ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কৃষিমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

তিন ফসল চাষে ৩৩ কোটি টাকার কৃষি প্রণোদনা ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

তিন ফসল চাষে ৩৩ কোটি টাকার কৃষি প্রণোদনা ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার তিন ফসল চাষে প্রায় ৩৩ কোটি টাকার কৃষি প্রণোদনা দিয়েছে। আউশ চাষে ৩১ কোটি টাকা আর কুমড়া এবং পাট চাষে দেয়া হচ্ছে বাকি এক কোটি ৯০ লাখ টাকা। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বুধবার তার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রণোদনা ঘোষণা করেন। এ সময় জানানো হয় চলতি অর্থবছরে দুইবারে ৭৫ কোটি টাকা কৃষি প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। গত সেপ্টেম্বরে প্রথম ধাপের ৪২ কোটি টাকা কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। নতুন প্রণোদনা ১০ দিনের মধ্যে শুরু হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বড় বড় দেশ জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য দায়ী। কিন্তু তারা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অনেক কথা বললেও কোনদিনই পরিবর্তন রোধে কোন কাজ করে না। না তারা কার্বন নিঃসরণ কমায় না তাদের বোমাবাজি কমে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত হই আমরা। মতিয়া চৌধুরী বলেন, আউশ চাষে কৃষকদের উৎসাহী করে তোলার জন্যই এই প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে এই মৌসুমে কুমড়া এবং পাট চাষেও প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। ফসলের উন্নত জাতের সম্প্রসারণে প্রণোদনা কাজে আসবে। একই সঙ্গে কৃষক যাতে অতিরিক্ত অপ্রয়োজনীয় বালাই নাশক ব্যবহার না করে সে জন্য কৃষি বিভাগ সচেষ্ট রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সরকার কৃষি পণ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করছে। এরপরও সবজি নষ্ট হচ্ছে। এজন্য বেশি বেশি করে সবজি খাওয়ার পারমর্শ দেন তিনি। পান চাষে চুয়াডাঙ্গার কৃষকদের সমস্যা দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নিদের্শ দেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় উচ্চফলনশীল স্থানীয় আউশ ও নেরিকা চাষে বীজ ও সারসহ প্রয়োজনীয় উপকরণের যোগান দিতে ২ লাখ ২৫ হাজার ৯৮৮ জন কৃষককে এ প্রণোদনার টাকা দেয়া হবে। নেরিকা হচ্ছে তুলনামূলক কম সময়ে উৎপাদনশীল ক্ষরাসহিষ্ণু জাত। ২০০৯ সালে এটি আফ্রিকা থেকে আমদানি করা হয়। আগামী মার্চ থেকে শুরু খারিফ-১ মৌসুমে ৫১ জেলায় আউশের জন্য ২৭ কোটি ১০ লাখ এবং ৪০ জেলায় নারিকা জাত চাষে ৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা প্রণোদনা দেয়া হবে। এতে আউশ চাষে ২ লাখ ও নারিকার জন্য ২০ হাজার কৃষক সহায়তা পাবে। মতিয়া চৌধুরী বলেন, এছাড়া ৬৪ জেলায় পাট, ইক্ষু, মিষ্টি কুমড়ার বালাই দমনে এক কোটি ৯০ লাখ ১৬ হাজার ৪৬০ টাকা দেয়া হবে। আউশ চাষে প্রত্যেক কৃষক ৫ কেজি বীজ, ২০ কেজি ইউরিয়া, ১০ কেজি ফসফেট ও ১০ কেজি করে পটাশ পাবে। নারিকার জন্য প্রত্যেক কৃষককে দেয়া হবে ১০ কেজি বীজ, ২০ কেজি ইউরিয়া, ১০ কেজি ফসফেট ও ১০ কেজি পটাশ। মন্ত্রী বলেন, এতে অতিরিক্ত ৭০ হাজার টন আউশ ও ৬ হাজার টনেরও বেশি নারিকা উৎপাদিত হবে। এছাড়া ৯৮ দশমিক ১৭ বেল অতিরিক্ত পাটের উৎপাদন হবে (এক বেলে ৫ মণ পাট)। তিনি বলেন, সারাদেশে প্রায় ২ কোটি কৃষকের কৃষি কার্ড রয়েছে। তিনি বলেন, সরাসরি টাকা দেয়ার বদলে আমরা কৃষিপণ্য এবং সহায়তা দিয়ে থাকি। এতে দুর্নীতি কম হয়। অনুষ্ঠানে কৃষি সচিব মোহাম্মদ মঈনুদ্দিন আবদুল্লাহ ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হান্নানসহ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×