ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেষের ইঙ্গিত দিলেন ফেদেরার!

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ৩১ জানুয়ারি ২০১৭

শেষের ইঙ্গিত দিলেন ফেদেরার!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আরেকটি গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পেলেন রজার ফেদেরার। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে রাফায়েল নাদালকে হারিয়ে ক্যারিয়ারের ১৮তম মেজর টুর্নামেন্ট জয়ের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। তবে নতুন বছরের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট জয়ের পরই ক্যারিয়ারের শেষের ইঙ্গিত দিচ্ছেন ৩৫ বছর বয়সী রজার ফেদেরার। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের পর রড লেভার এ্যারেনাতেই ফেড এক্সপ্রেস জানিয়ে দেন এটাই হতে পারে তার শেষ সফর। আর যদি নাও হয় তা তাহলেও এখানকার সময়টা দারুণ ছিল আমার। এ বিষয়ে রজার ফেদেরার উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘আশাকরি পরের বছরেও আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে। কিন্তু যদি নাও হয় তাহলেও বলব এখানকার বছরগুলো দারুণ ছিল।’ ২০০৩ সালে উইম্বলডন জয়ের মাধ্যমে মিশন শুরু করেন রজার ফেদেরার। এরপর আর পেছনের দিকে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। উইম্বলডনেই সর্বোচ্চ সাতটি মেজর গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পেয়েছেন তিনি। এছাড়া বছরের প্রথম ও শেষ গ্র্যান্ডসøাম যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও ইউএস ওপেনে সমান পাঁচটি করে মেজর শিরোপা নিজের শোকেসে তুলেছেন সুইস তারকা। আর ফ্রেঞ্চ ওপেনে মাত্র একবারই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন তিনি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ২০০৯ সালে এই শিরোপা নিজের শোকেসে তোলার পরই ক্যারিয়ার সøাম জয়ের মাইলফলক স্পর্শ করেন ফেদেরার। যে কারণেই ফ্রেঞ্চ ওপেনের শিরোপা জয়ের মুহূর্তটা ফেদেরারের কাছে এখনও বেশ তরতাজা। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের পর আবারও সেই ফ্রেঞ্চ ওপেনের স্মৃতিরোমন্থন করলেন তিনি। জানালেন এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের অনুভূতিটা বিশেষ ধরনের। যার সঙ্গে শুধু ফ্রেঞ্চ ওপেনেরই তুলনা করা যায়। এ বিষয়ে নিজের অভিমত প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এই গ্র্যান্ডসøাম জয়ের আনন্দটা খুব দ্রুতই ডুবে যাবে না। যখন সুইজারল্যান্ডে ফিরব তখনও আমার কাছে এটা বিস্ময়কর বলেই মনে হবে। সত্যি কথা বলতে এই ম্যাচের বিশালতাটাই একটু ভিন্ন। আমি এর সাথে অন্য কোনটারই তুলনা করতে পারি না শুধু ২০০৯ সালে জেতা ফ্রেঞ্চ ওপেন ছাড়া। কেননা ফরাসী ওপেনের জন্য আমি দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছিলাম। চেষ্টা করেছি, ব্যর্থ হয়েছি তারপরও লড়াই চালিয়ে গেছি। বারবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর কখনও দমে যাইনি। অবশেষে তার সাফল্যও পেয়েছি। এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের অনুভূতিটাও ঠিক একই রকম।’ নতুন বছরের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট জয়ের আগে সর্বশেষ ২০১২ সালে উইম্বলডনের শিরোপা নিজের শোকেসে তুলেছিলেন তিনি। এরপর থেকেই শিরোপা-খরায় ভোগেন ফেদেরার। চোট আর ফর্মহীনতার সঙ্গে লড়াই করতে করতে যেন ক্লান্ত হয়ে পড়েন সুইস তারকা। টেনিসবোদ্ধারা মনে করেন রজার ফেদেরার যেন ফুরিয়েই গেছেন। অবসরের গুঞ্জনও শুরু হয় তখন থেকে। ইনজুরির কারণে গত বছরের বেশিরভাগ সময় তো কোর্টের বাইরেই ছিটকে পড়েন তিনি। সার্জারি করার জন্য ছয়মাস কোর্টের বাইরে ছিটকে পড়াটা তো তার ক্যারিয়ারেরই সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী। কিন্তু তারপরও হতাশায় ভেঙ্গে না পড়ে ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেছেন ফেদেরার। এবার যেন তারই পুরস্কার পেলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে আবার বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দশেও জায়গা করে নিয়েছেন। এতে দারুণ রোমাঞ্চিত রজার ফেদেরার। তবে মজার ব্যাপার হলো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদালই নাকি ফেদেরারকে ভাল খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তুলতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন। হ্যাঁ, সুইস তারকা নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন তা। এ প্রসঙ্গে সাবেক নাম্বার ওয়ান তারকা বলেন, ‘আমার ক্যারিয়ারে রাফা নিশ্চিতভাবেই বিশেষ ধরনের ভূমিকা রেখেছে। আমি মনে করি, ভাল খেলোয়াড় হওয়ার জন্য সেই আমাকে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছে। তার বিপক্ষে খেলা মানেই চ্যালেঞ্জিং এই উপলব্ধিটা আমার সবসময়ই হত। তাই নিঃসন্দেহে সে আমার কাছে বিশেষ খেলোয়াড়। ফাইনালের আগে আমি এটাও বলেছিলাম যে তার বিপক্ষে জিততে পারলে এটা হবে মধুর। কেননা গ্র্যান্ডসøামে তার বিপক্ষে দীর্ঘদিন ধরেই জিততে পারিনি।’ বর্তমানে ১৮টি গ্র্যান্ডসøাম জিতে সবার ওপরে অবস্থান করছেন রজার ফেদেরার। ১৪টি গ্র্যান্ডসøাম জিতে তার পরেই অবস্থান পিট সাম্প্রাসের। সমান-সংখ্যক গ্র্যান্ডসøাম নিয়ে সাম্প্রাসের সঙ্গে রয়েছেন রাফায়েল নাদালও। রয় এমারসন এবং নোভাক জোকোভিচ উভয় তারকাই সমান ১২টি করে গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পেয়েছেন।
×