ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কোহিনূর শম্পা

স্বরূপে ফিরলেন ফেদেরার

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

স্বরূপে ফিরলেন ফেদেরার

বয়সের ভারে যেন নুইয়ে পড়েছিলেন রজার ফেদেরার। তবে জাত চ্যাম্পিয়ন বলে কথা। পাঁচ বছর পর আবারও গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পেলেন তিনি। তাও আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদালকে হারিয়ে। নতুন বছরের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্টের ফাইনালে সুইজারল্যান্ডের জীবন্ত কিংবদন্তি ৬-৪, ৩-৬, ৬-১, ৩-৬ এবং ৬-৩ সেটে হারান স্প্যানিশ টেনিস তারকাকে। সেই সঙ্গে ক্যারিয়ারের ১৮তম গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পান তিনি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নাদালের বিপক্ষে জয়ের পর আনন্দে কেঁদেই ফেড এক্সপ্রেস। প্রায় দেড় দশক আগে উইম্বলডনে প্রথম গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পান ফেদেরার। এরপরের গল্পটা শুধুই সামনে এগিয়ে যাওয়ার। উইম্বলডনেই সর্বোচ্চ সাত মেজর টুর্নামেন্ট জিতেন তিনি। এছাড়া বছরের প্রথম ও শেষ গ্র্যান্ডসøাম যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও ইউএস ওপেনে সমান পাঁচবার করে চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। আর ফ্রেঞ্চ ওপেনে মাত্র একবারই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন তিনি। তাও দীর্ঘ অপেক্ষার পর! ২০০৯ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতেই স্পর্শ করেন ক্যারিয়ার সøাম জয়ের মাইলফলক। তাই দুইদিন আগে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শিরোপা জয়ের অনুভূতিটাকে কেবল ফ্রেঞ্চ ওপেনের সঙ্গেই তুলনা করলেন তিনি। এ বিষয়ে ফেদেরার বলেন, ‘আমি মনে করি এই গ্র্যান্ডসøাম জয়ের আনন্দটা খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে না। সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার পরও আমার কাছে বিস্ময়কর বলে মনে হবে। সত্যি কথা বলতে এই ম্যাচের বিশালতাটাই একটু ভিন্ন। আমি এর সঙ্গে অন্য কোনটারই তুলনা করতে পারি না শুধু ২০০৯ সালে জেতা ফ্রেঞ্চ ওপেন ছাড়া। কেননা ফরাসী ওপেনের জন্য আমি দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছিলাম। চেষ্টা করেছি, ব্যর্থ হয়েছি তারপরও লড়াই চালিয়ে গেছি। বারবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পরও কখনও দমে যাইনি। তাই এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের অনুভূতিটাও ঠিক একইরকম।’ এটা অবশ্য নতুন করে বলার কিছুই নেই যে, নাদাল-ফেদেরারের দ্বৈরথ মানেই অন্যরকম রোমাঞ্চ। এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনাল ছিল তার চেয়েও যেন একটু বেশি-কিছু। চোট-ফর্মহীনতায় টেনিসের সাবেক দুই শীর্ষ তারকাই যে প্রায় হারিয়ে গেছিলেন। সেই দুই তারকাই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ফিরলেন দুর্দো-প্রতাপে। পাঁচ সেটের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের শেষে শিরোপা উঁচিয়ে ধরলেন ফেদেরার। ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রথম শিরোপা জিতেছিলেন ফেদেরার। ২০০৬-০৭ সালে টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। সাময়িক বিরতির পর ২০১০ সালে সর্বশেষ মেলবোর্নে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিলেন ৩৫ বছর বয়সী এই টেনিস তারকা। দীর্ঘ সাত বছর পর মেলবোর্নে আবারও স্বরূপে ফিরলেন ফেদেরার। তাও আবার চিরচেনা, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বন্ধু রাফায়েল নাদালকে হারিয়ে! শুধু তাই নয়, ৪৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট জয়ের স্বাদ পান তিনি। ১৯৬৮ সালের পর-টেনিসের উন্মুক্ত যুগে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে মেজর টুর্নামেন্ট জয়ের রেকর্ডটা নিজের করে রেখেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার কেন রোজওয়াল। ১৯৭২ সালে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে মেজর টুর্নামেন্ট জয়ের রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। এবার সেই রোজওয়ালকে ছাড়িয়ে গেলেন রজার ফেদেরার। ক্যারিয়ারের ১৮তম গ্র্যান্ডসøাম জয়ের পথে ফেদেরার জার্গেন মেলজার, নোয়া রুবিন, টমাস বার্দিচ, কেই নিশিকোরি, মিসচা জেভরেভ, স্টানিসøাস ওয়ারিঙ্কা এবং সবশেষে সেমিফাইনালে রাফায়েল নাদালকে পরাজয়ের স্বাদ উপহার দেন। নাদালের বিপক্ষে এটা ছিল রজার ফেদেরারের ৩৫তম মুখোমুখি লড়াই। এই জয়ের পরও নাদাল ২৩-১২ ব্যবধানে এগিয়ে। আর গ্র্যান্ডসøামের ফাইনালে ৬-৩। আগামী আগস্টেই ছত্রিশে পা রাখবেন ফেদেরার। র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দশে ফেরা সুইস তারকা তাই ইঙ্গিত দিলেন ক্যারিয়ারের ইতি টানার। ফাইনাল জয়ের পরই ফেদেরার উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘আশা করি পরের বছরেও আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে। কিন্তু যদি নাও হয় তাহলেও বলব এখানের বছরগুলো দারুণ ছিল।’
×