ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সারাদেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আগামীকাল শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সারাদেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আগামীকাল শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের দশ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আগামীকাল থেকে সারাদেশে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। তিন হাজার ২৩৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেবে ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ৬১৩ জন শিক্ষার্থী। যা গত বছরের তুলনায় এক লাখ ৩৫ হাজার ৯০ জন বেশি। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, প্রশ্ন ফাঁস বন্ধে সর্বোচ্চ কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে কেবল কেন্দ্র সচিবদের ফোন নিয়ে প্রবেশের অনুমতি থাকলেও এবার সেই ফোনটি কোন স্মার্ট ফোন হতে পারবে না। এদিকে পাবলিক পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন নিয়ে বিতর্ক এড়াতে নতুন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। খাতা মূল্যায়ন গ্রহণযোগ্য ও মানসম্মত করতে নেয়া হচ্ছে উদ্যোগ। মঙ্গলবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এবারের পরীক্ষার প্রস্তুতিসহ নানা দিক তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এসএম ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, পরীক্ষার কেন্দ্রে কেবল কেন্দ্র সচিবদের সাধারণ মানের ফোন নিয়ে প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। তবে এবার কোনভাবেই কেন্দ্রের ভেতর স্মার্ট ফোন নিয়ে যেতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিবের অনুমতি ছাড়া পরীক্ষার্থীর বাইরে অন্য কেউ কেন্দ্রের সীমানায় প্রবেশ করতে পারবেন না। এছাড়া এবার পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নেও বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। পাশাপাশি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধে নেয়া হয়েছে কড়া ব্যবস্থা। মন্ত্রী জানান, আটটি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ড থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ৬১৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবে। গত বছর এই পরীক্ষায় ১৬ লাখ ৫১ হাজার ৫২৩ জন অংশ নিয়েছিল। এই হিসেবে মাধ্যমিকে এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার ৯০ জন। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষা চলবে। ৪ থেকে ১১ মার্চ হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা। প্রশ্ন ফাঁসরোধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের উদ্দেশে নাহিদ বলেন, দয়া করে মিথ্যা ফাঁস করা প্রশ্নের পেছনে ছুটবেন না। আজকাল টেলিফোন নিয়ে গেলে ফটো তুলে সেই ছবি বাইরে পাঠিয়ে দেয়া যায়। সেজন্য আমরা বলেছি শুধু কেন্দ্র সচিব জরুরী যোগাযোগের প্রয়োজনে ফোন নিতে পারবেন। এর বাইরে কেউ ফোন নিতে পারবেন না। যেটা দিয়ে ফটো তোলা যায় না ওই ধরনের ফোন নিয়ে যাবেন। কারণ তার (কেন্দ্র সচিব) কাজই হলো ইনফরমেশন আদান-প্রদান করা। আমাদের জানানো যে এই হচ্ছে আর এই হচ্ছে না। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা এটা স্ট্রিকলি বলে দিচ্ছি- কোন টিচার কোন টেলিফোন পরীক্ষাকেন্দ্রে নিতে পারবেন না। পরীক্ষাকেন্দ্রে একটাই ফোন নিতে পারবেন কেন্দ্র সচিব। সেটি তিনি তার অফিস কক্ষে রাখবেন এবং সেটা স্মার্ট ফোন না, সেটা হবে সাধারণ ফোন। বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডে আয়োজিত কেন্দ্র সচিবদের সভায় স্মার্ট ফোন নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে না যাওয়ার বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এটা আগেই বলে দেয়া হয়েছে। এটা করলে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সেজন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। খাতা মূল্যায়নে নতুন উদ্যোগ ॥ সৃজনশীল পদ্ধতি আয়ত্ত করতে ব্যর্থ হচ্ছেন শিক্ষকরা। নানা প্রশিক্ষণের পরও তারা এ পদ্ধতি বুঝে উঠতে পারছেন না। সঠিকভাবে মূল্যায়ন হচ্ছে না সৃজনশীল পরীক্ষার উত্তরপত্র। জেলা পর্যায়ে এ সম্যসা আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এসব বিষয় আমলে নিয়ে নতুন পদ্ধতির কথা ভাবছে সরকার। জানা গেছে, এবারের এসএসসি পরীক্ষার খাতা ‘মডেল-উত্তর’ পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করবেন পরীক্ষকরা। পরীক্ষা শেষে বোর্ড থেকে খাতা বিতরণের সময় পরীক্ষকদের প্রশ্নের উত্তরপত্র সরবরাহ করা হবে। তা দেখে তারা উত্তরপত্র মূল্যায়ন করবেন। পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে বৈষম্য দূর করতে এ উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, পাবলিক পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন ব্যবস্থা উন্নত করতে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। এতে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মূল্যায়ন করা হবে। তখন প্রকাশিত ফলে কে কতটা ভাল শিক্ষার্থী তার স্বীকৃতি পাবে।
×