ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

এমপি লিটন হত্যার এক মাস পরও মামলার কূল কিনারা হয়নি

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৩১ জানুয়ারি ২০১৭

এমপি লিটন হত্যার এক মাস পরও মামলার কূল কিনারা হয়নি

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা, ৩০ জানুয়ারি ॥ গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকার দলীয় এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হওয়ার এক মাস পূর্ণ হলো। একমাস অতিক্রান্ত হলেও হত্যার রহস্য এখনও উন্মোচিত হয়নি। ধরা পড়েনি প্রকৃত খুনীরাও। ফলে হতাশ হয়ে পড়েছে সুন্দরগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ ও লিটনের পরিবার। এছাড়া রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সচেতন মানুষও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে উঠেছে। তাদের আশঙ্কা যদি এই হত্যাকা-ের প্রকৃত খুনীরা ধরা না পড়ে তাহলে জামায়াত-শিবির এবং জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর সন্ত্রাসীরা সুন্দরগঞ্জের হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এমপি লিটন খুন হওয়ার পর থেকে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও পিবিআইসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তীক্ষè মেধাসম্পন্ন বিশেষায়িত দল হত্যাকা-ের মূল রহস্য উদঘাটনসহ খুনীদের গ্রেফতারে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে। এই তৎপরতার জের ধরেই হত্যাকা-ের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে সুন্দরগঞ্জ উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এ পর্যন্ত জামায়াত-শিবির, বিএনপির নেতাকর্মীসহ অন্যদের মধ্য থেকে ১২৮ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এদের মধ্যে থেকে ২৩ জনকে হত্যা মামলার সঙ্গে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পরে সবাইকে জেলহাজতে পাঠায়। এর মধ্যে ১২ জনকে রিমান্ডে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরিবারের সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলন ॥ এমপি লিটনের বড় বোন আফরোজা বারী গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে ২৫ জানুয়ারি পরিবারবর্গ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এই খুনকে ঘিরে কি রহস্যের কথা তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, খুনীরা লিটন হত্যাকা-ের জন্য নিরাপদ জায়গা হিসেবে তার নিজ বাড়িকেই বেছে নেয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, তার বাড়িটিই খুনীদের কাছে নিরাপদ বিবেচিত হলো কেন? কিভাবে খুনীরা পরিচয় না দিয়েই ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ার সুযোগ পেল? তাছাড়া লিটনের অতন্দ্র প্রহরী জার্মান শেফার্ড কুকুর দুটো ওই সময়ে কোথায় ছিল? কেন গিয়েছিল? দুর্বৃত্তরা রিভলবারের ৫টি গুলি করার পরও কেন তার নিকটজনরা লিটনের কাছে এলো না? লিটন গুলিবিদ্ধ হবার পর কাউকে কাছে না পেয়ে তাকে দৌড়ে বাড়ির ভেতরে আঙ্গিনার দিকে ছুটে যেতে হলো কেন? তিনি আরও প্রশ্ন রাখেন, কেন লিটনের ঘনিষ্ঠজন, দলীয় নিবেদিত নেতাকর্মী এবং পরীক্ষিত সহযোদ্ধারা কেউই তার পাশে ছিল না, তাদের কি দূরে সরে দেয়া হয়েছিল? এমপি লিটন হত্যা মামলা ॥ সুন্দরগঞ্জ থানায় লিটন হত্যা মামলাটি দায়ের করেছিল লিটনের ছোট বোন ফাহমিদা বুলবুল কাকলী। ওই মামলায় ৫ জন অজ্ঞাত পরিচয় খুনীকে আসামি করা হয়। এদিকে লিটনের স্ত্রী সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতি এমপি লিটন নিহত হওয়ার ৪ দিন পর ৩ জানুয়ারি বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের উদ্দেশে দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, জামায়াত নেতা গোলাম আযমের জামায়াত-শিবিরের খুনীরাই তার স্বামীকে হত্যা করেছে। লিটনের শ্যালক বেতার, তদন্তকারী কর্মকর্তা ও থানার অফিসার ইনচার্জ যা বলেন ॥ এদিকে বেদারুল আহসান বেতার তার বাড়িতে একান্ত সাক্ষাতকারে বলেন, এমপি লিটন হত্যার পর থেকে আমার বাড়িতে নজরদারি এবং জিজ্ঞাসাবাদ দিনদিন বেড়েই চলেছে। তিনি বলেন, এমপি লিটন খুন হওয়ার আগের মুহূর্তে তার বাড়িতে (এমপি লিটন) যাদের আমি এক ঝলক দেখেছি আটককৃতদের মধ্যে তারা থাকলে সামনা সামনি করলে অবশ্যই চিনতে পারব। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবু হায়দার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান জানান, আমরা সর্বোচ্চ মেধা খাটিয়ে বিভিন্ন কৌশল বিবেচনায় নিয়ে খুনের জট খোলাসহ খুনীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।
×