ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঋণাত্মক হিসাবে লেনদেনের সুযোগ বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৩:৩৯, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ঋণাত্মক হিসাবে লেনদেনের সুযোগ বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে ঋণাত্মক মূলধনধারী বিনিয়োগ হিসাবে শেয়ার কেনা-বেচা করার সুযোগ ফের বাড়তে পারে। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সুযোগ পেতে পারেন বিনিয়োগকারীরা। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কাজ করছে। বিএসইসির আগামী কমিশন বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব উঠতে পারে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর ৩(৫) ধারা অনুসারে ঋণাত্মক মূলধনধারী হিসাবে গ্রাহক নিজে শেয়ার কেনা-বেচা করতে পারেন না। কেবল ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান এই ধরনের হিসাবের শেয়ার বিক্রি করে তার ঋণ সমন্বয় করে নিতে পারে। ২০১০ সালের ধসের পর বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় বিএসইসি আলোচিত আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাটির কার্যকারিতা কয়েক দফা স্থগিত করে। সর্বশেষ স্থগিতাদেশের মেয়াদ গত ৩১ জানুয়ারি শেষ হয়ে গেছে। স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ঋণাত্মক মূলধনধারী বিনিয়োগ হিসাবে শেয়ার কেনা বেচা করা নিয়ে চিন্তিত ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা। উল্লেখ্য, মার্জিন ঋণ হচ্ছে বিশেষ ধরনের ঋণ সুবিধা। শেয়ার কেনার জন্য ব্রোকারহাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক গ্রাহককে এই ঋণ দিয়ে থাকে। বিএসইসি প্রণীত মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর আওতায় এই ঋণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ২০১০ সালের পর থেকে টানা দরপতনে অসংখ্যা মার্জিন এ্যাকাউন্টে বিনিয়োগকারীর মূলধন ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। ওই সব একাউন্টে থাকা শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম এমন জায়গায় নেমে এসেছে যে, বিনিয়োগকারীর নিজস্ব মূলধন বলতে কিছু নেই। উল্টো গ্রাহকের কাছে টাকা পাবে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান। আইন অনুসারে এমন এ্যাকাউন্টে লেনদেন নিষিদ্ধ। ১৯৯৯ সালের মার্জিন রুলসের ৩(৫) ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, কোন বিনিয়োগকারীর ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান তার কাছে নতুন করে মার্জিন চাইবে। এই মার্জিনের পরিমাণ এমন হবে যাতে তার ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের উপরে থাকে। নোটিস দেয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে পর্যাপ্ত মার্জিন জমা দেয়া না হলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে নতুন কোন লেনদেনের অনুমতি দিতে পারবে না ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান। বাজারে টানা দরপতনের পরিপ্রেক্ষিতে ঋণ নিয়ে টাকা খাটিয়ে লোকসানে পড়া বিনিয়োগকারীদের দাবি ও স্টক এক্সচেঞ্জের অনুরোধে ২০১৩ সালের এপ্রিলে মার্জিন রুলসের সংশ্লিষ্ট ধারাটির কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। এরপর দুইবার স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রতিবারই স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষের অনুরোধে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি আইন শিথিলের ওই নির্দেশনা জারি করে। কিন্তু গত বছর এ বিষয়ে স্টক এক্সচেঞ্জ কোন অনুরোধ না জানানোয় বিএসইসি এই বিষয়ে নতুন কোন নির্দেশনা জারি করেনি। ফলে স্থগিতাদেশের মেয়াদ গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়ে যায়। বিএসইসির উর্ধতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পুঁজিবাজারের স্বার্থে বিষয়টি কমিশন বিবেচনা করতে পারে। এটির বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক অবস্থানে আছে কমিশন।
×