ কোপা ডেল’রে ফুটবলের সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচে স্বাগতিক এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে ২-১ গোলে হারিয়েছে অতিথি বার্সা। ভিসেন্টে ক্যালডেরনে কাতালানদের হয়ে গোল করেন মেসি ও সুয়ারেজ। এ্যাটলেটিকোর ব্যবধান কমানো একমাত্র গোলদাতা এ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান। এই জয়ে ফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত বার্সার। কেননা শেষ চারের দ্বিতীয় লেগ তারা খেলবে ঘরের মাঠ ন্যুক্যাম্পে। ম্যাচটি হবে ৭ ফেব্রুয়ারি। রিয়াল মাদ্রিদ কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেয়ায় শিরোপাও খুব বেশি দূরে নয় লুইস এনরিকের দলের। মূলত এ্যাটলেটিকোকে হারালেই সে পথে অনেকটা এগিয়ে যাবে তারা। ফাইনাল নিশ্চিত হলে সেখানে বার্সার প্রতিদ্বন্দ্বী হবে আলাভেস ও সেল্টা ভিগোর মধ্যকার আরেক সেমির বিজয়ী দল। যেই আসুক তাদের যে মেসি-সুয়ারেজরা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেবেন সেটা বলাইবাহুল্য। এবার ফাইনালে গেলে সেটা হবে টানা চতুর্থবার। আর ফাইনাল জিততে পারলে হবে ঐতিহাসিক হ্যাটট্রিক শিরোপা। তবে এসব নিয়ে আপাতত ভাবছেন না বার্সা বস এনরিকে। তার ভাবনায় এখনও সেমিফাইনাল। এ্যাটলেটিকোর মাঠে জয় পেলেও তৃপ্ত নন স্প্যানিশ এই কোচ। এনরিকে ম্যাচ শেষে বলেন, আমাদের দলে যে মানের খেলোয়াড় আছে, সেটার বিচারে আমাদের সুযোগের সদ্ব্যবহারে আরও যতœশীল হতে হবে। দ্বিতীয় লেগটা হতে হবে অন্য রকম। প্রথমার্ধের প্রায় পুরোটা সময়ই এ্যাটলেটিকোর সীমানায় খেললেও গোলের ব্যবধান বাড়াতে পারেনি বার্সা। এ জন্যই তৃপ্ত হতে পারছেন না এনরিকে। বলেন, প্রথমার্ধে পুরোটা সময় আমরা এ্যাটলেটিকোকে চাপিয়ে রাখলাম। সুযোগও সৃষ্টি করলাম অনেক। কিন্তু খুব বেশি সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি। দ্বিতীয়ার্ধে এ্যাটলেটিকোর প্রাধান্যতে কিছুটা ভয়ও পেয়ে গিয়েছিলেন বার্সা কোচ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দ্বিতীয়ার্ধে তারা আক্রমণ করেছে। সেই আক্রমণগুলো আমাদের জন্য সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছিল। ম্যাচের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় সুয়ারেজও গোলের সংখ্যা না বাড়ায় অখুশি। যদিও দলের জয়ে তৃপ্তি আছে। উরুগুইয়ান সুপারস্টার বলেন, আমরা জানতাম আমাদের গোল করতেই হবে। আমরা দুটো গোল করেছি এবং জিতেছি। কিন্তু শঙ্কা তো এখনও রয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় লেগ এখনও বাকি। ভিসেন্টে ক্যালডেরনে শুরু থেকেই ছন্দে ছিলেন মেসি-নেইমার-সুয়ারেজরা। ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। ম্যাচের সপ্তম মিনিটে জ্যাভিয়ের মাশ্চেরানোর কাছ থেকে পাওয়া বল প্রায় মাঝমাঠ থেকে একাই টেনে আনেন সুয়ারেজ। একক প্রচেষ্টায় গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বার্সাকে এগিয়ে দেন উরুগুইয়ান তারকা। এর আগেও দুইবার এ্যাটলেটিকোর রক্ষণভাগ কাঁপিয়ে দেন মেসিরা। ২৩ মিনিটে নেইমারের দারুণ প্রচেষ্টা নষ্ট করে দেন স্বাগতিক গোলরক্ষক মিগুয়েল ময়া। ২৭ মিনিটে নেইমার গোলের আরেকটি সুযোগ নষ্ট করেন। ডি বক্সের মধ্যে নেইমারকে ফিরতি পাস দেন সুয়ারেজ। তবে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান তারকা। এর ছয় মিনিট পরই গোল করেন মেসি। ইভান রাকিটিচের বাড়ানো বলে ডি বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে জোরালো শট নেন মেসি। আর্জেন্টাইন জাদুকরের নেয়া শট কোনাকুনিভাবে জালে জড়ায়। দুই গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বার্সা। বিরতির পর ম্যাচে ফেরার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ৫০ মিনিটে বক্সের সামনে ফাঁকায় পেয়েও গোল করতে পারেননি ফানান্ডো টোরেস। এর নয় মিনিট পর গ্রিজম্যানের গোলে ব্যবধান কমায় স্বাগতিকরা। অর্থাৎ ৫৯ মিনিটে দিয়াগো গডিনের হেড করা বলটা মাথা দিয়েই বার্সার জালে জড়িয়ে দেন ফরাসী স্ট্রাইকার গ্রিজম্যান। পরের মিনিটেই বার্সার আন্দ্রে গোমেজের দারুণ শট আটকে দেন মিগুয়েল ময়া। ৬৩ মিনিটে সমতা ফেরানের সুবর্ণ সুযোগ মিস করে এ্যাটলেটিকো। গোলপোস্টের নিচে দাঁড়িয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন গ্রিজম্যান। খেলার শেষ ১০ মিনিট ছিল দারুণ রোমাঞ্চের। ভাগ্যের সহায়তা না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত আর সমতায় ফেরা হয়নি এ্যাটলেটিকোর।
×