ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এবার সিঙ্গাপুর জয়ের লক্ষ্য কৃষ্ণাদের

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

এবার সিঙ্গাপুর জয়ের লক্ষ্য কৃষ্ণাদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পুরোপুরি জাপান জয় করা হয়নি। তবে যে নৈপুণ্য প্রদর্শিত হয়েছে, তাতে বলাই যেতে পারে- গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যারা আশাতীত পারফর্মেন্স দেখিয়ে এসেছে জাপানের মাটি থেকে। জাপান ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের (জেএফএ) ব্যবস্থাপনায় জাপানের ওসাকায় অনুষ্ঠিত হয় ‘জে-গ্রিন সাকাই লেডিস ফেস্টিভ্যাল অনুর্ধ-১৫’ ফুটবল ফেস্টিভ্যাল। এই টুর্নামেন্টে খেলে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৬ মহিলা জাতীয় ফুটবল দল সোমবার দেশে ফেরে। এই ফুটবল ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশ দল প্রস্তুতি ম্যাচসহ মোট সাতটি ম্যাচ খেলে। তারমধ্যে জয় চারটিতে। ড্র একটিতে এবং হার দুটিতে। মূলপর্বে বাংলাদেশ জয় পায় ৩টিতে, ড্র করে একটি এবং হার মানে দুটিতে। সামগ্রিকভাবে এই ফেস্টিভ্যালে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ দল আশাতীত নৈপুণ্য প্রদর্শন করে। এই ফেস্টিভ্যালে জাপানের ১৮টি দলের সঙ্গে অংশ নেয় বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড অনুর্ধ-১৬ দল। প্রতিটি ম্যাচ হয় ৪০ মিনিট করে (২০+২০)। মাঝে ৫ মিনিটের বিরতি। বাংলাদেশ দল এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে জাপানে কেমন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, তা উপস্থাপন করে বুধবার বিকেলে বাফুফে ভবনের কনফারেন্স রুমে। এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন, সহকারী কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু, অধিনায়ক কৃষ্ণা রানী সরকার, মনিকা চাকমা, সিরাত জাহান স্বপ্না, বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ প্রমুখ। এএফসি অনুর্ধ-১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বের প্রস্তুতি নিতে এবার সিঙ্গাপুর যাবে বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দল। ১৫-১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে তিনটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। ফ্রেন্ডলি এই টুর্নামেন্টটি ফিফার সেকেন্ড টায়ার টু’র ম্যাচ। এতে অংশ নেবে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ এবং নাম ঠিক না হওয়া আরেকটি দেশ। টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি দলে থাকবে জাতীয় বা সিনিয়র দলের ৪ ফুটবলার, বাকি ১৬ ফুটবলার অনুর্ধ-১৬ বছর বয়সী। কেমন ছিল জাপান-অভিজ্ঞতা? কোচ ছোটনের ভাষ্য, ‘আমাদের মেয়েদের ভাল একটা পরীক্ষা হলো জাপানে। ওখানে বিশ্বমানের একাডেমিতে যখন যা দরকার সব আছে। ওখানে গিয়ে খুব ক্লান্ত ছিলাম সবাই। তবে আমরা অনুশীলনের পর সময় নষ্ট না করে অন্য দলগুলোরও ট্রেনিং দেখেছি। সকাল থেকে এক মাঠ থেকে আরেক মাঠে ছুটেছি।’ ছোটন আরও যোগ করেন, ‘দীর্ঘ ভ্রমণ করে ক্লান্ত ছিলাম। প্রথম ম্যাচ ছিল সাকাই একাডেমির বিপক্ষে। ওরা থাইল্যান্ডকে ১০-০ গোলে হারায়। এই খবরে প্রথমে ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম। তবে মেয়েদের বুঝিয়েছি যেন বাজে কিছু না হয়। সবাইকে নিজের সেরাটা দিতে বলেছিলাম। মেয়েরা জান-প্রাণ দিয়ে নিজেদের সেরাটা দিয়েছে।’ অধিনায়ক কৃষ্ণা রানী সরকারের ভাষ্য, ‘আমরা ছিলাম ওখানে ড্রিম ক্যাম্পে। ক্যাম্পটা সত্যিই ছিল স্বপ্নের মতো। নাস্তা থেকে রাতের খাবার সবই যেন স্বপ্ন। সেখান থেকে অনেক কিছু শিখেছি।’ জাপান সফরে দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করা স্বপ্নার অনুভূতি, ‘এর আগে মহিলা দল কখনও এমন বিশ্বমানের দলের সঙ্গে খেলতে যায়নি। প্রথম ম্যাচের আগে আমরা বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু কোচরা আমাদের বুঝিয়েছেন কোন টিমকে ভয় পেয়ো না। রেজাল্ট যেটাই হোক। আমরা সেভাবেই নিজেদের সেরাটা খেলতে চেষ্টা করেছি। ফল আমাদের পক্ষে এসেছে। এরআগে কখনও একসঙ্গে তিন ম্যাচ খেলিনি। এটাও ছিল একটা বড় অভিজ্ঞতা। ওখানে বেশ ঠা-া ছিল। তবে ওগুলো নিয়ে নয়, বরং মাথা ঘামিয়েছি নিজেদের খেলা নিয়ে।’ মনিকা চাকমার প্রতিক্রিয়া, ‘প্রমাণ করে দিয়েছি আমরাও ভাল খেলতে পারি।’ মজার ব্যাপারÑ এই আসরে নাকি বাংলাদেশের মেয়েদের খেলা দেখে অনেকে প্রশ্ন তুলেছিল বাংলাদেশ বাইরে থেকে খেলোয়াড় নিয়ে এসেছে। মনিকা চাকমা দেখতে নাকি অনেকটা জাপানীদের মতো। এছাড়া স্বপ্নার পারফর্মেন্স এবং তার দ্রুতগতির ফুটবল দেখেও সবাই বিস্মিত হয়েছে।
×