ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘এমএসএন’ নয় সেরা ‘আরইএম’

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

‘এমএসএন’ নয় সেরা ‘আরইএম’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০১৫ সাল থেকে লড়াই জমে উঠেছে ‘এমএসএন’ বনাম ‘বিবিসি’র। ফুটবল বিশ্বে এমএসএন হিসেবে পরিচিত বার্সিলোনার আক্রমণ ভাগের তিন তারকা লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ ও নেইমার। আর বিবিসি হিসেবে খ্যাত রিয়াল মাদ্রিদের আক্রমণ ভাগের ত্রয়ী গ্যারেথ বেল, করিম বেনজামা ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তবে আগের দুই মৌসুমের মতো এবার আক্রমণ ভাগে দুই ত্রয়ীর মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই তেমন জমে ওঠেনি। কারণ রিয়ালের বেল যেমন মাঠের বাইরে আছেন, তেমনি বার্সার নেইমারের কাটছে মন্দা সময়। এই সময়ে সাবেক ব্রাজিলিয়ান তারকা রোনাল্ডিনহো বললেন, এমএসএন নয় তার দৃষ্টিতে সেরা ত্রয়ী আরইএম। সাবেক বার্সিলোনা সুপারস্টারের মতে, এমএসএনের চেয়েও দুরন্ত, অসাধারণ ছিল আরইএম। রোনির ত্রয়ীতেও আছেন মেসি। বাকি দু’জনের একজন স্যামুয়েল ইতো, আরেকজন রোনাল্ডিনহো নিজে। এক সময় এই ত্রয়ী বার্সিলোনাকে স্বর্ণসাফল্য উপহার দিয়েছেন। কাতালানদের জিতিয়েছিলেন দীর্ঘ সময় পর চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ট্রফি। দুই ত্রয়ীর তুলনা করতে গিয়ে রোনাল্ডিনহো বলেন, ক্লাবে নিজেদের সময়ে এই দুই আক্রমণত্রয়ী ইতিহাস গড়েছে। নিজ নিজ সময়ে দুটিই দুর্দান্ত খেলেছে বা খেলছে। তবে যদি বেছে নিতে বলেন, আমি ইতো ও মেসির সঙ্গে আমার ত্রয়ীকেই বেছে নেব। তবে রেকর্ড কিন্তু আরইএম ত্রয়ীকে এগিয়ে রাখছে না। ২০০৪-০৫ থেকে শুরু হয়েছিল আরইএম ত্রয়ীর যাত্রা। রোনাল্ডিনহোর বিদায়ের মধ্য দিয়ে তার সমাপ্তি ঘটে ২০০৭-০৮ মৌসুমে। এরমধ্যে বার্সাকে ১৯৯২ সালের পর প্রথম ইউরোপ সেরার ট্রফি পাইয়ে দেয়া তাদের সেরা সাফল্য। ওই মৌসুমে রোনাল্ডিনহো-মেসি-ইতো করেছিলেন ৬৮ গোল। অথচ গত মৌসুমে এমএসএন করেছে ১৩১ গোল। বোঝাই যাচ্ছে, স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে বর্তমানের ত্রয়ী। রোনি নিজ দেশের বর্তমানের সেরা তারকা নেইমারকে নিয়েও কথা বলেন। তার বক্তব্য, নেইমার এখনই সেরাদের মধ্যে আছে। একদিন সে বিশ্বসেরা হবে। প্রত্যেক ব্রাজিলীয় তা মনে করেন, কারণ সে-ই আমাদের সেরা। আরেক সাক্ষাতকারে রোনাল্ডিনহো ইংলিশ তারকা ওয়েন রুনির উচ্ছ্বাসিত প্রশংসা করেন। সাবেক এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বলেন, আমি এখনও রুনিকে ভীষণ পছন্দ করি। তার স্টাইল সবসময় আমাকে মুগ্ধ করে। বার্সিলোনার হয়ে এমনিতেই ন্যুক্যাম্পে কাঁপিয়ে চলছিলেন মেসি-নেইমার। ২০১৪ সালে ইংলিশ ক্লাব লিভারপুল ছেড়ে লুইস সুয়ারেজ বার্সাতে আসলে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে কাতালান ক্লাবটির আক্রমণ ভাগ। নিজেদের প্রতিভার জোরে একসঙ্গে জ্বলে ওঠেন তিনজনই। আর এই ত্রয়ীর মিলিত প্রচেষ্টায় বার্সা হয়ে ওঠে দুর্দান্ত। ফলে ২০১৪-১৫ মৌসুমে স্প্যানিশ লা লিগা, কোপ ডেল’রে ও চ্যাম্পিয়ন্স লীগের মতো শিরোপা জিতে ট্রেবল জয়ের স্বাদ দেয় বার্সা সমর্থকদের। ওই মৌসুমে বার্সিলোনার হয়ে সবমিলিয়ে ৫১ ম্যাচ খেলেন মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ ত্রয়ী। ত্রয়ী হিসেবে ১২২ গোল করে নতুন স্প্যানিশ রেকর্ড গড়েন তারা। পরের মৌসুমেও এ সফলতা অব্যাহত থাকে। এদিকে মেসির চুক্তি নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা থাকলেও তাকে ছাড়া যে বার্সিলোনা অনেকটাই অচল সে প্রমাণ মিলছে প্রতিনিয়ত। বার্সার প্রতিটি ম্যাচেই নিজেকে তুলে ধরছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। পরিসংখ্যানও সাক্ষ্য দিচ্ছে, মেসি ছাড়া অচল কাতালানরা। বার্সা যে কতটা মেসিনির্ভর তা চলতি মৌসুমে তারকা এই ফরোয়ার্ডের পারফর্মেন্স বিশ্লেষণ করলেই বুঝা যায়। সবধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে চলতি মৌসুমে বার্সার হয়ে বুধবার রাতের আগ পর্যন্ত মেসি ২৮ ম্যাচ খেলেছেন। এর ২২টিতেই হয় তিনি গোল করেছেন, নয়তো গোলে সহযোগিতা করেছেন। যার অর্থ বার্সিলোনার হয়ে খেলা ৭৮.৫৭ শতাংশ ম্যাচে মেসি গোল বা গোলে সহযোগিতা করেছেন। চলতি মৌসুমে সবমিলিয়ে মেসির গোল ২৯টি। ১৫ গোল নিয়ে স্প্যানিশ লা লিগায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা মেসি। ১৬ গোল নিয়ে সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ আছেন শীর্ষে। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের গ্রুপ পর্বে পাঁচ ম্যাচ খেলে মেসি করেছেন ১০ গোল। সেল্টিক ও ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে দুটি হ্যাটট্রিকও আছে। এরপরও মেসির চুক্তি নবায়ন ঝুলে থাকাটা বিস্ময়করই বটে।
×