ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশেষ ফিটনেস টেস্টে ইনজুরিতে থাকা ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহীম

হায়দরাবাদ টেস্টে কোহলির উইকেট চান রাব্বি!

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ৩১ জানুয়ারি ২০১৭

হায়দরাবাদ টেস্টে কোহলির উইকেট চান রাব্বি!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতীয় দলের জার্সিতে গত অক্টোবরে যাত্রা শুরু করেছেন পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি। সফরকারী ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সাদা পোশাকের ক্রিকেট- টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিযান শুরু হয় তার। সবমিলিয়ে ৪ টেস্ট খেলে ফেলেছেন। আর এবার দলের হয়ে নিউজিল্যান্ড সফরটাকে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় পাওয়া বলে মনে করছেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে খেলার আশা পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু একটা বড় আফসোস রয়ে গেছে ২৫ বছর বয়সী বরিশালের এ ডানহাতি পেসারের। তার স্বপ্ন ছিল ‘লিটল মাস্টার’ শচীন টেন্ডুলকরের উইকেট নেয়ার। তবে ক্যারিয়ার শুরুর অনেক আগেই ভারতীয় ক্রিকেট কিংবদন্তি শচীন সবধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফেলেছেন। এবার রাব্বির আরেকটি পরীক্ষা আসন্ন ভারত সফর। এ সফরে সুযোগ পেলে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলির উইকেট পেতে চান। এ সফরের আগে ঐচ্ছিক অনুশীলন শুরু করেছেন অনেকেই। তবে আজ ইনজুরিতে থাকা ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহীমের জন্য বিশেষ ফিটনেস টেস্ট নেয়া হবে। এবার নিউজিল্যান্ড সফর ছিল বাংলাদেশ দলের জন্য বিভীষিকাময়। শুরু থেকেই বৈরী আবহাওয়া ও অচেনা পরিবেশ বড় একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে গিয়েছিল। এরসঙ্গে যোগ হয়েছিল একের পর এক ইনজুরির ধাক্কা। সবচেয়ে বড় ইনজুরিটা টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকের। অবশ্য তিনিই এখন খেলার জন্য সবার আগে প্রস্তুত। ইনজুরি আক্রান্ত বুড়ো আঙ্গুলে স্ক্যান করানোর পর সেখানে কোন চিড় পাওয়া যায়নি। রবিবারই তিনি ব্যাট হাতে অনুশীলন করেছেন। সোমবারও জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি মাঠে দীর্ঘক্ষণ ব্যাটিং করেছেন তিনি। তবে ইমরুল উপস্থিত থাকলেও তিনি কোন অনুশীলন করেননি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী আগেই জানিয়ে রেখেছেন আজ ইনজুরির অবস্থা পুনরায় পর্যবেক্ষণের পর জানান হবে ইমরুল ও মুমিনুলের অবস্থা। মুমিনুল নিউজিল্যান্ড সফরে প্রথম টেস্টে ব্যাটিংয়ের সময় কোমরে আঘাত পেয়েছিলেন। তবে কোন চিড় ধরা পড়েনি। আজ তার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত জানাবেন দেবাশীষ। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন ইমরুল ও মুমিনুল উভয়ে খুব দ্রুত মাঠে ফিরতে পারবেন। তবে খেলার আগেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তাদের ব্যাপারে। পেসার মোহাম্মদ শহীদও লড়ছেন ইনজুরির সঙ্গে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) খেলার সময় তিনি আঘাত পেয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরতে পারেননি। তবে তার অনুপস্থিতিতে ভাগ্য খুলেছে রাব্বিরের। গত অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয় এ পেসারের। তবে তেমন সুবিধা করতে পারেননি। দুই টেস্ট খেলে মাত্র একটি উইকেট পেয়েছিলেন। তবে ভাল বোলিং করে নিজের সামর্থ্য ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। এ কারণে নিউজিল্যান্ড সফরের দলেও জায়গা করে নেন। খেলেন আরও দুটি টেস্ট। আর এটাকে ক্যারিয়ারের খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন রাব্বি, ‘নিউজিল্যান্ড সফরটা আমার জীবনের অনেক বড় পাওয়া। ক্যারিয়ারে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এ সফরটা। ভালভাবে শেষ করে আসতে পেরেছি সেজন্য ভাল লাগছে।’ কিন্তু থেমে থাকলে চলবে না রাব্বির। সবেমাত্র ক্যারিয়ারের শুরু। এবার ভারত সফর। এবারই প্রথম তাদের মাটিতে টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ দল। সেখানেও সুযোগ পেতে মুখিয়ে আছেন রাব্বি, ‘যদি এ সফরেও সুযোগ পাই অবশ্যই নিজেকে ভালভাবে মেলে ধরার চেষ্টা করব। ভারত দল হিসেবে খুবই শক্তিশালী এবং ওদের প্রতিটি খেলোয়াড়ই কিংবদন্তিতুল্য। আমার যেটা মনে হচ্ছে ভারতের বিপক্ষে খেলাটা খুব একটা সহজ হবে না। বিরাট কোহলি এই মুহূর্তে বিশ্বের এক নাম্বার ব্যাটসম্যান। বড় খেলোয়াড়দের উইকেট নেয়াটা যে কোন বোলারের জন্যই স্বপ্নের ব্যাপার। কোহলির উইকেট পেলে এটা আমার জীবনের অনেক বড় একটা স্বপ্ন পূরণ হবে।’ তবে স্বপ্ন ছিল শচীনের উইকেট নেয়ার। সেটা আর সম্ভব নয়। ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন শচীন এবং সেটার অনেক পরে শুরু হয়েছে রাব্বিরের ক্যারিয়ার। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার স্বপ্ন ছিল শচীনের উইকেট নেব। কিন্তু এখন আর তিনি খেলেন না, এ কারণে একটা বড় আফসোস থেকে যাবে।’ নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ দলকে বৈরী আবহাওয়া ও বিরূপ পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে হয়েছে। ভারতের বিরুদ্ধে অন্তত সেই সমস্যা থাকবে না। তাছাড়া নিজ দলের ব্যাটসম্যানদের নিয়েও আশাবাদী রাব্বি। তিনি বলেন, ‘আমাদের খেলোয়াড়রাও অনেক বড় বড় রেকর্ডের অধিকারী। যে কোন ফরমেটে দেড় ’শ-দু’ শ করার মতো সামর্থ্য আছে। তাই আমরা যদি আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি তাহলে ভাল একটা ফলাফল নিয়ে আসতে পারব। নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন ও ভারতের কন্ডিশন ভিন্ন। তবে এখানকার আবহাওয়া আমাদের অনুকূলে থাকবে। নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন একেবারেই আমাদের অনুকূলে ছিল না। ওখানে প্রচ- ঠান্ডা ও বাতাস ছিল বলে আমাদের খাপ খাওয়াতে কষ্ট হয়েছে।’
×