ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সুদীপ্ত ধ্রুব

‘স্কাইফল’ গায়িকা এ্যাডেল

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

‘স্কাইফল’ গায়িকা এ্যাডেল

২০০৮ সালে নিজের একক এ্যালবাম ‘নাইনটিন’ বের করার পর পরই লন্ডনের ব্রিট স্কুলের সাধারণ এক ছাত্রী থেকে আন্তর্জাতিক সুপারস্টার বনে যান ব্রিটিশ গায়িকা এ্যাডেল। এরপর কেটে গেছে প্রায় ৮ বছর। তিনি ৮ বছরের দীর্ঘ সময়ে যেমন আরও দুটি এলবাম বের করে নিজের মনোমুগ্ধকর গান দিয়ে কোটি কোটি দর্শকশ্রোতাদের মন জয় করে নিয়েছেন তেমনি তার ক্যারিয়ারের সাফল্য দিয়ে ভেঙেছেন অসংখ্য সব রেকর্ড। তবে বিগত বছরগুলোতে এ্যাডেলের ক্যারিয়ার বদলাবার সঙ্গে সঙ্গে বদলে গিয়েছেন তিনি নিজেও। এ্যাডেলের জনপ্রিয়তা যেমন ঈর্ষণীয় তেমনি স্থূলকায় শরীরের মেদ ঝড়িয়ে আকর্ষণীয় হওয়ার যাত্রাটা কেবলই এক অনুপ্রেরণার কাহিনী। ১০টি গ্র্যামী পুরস্কার জয়ী এ্যাডেলের গাওয়া হৃদয়ছোঁয়া গানের তালিকায় রয়েছে ‘সামওয়ান লাইক ইউ’, ‘রোলিং ইন দ্য ডিপ’ প্রভৃতি। বরাবরই বিরহের গানকে প্রাধান্য দেন তিনি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমার জীবনের অনেকটা অংশ আঁধারে ঢাকা। প্রচুর হতাশায় ভুগেছি। হতাশাগ্রস্ত যেমন হয়েছি, তেমনি উতরে উঠতেও পেরেছি অনায়াসে।’ ২০০৮ সাল নাগাদও এডেল তার স্থূলকায় শরীর ঢাকার জন্য ক্যাজুয়াল পোশাক হিসেবে কালো রঙের কাপড়কেই বেশি প্রাধান্য দিতেন। কিন্তু ২০০৯ সালে নিজ প্রথম এ্যালবামের সাফল্য ধরে নিজেকে হালকা পাতলা বদলানো শুরু করেন তিনি। ২০১১ সালের মার্চ মাসেই তার সবচেয়ে বড় পরিবর্তন দেখা যায় যখন তিনি তার লন্ডনের বাড়ির কাছাকাছি পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় ফ্রেমবন্দী হন। সেই বছরই এডেলের ‘টুয়েন্টি ওয়ান’ এ্যালবামটি রিলিজ হয় এবং ভোকাল কর্ডে সমস্যা থাকার কারণে অপারেশন হয় তার। ২০১১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ সুস্থ হয়ে আরও আকর্ষণীয় আকারে ক্যামেরার সামনে হাজির হন তিনি। ২০১২ সালের ব্রিট এওয়ার্ডস এ রঙিন গাউনে বেশ গ্ল্যামারাস ভাবেই উপস্থিত হন তিনি। এরপর ২০১২ সালের শেষ নাগাদ নিজের প্রথম সন্তান হওয়ায় বেশ খানিক সময় লাইমলাইট থেকে দূরে থাকেন তিনি। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে গ্র্যামি এওয়ার্ডে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে আরও সিøম ফিগারে উপস্থিত হন অ্যাডেল। ২০১৪ সালের মে মাসে কেটি পেরির সঙ্গে এক সেলফিতে অবাক করা রূপে নজরে আসেন এ্যাডেল। ১৯৮৪ সালে লিওনেল রিচি গানে গানে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘হ্যালো, তুমি কি আমাকেই খুঁজছ?’ ২০১৫ সালে এসে যেন সেই প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন এ্যাডেল। বললেন, ‘হ্যাঁ, আমিই সেই।’ মার্কিন গায়ক লিওনেল রিচির হ্যালো গানটা যে কত সিনেমায় বেজেছে, আর কত প্রেমিক যে আদূরে গলায় ফোনের রিসিভার গলায় ঠেকিয়ে প্রথম লাইনটা আউড়ে গেছেন, ইয়ত্তা নেই। কিন্তু অন্য প্রান্তে কি বেজেছে সেটা এত দিন যেন ছিল অধরাই। ‘স্কাইফল’ গায়িকা এ্যাডেল বোধ হয় এত দিন পর উত্তর দিলেন সেই ‘হ্যালো’র। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এ্যাডেলের তৃতীয় এ্যালবাম ‘টোয়েন্টি ফাইভ’ প্রকাশের পর এরই মধ্যে প্রায় ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার ১.৫ মিলিয়ন ভক্তের সামনে তিনি পারফর্ম করেছেন। টপচার্টের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৬ সালের লাইভ পারফরম্যান্সের দিক থেকে এ্যাডেল সবার শীর্ষে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে তার কনসার্টের টিকিট বিক্রির পরিমাণের ওপর এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। প্রতিদিন এ্যাডেলের শো দেখার জন্য ১৫০ মিলিয়নের বেশি টিকিট বিক্রি হচ্ছে। দিনকে দিন এটি বাড়বে বলেই আশা করছেন বিলবোর্ড কর্তৃপক্ষ। ২০১৫ সালের নবেম্বরে তার প্রথম কনসার্টটি ছিল শ্রোতাদের সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য। প্রি গ্র্যামি এ্যাওয়ার্ডে তার পরিবেশনা ছিল ২৯ ফেব্রুুয়ারির জন্য এক ধরনের প্রস্তুতি। এ্যালবাম প্রকাশের পর ১৫ জুন ২০১৬ থেকে এ্যাডেলের বিশ্বভ্রমণ শুরু হয়। ৫ জুলাই দক্ষিণ আমেরিকায় তিনি প্রথম কনসার্ট শুরু করেন। ২০১৬ সালে কোনো এ্যালবাম মুক্তি পায়নি জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী এ্যাডেলের। কিন্তু এরপরও প্রতিদিন ৮০ লাখ টাকার বেশি আয় করছেন তিনি। সর্বশেষ এ্যালবাম থেকে পাওয়া টাকাই তার এই আয়ের উৎস। ডেইলি মিররের হিসাবে, ২০১৫ সালে প্রায় ২৮৭ কোটি টাকা আয় করে তার প্রতিষ্ঠান ‘মেল্টেড স্টোন লিমিটেড’। এভাবেই তার দৈনিক আয় দাঁড়িয়েছে দৈনিক ৮৪ হাজার পাউন্ড, যা কিনা বাংলাদেশী টাকায় ৮০ লাখেরও বেশি!
×