ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বেগম জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার

এতিমের টাকা আত্মসাত মামলা নিয়ে দিনভর বাগবিতন্ডা

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৩১ জানুয়ারি ২০১৭

এতিমের টাকা আত্মসাত মামলা নিয়ে দিনভর বাগবিতন্ডা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দিনভর উভয় পক্ষের আইনজীবীদের বাগ্বিত-ার পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেছেন আদালত। সোমবার ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার এ দিন ধার্য করেন। বিগত জরুরী অবস্থার সময় দায়ের করা এ মামলার বিচার কাজ চলছে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে বেলা সোয়া ১১টার দিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আদালতে পৌঁছালে মামলার আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। মামলার কার্যক্রমের শুরুতেই খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবদুর রেজ্জাক খান এ মামলা পুনঃতদন্তের পাঠানোর পাশাপাশি আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি মুলতবির আবেদন করেন। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এর বিরোধিতা করে বলেন, মামলার দায় থেকে পার পাওয়ার জন্য আসামিপক্ষ বার বার সময় চেয়ে বিচার বিলম্বিত করছে। কাজল আদালতের নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি শুরুর আবেদন করেন। এর পর খালেদার আইনজীবীরা মামলা পুনঃতদন্তের জন্য বিভিন্ন যুক্তি দেখাতে থাকেন। বেলা দেড়টার আগে আদালত খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি শুরুর জন্য তার বয়স কত জানতে চান। শুনানির একপর্যায়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নাল আবেদীন আদালতকে বলেন, ‘খালেদা জিয়া কিছু খাননি। তার আইনজীবীরাও খাননি।’ দুইপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শেষ না হলে আদালত বেলা একটা ৫০ মিনিটের দিকে বিরতিতে যান। দুইটার দিকে বিএনপির চেয়ারপার্সন এজলাসে বসে শুধু চা পান করেন। আদালত আবার বসে বেলা আড়াইটার দিকে। এরপর খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী জয়নাল আবেদীন দুই দিন সময় চেয়ে আবেদন করেন। ওই আবেদনের বিরোধিতা করে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল পাল্টা যুক্তি তুলে ধরে আজকেই (সোমবার) খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি শুরু করতে বলেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের আইনজীবীর মধ্যে প্রচ- বাগ্বিত-া হয়। একপর্যায়ে বিকেল পৌনে চারটার দিকে আদালত আগামী বৃহস্পতিবার খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির দিন ধার্য করেন। আর খালেদার পক্ষে মামলার পুনঃতদন্তের আবেদনের ওপর বিস্তারিত শুনানির সময়ও ওই দিন ধার্য করেন। ওইদিন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাতেও খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের অসমাপ্ত বক্তব্য উপস্থাপনের দিন নির্ধারিত রয়েছে। পরে আদালতের কার্যক্রম সমাপ্ত হলে বিকেল পৌনে চারটার দিকে খালেদা জিয়া আদালত চত্বর ত্যাগ করেন। এর আগে ২৬ জানুয়ারি এই মামলার আরও দুজনের আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি শেষ হয়। ওই দিনই আদালত খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন। আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন আদালতে হাজির না থাকায় মামলার আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সেদিন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। মামলার ছয় আসামির মধ্যে সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ গত ২৬ জানুয়ারি আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। আর তলব করার পরও না আসায় খালেদার বড় ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সেদিন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেয় আদালত। মামলার বাকি দুই আসামি সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
×