ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বোধোদয় আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনার

মাদক সেবন জীবনের সবচেয়ে বাজে সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ৩১ জানুয়ারি ২০১৭

মাদক সেবন জীবনের সবচেয়ে বাজে সিদ্ধান্ত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবশেষে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করলেন ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের অন্যতম সেরা তারকা দিয়াগো ম্যারাডোনা। ফুটবল মাঠে যেমন সবার সেরা ছিলেন এই তারকা, তেমনি মাঠের বাইরে বিতর্কিত কর্মকা-ের জন্যও সমালোচিত হয়েছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর জানিয়েছেন, মাদক সেবন তার জীবনের সবচেয়ে বাজে সিদ্ধান্ত। বিদ্রোহী হিসেবেই ম্যারাডোনার খ্যাতি সমগ্র বিশ্বে। সারাজীবন অন্যায় আর অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার, আর বিপ্লবী আচরণ দিয়ে তিনি কামিয়েছেন এই খেতাব। তবে সবকিছু ছাপিয়ে তার অসামান্য ফুটবল সত্তাকেই বড় করে দেখা হয়। ১৯৯৭ সালে ৩৭তম জন্মদিনে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানানর পর একযুগ অনেকটাই নিভৃতে ছিলেন। কিন্তু ২০১০ সালে আর্জেন্টিনার কোচ হয়ে আবারও নিজেকে আলোচনায় তুলে আনেন। এরপর বিশ্বকাপে ব্যর্থতা এবং বিশ্বকাপ পরবর্তী সময়ে কোচ পদে থাকা নিয়ে টানাপোড়েনে আর্জেন্টাইন বোর্ডের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। যে কারণে মেসি, তেভেজদের পাশে আর থাকা হয়নি বর্ণিল চরিত্রের ম্যারাডোনার। মাঝখানের সময়েও বিভিন্ন কা-ের জন্ম দিয়ে ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সম্প্রতি শোনা গিয়েছিল সাবেক দল নেপোলির কোচ হচ্ছেন। তবে সেটা না হলেও ইতালিয়ান ক্লাবটির দূত হয়েছেন। এবার আর্জেন্টাইন গ্রেট জীবনের ভুল নিয়ে অনুশোচনা প্রকাশ করলেন। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক একটা সময় বুঝতে পেরেছিলেন মাদক তার জীবনের কাল হয়ে এসেছিল। আর তাই মাদকের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ে সফল হয়ে জীবন সম্পর্কে নতুন করে জেনেছেন তিনি। বয়স ২০ বছর পার হওয়ার পর মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার কথা জানান ম্যারাডোনা। শেষ পর্যন্ত ২০০৪ সালে সুস্থ জীবনে ফিরে আসেন তিনি। এজন্য সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ ৫৬ বছর বয়সী ম্যারাডোনার। আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর বলেন, যখন আমি মাদক নিতে শুরু করি তখন বয়স ছিল ২৪ বছর। আমি ছিলাম বার্সিলোনায়। আমার জীবনে নেয়া সবচেয়ে বাজে সিদ্ধান্ত ছিল এটা। ম্যারাডোনা জানান, যখন আমি কোমায় ছিলাম তখন আমার মেয়ে প্রার্থনা করছিল যেন তার জন্য বেঁচে থাকি। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ কারণ তিনি তার কথা শুনেছেন এবং আমাকে জাগিয়ে তুলেছিলেন। বর্ণিল ও বিতর্কিত ক্যারিয়ারে অর্থ, মেয়ে ও মাদকের মধ্যে কোন্টা সবচেয়ে বড় ধরনের হুমকি ছিল জানতে চাইলে একবাক্যে ম্যারাডোনা বলেন, মাদক ছিল সবচেয়ে বড় সমস্যাÑ এটা মেরে ফেলে। আমি ভাগ্যবান যে এখানে আপনার সঙ্গে কথা বলছি। যদি এটা চালিয়ে যেতাম তাহলে আমি মারা যেতাম, কোন সন্দেহ নেই। ১৩ বছর হলো মাদক ছেড়েছি এবং খুব ভাল আছি। মাদকের কারণেই জাতীয় দল থেকে বিতর্কিত হয়ে বিদায় নেন ম্যারাডোনা। ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপে মাত্র দুই ম্যাচ খেলে বহিষ্কৃত হন ইফিড্রিন টেস্টে ধরা পড়ায়। এরপর আর কখনও জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দেয়া হয়নি। এর তিন বছর আগে ইতালিতে ড্রাগ টেস্টে তার শরীরে কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়া গেলে ১৫ মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। ১৯৯২ সালে ফিরলেও নেপোলি ছেড়ে যোগ দেন সেভিয়ায়। এরপর স্বদেশী ক্লাব নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজে খেলে ১৯৯৭ সালে ফুটবল ক্যারিয়ার শেষ করেন বোকা জুনিয়র্সে।
×