ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গণহারে বাবার নাম পরিবর্তন

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

গণহারে বাবার নাম পরিবর্তন

প্রায় হাজারখানেক তরুণ-তরুণী নিজেদের বাবার নাম বদল করতে আবেদন শুরু করেছে। এদের সবাই ভারতের অভ্যন্তরে থাকা সাবেক বাংলাদেশী ছিটমহলগুলোর বাসিন্দা। যেসব ছাত্রছাত্রী ভারতীয় কোন ব্যক্তিকে নিজের বাবা পরিচয় দিয়ে ভারতের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছে তারা এখন সেই নকল বাবার পরিচয় ঝেড়ে ফেলে নিজেদের আসল বাবার নামে পরিচিত হতে চাইছে। বাংলাদেশী ছিটমহলের বাসিন্দা হলে ভারতের স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করা যেত না ২০১৫ সালে ছিট বিনিময়ের আগে পর্যন্ত। তাই অনেকে ভারতীয় কোন গ্রামের বাসিন্দা হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেন আর সেখানকার কোন ব্যক্তিকে নিজের বাবা বানিয়ে নিতেন কাগজে-কলমে। সাবেক ছিটমহল মশালডাঙ্গা গ্রামের জয়নাল আবেদিন কুচবিহার কলেজ থেকে বাংলায় এম এ পাস করেছেন। তার আসল বাবার নাম বেল্লাল হোসেন। তবে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক আর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে তার বাবার পরিচয় লেখা আছে শচীনন্দন গ্রামের ভারতীয় নাগরিক বেল্লাল শেখের। পোয়াতুরকুটি সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দা বামনহাট হাই স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ে আফসানা। তার বাবার নাম জমশের আলী, তবে স্কুলের খাতায় বাবা হিসেবে নাম লেখা আছে কালমাটি গ্রামের আমজাদ আলীর। ওই গ্রামেরই রহমান আলী, বা মশালডাঙ্গার সাদ্দাম হোসেন -সকলেই নকল ভারতীয় বাবার নাম নিয়ে ভারতের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়তে পড়াাশোনা শেষ করেছেন অথবা এখনও পড়ছেন। জয়নাল আবেদিন বলছিলেন, স্কুলে ভর্তির সময় খুব প্রয়োজনীয় না হলেও মাধ্যমিকের রেজিস্ট্রেশন করানোর সময় বাবার পরিচিতি লাগে। আর সেই নামটাই পরবর্তীতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব জায়গায় ব্যবহার করতে হয়। ছিটমহল বিনিময় হয়ে যাওয়ার পরে যেখানেই চাকরির আবেদন করছি অথবা ব্যাংক লোনের আবেদন করছি, সেখানেই এফিডেভিট জমা দিতে হচ্ছে যে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটে আমার বাবার নাম ভুল ছিল। ছিটমহলগুলোর বিনিময়ের দাবিতে যে আন্দোলন চলেছিল, তার নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলছিলেন,সংবিধান সংশোধন করে শুধু জমিসংক্রান্ত বিষয়গুলোর নিষ্পত্তির চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু মানবসম্পদের সমস্যাগুলোর দিকে খেয়াল রাখা হয়নি তখন। শিক্ষাসংক্রান্ত এই সমস্যাগুলো সমাধানের দিকে রাজ্য সরকার আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এক্ষুণি নজর দেয়া দরকার। সূত্র-বিবিসি বাংলা
×