ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

স্টয়নিসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পরও অস্ট্রেলিয়ার হার

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ৩১ জানুয়ারি ২০১৭

স্টয়নিসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পরও অস্ট্রেলিয়ার হার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘চ্যাপেল-হ্যাডলি’ ট্রফির প্রথম ওয়ানডেতে ৬ রানের নাটকীয় জয় পেয়েছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। তারচেয়ে বিস্ময়কর, ২৮৬ রানের জবাবে এক পর্যায়ে ৬৭ রানে ৬ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়াকে একাই জয়ের খুব কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন মার্কাস স্টয়নিস। ৪৭তম ওভারের শেষ বলে সফরকারীরা যখন ২৮০ রানে অলআউট হয় স্টয়নিস তখন ব্যক্তিগত ১৪৬ রানে অপরাজিত। নিয়মিত অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ, সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের অনুপস্থিতিতে এই ম্যাচে নেতৃত্ব দেয়ার কথা ছিল ম্যাথু ওয়েডের। সেই তিনিও হঠাৎ ইনজুরিতে পড়লে এ্যারন ফিঞ্চ দায়িত্ব পালন করেন। তবে অকল্যান্ডের ম্যাচটিতে সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনায় কেবলই স্টয়নিস। সতীর্থদের ব্যর্থতায় হার এড়াতে পারেননি, তবে ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সাত নম্বর বা তার নিচে ব্যাটিংয়ে নেমে রেকর্ড ব্যক্তিগত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরার পুরস্কার পকেটে পুরেছেন ২৭ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান। টিম সাউদির আগের দুই বলে ছক্কা হাঁকিয়ে জয়ের লক্ষ্যটাকে ১৯ বলে ৭ রানে নামিয়ে আনেন স্টয়নিস। তখনই ছোট্ট অথচ গুরুত্বপূর্ণ সেই ভুল। পরের ওভারে স্ট্রাইক ধরে রাখার লক্ষ্যে শেষ বলে দ্রুত একটি রান নিতে চেয়েছিলেন স্টয়নিস। শট মিডঅনে থাকা কেন উইলিয়ামসন সুযোগ কাজে লাগাতে কোন ভুল করেননি। রানআউট সঙ্গী জস হ্যাজলউড। ৩ ওভার বাকি থাকতে ৬ রানের নাটকীয় জয় নিউজিল্যান্ডের। অবিশ্বাস্য। মাত্র দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নেমে ১৪৬ রানে অপরাজিত স্টয়নিস। তরুণ অলরাউন্ডারের তার ১১৭ বলের ইনিংসে ৭ চারের বিপরীতে ছক্কা হাঁকিয়েছেন ১১টি। ওয়ানডেতে সাত নম্বরে নেমে তারচেয়ে বেশি রানের ইনিংস আছে আর একটিই, নিউজিল্যান্ডের লুক রনকির অপরাজিত ১৭০Ñ ২০১৫ সালে ডুনেডিনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। তবে রনকি ওই রান করেছিলেন আগে ব্যাট করে, সেই ম্যাচে তার দল নিউজিল্যান্ডও জিতেছিল। কিন্ত ‘অনসাং হিরো’ হয়ে থাকলেন স্টয়নিস। অথচ ম্যাচটা জিতে গেলে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের ইতিহাসে রূপকথার অংশ হয়ে যেতেন তিনি। ক্রিকেট আসলে এমনই। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রান নয় নম্বরে নামা প্যাট কামিন্সের। এছাড়া দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন জেমস ফকনার (২৫), গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (২০) ও শন মার্শ (১৬)। আনকোরা দলের অধিনায়ক ফিঞ্চ আউট হন ৪ রান করে। স্বাগতিকদের জয়ে স্পিনার মিচেল স্যান্টনার ৩, পেসার ট্রেন্ট বোল্ড ও লুক ফার্গুসন নেন ২টি করে উইকেট। এর আগে মার্টিন গাপটিল (৭৩ বলে ৬১) ও নিল ব্রুমের হাফ সেঞ্চুরির সৌজন্যে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৮৬ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় কিউইরা। ১৩৪ রানে ৫ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড প্রতিরোধ গড়ে ব্রুম-জিমি নিশামের ব্যাটে। ষষ্ঠ উইকেটে এই দুইজন গড়েন ৭৬ রানের জুটি। অলরাউন্ডার নিশাম ৪৫ বলে ফেরেন ৬টি চারে ৪৮ রান করে। সেখান থেকে দলের সংগ্রহ আড়াই ’শ ছাড়ায় ব্রুমের ব্যাটে। ৭৫ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৭৩ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। শেষদিকে ৭ বলে ১৬ রানের ছোট কিন্তু কার্যকর এক ইনিংস খেলেন ১১ নম্বরে নামা ট্রেন্ট বোল্ট। ৪৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে অতিথিদের সেরা বোলার স্টয়নিস। দল হারলেও অলরাউন্ড নৈপুণ্যের জন্য তিনিই জেতেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। বৃহস্পতিবার নেপিয়ারে দ্বিতীয় ওয়ানডে। স্কোর ॥ নিউজিল্যান্ড ২৮৬/৯ (৫০ ওভার; গাপটিল ৬১, লাথাম ৭, উইলিয়ামসন ২৪, টেইলর ১৬, ব্রুম ৭৩, মুনরো ২, নিশাম ৪৮, স্যান্টনার ৭, সাউদি ০, ফার্গুুসন ৩*, বোল্ট ১৬*; স্টার্ক ১/৫৯, হ্যাজলউড ১/৪৮, কামিন্স ২/৬৭, ফকনার ১/২৯, স্টয়নিস ৩/৪৯, হেড ১/২১)। অস্ট্রেলিয়া ২৮০/১০ (৪৭ ওভার; ফিঞ্চ ৪, হেড ৫, মার্শ ১৬, হ্যান্ডসকম্ব ৭, ম্যাক্সওয়েল ২০, হেজলেট ৪, স্টয়নিস ১৪৬*, ফকনার ২৫, কামিন্স ৩৬, স্টার্ক ৩, হ্যাজলউড ০; সাউদি ১/৬৩, বোল্ট ২/৫৮, ফার্গুসন ২/৪৪, স্যান্টনার ৩/৪৪, নিশাম ০/৪৯, মুনরো ১/২০)। ফল ॥ নিউজিল্যান্ড ৬ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ স্টয়নিস (অস্ট্রেলিয়া)। সিরিজ ॥ তিন ওয়ানডের সিরিজে নিউজিল্যান্ড ১-০তে এগিয়ে।
×