স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে নমনীয় শর্তে ৩০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সংস্থাটির পরিচালনা বোর্ডের সভায় এ ঋণ অনুমোদন করা হয়। লোকাল গবর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট-৩ (এলজিএিসপি-৩) এর আওতায় এ অর্থ ব্যয় করা হবে, যা স্থানীয় সরকারকে নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তহবিল ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিতে এবং জনগণের চাহিদার ভিত্তিতে অগ্রাধিকারমূলক উন্নয়ন কর্মকা- বাস্তবায়নে সক্ষম করে তুলবে। বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এলজিএিসপি-৩ প্রকল্পে অনুমোদন দেয়া হয়। ৫ বছর মেয়াদী (২০২১ সাল পর্যন্ত) এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৫৩৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে ৩ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। অবশিষ্ট ২ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা (৩০ কোটি ডলার সমমূল্য) ঋণ সহায়তা হিসেবে দিবে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে আগের দুটি প্রকল্পের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় লোকাল গবর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট-৩ (এলজিএিসপি-৩) গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের সব কয়টি ইউনিয়ন পরিষদেই (৪ হাজার ৫৫০টি) বাস্তবায়ন করা হবে। এর মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ১১ কোটিরও বেশি স্থানীয় জনগণ লাভবান হবেন। প্রকল্পটি ইউনিয়ন পরিষদসমূহে জাতীয় বাজেট হতে বরাদ্দ নিশ্চিত করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রকল্পটি পৌরসভা এলাকায়ও সম্প্রসারিত হবে এবং পাইলটভিত্তিতে দেশের ৮টি বিভাগের ১৬টি পৌরসভায় ব্লক গ্রান্টস-এর আওতায় অর্থ সরবরাহ আরম্ভ করবে।
প্রকল্পে যোগ্যবিবেচিত পৌরসভাসমূহ এই প্রথমবারের মতো জনগণের প্রয়োজনীয় সেবার মান বাড়াতে উপ-প্রকল্প বাছাই ও বাস্তবায়ন করতে ব্লক গ্রান্টসের মাধ্যমে অর্থ পাবেন। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজশ্রী পারালকার বলেন, বিকেন্দ্রীকরণকে এগিয়ে নেয়া এবং স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালীকরণে সরকারের সঙ্গে বিশ্বব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, নিয়মিত, অনুমেয়ও স্বচ্ছ অর্থ স্থানান্তর পদ্ধতি ইউনিয়ন পরিষদ এবং অংশগ্রহণকারী পৌরসভাগুলোকে পরিকল্পনা প্রণয়ন, অংশগ্রহণমূলক বাজেট তৈরি, সরকারী অর্থ ব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
লোকাল গবর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট-৩-এর বিশ্বব্যাংক টিম লিডার শেনহুয়া ওয়াং বলেন, আগের প্রকল্পগুলোর মতো এলজিএসপি-৩ নারীর ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব দেবে। ওয়ার্ড কমিটিসমূহ ও তদারকি কমিটির অন্তত পক্ষে এক-তৃতীয়াংশ সদস্য আগের মতোই নারী থাকবেন। নারীদের সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে নারীদের অগ্রাধিকার দেয়া প্রকল্পসমূহের জন্য অনুদানের অন্তত ৩০ শতাংশ বরাদ্দ করা হবে।
প্রসঙ্গত, এলজিএসপি-২ এর আওতায় ২০১১ সাল থেকে সকল ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নিজস্ব পরিকল্পনায় তহবিল ব্যবহারের পূর্র্ণ স্বাধীনতাসহ বার্ষিক ব্লক গ্রান্টস্ পেয়ে আসছে। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো লোকাল গবর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্টের (এলজিএসপি) মাধ্যমে নিজস্ব পরিকল্পনায় ব্যয়ের জন্য ইউনিয়ন পরিষদসমূহকে ব্লক গ্রান্টসের অর্থ প্রদান শুরু হয়।
