ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীকে ভ্যানে টুঙ্গিপাড়া ঘুরিয়ে ভাগ্য খুলে গেল ইমাম শেখের

প্রকাশিত: ০৫:২০, ৩০ জানুয়ারি ২০১৭

প্রধানমন্ত্রীকে ভ্যানে টুঙ্গিপাড়া  ঘুরিয়ে ভাগ্য  খুলে গেল  ইমাম শেখের

নীতিশ চন্দ্র বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ থেকে ॥ ভাগ্যের দুয়ার খুলে গেল ইমাম শেখের, যার সৌভাগ্য হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভ্যানে চড়িয়ে টুঙ্গিপাড়া গ্রাম এলাকা ঘুরে দেখানোর। তার সুব্যবস্থার জন্য রবিবার দুপুরে যশোর বিমানবাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল তাকে টুঙ্গিপাড়া থেকে নিয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, সকালে বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা তার গোপালগঞ্জ শহরের বাসায় আসেন এবং সেখানেই মোঃ ইমাম শেখকে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়। এ সময় সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফা ও ইমামের মামা মোঃ আবদুল কাইয়ূম শেখসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় অবস্থানকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গ্রামবাসীদের অত্যন্ত কাছে চলে যান এবং ইমাম শেখের ভ্যানে চড়ে গ্রাম এলাকা ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি ইমামের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের পরিবার সম্পর্কে জানেন। পরে ভ্যান থেকে নেমে ইমামকে বেশকিছু টাকা দিতে গেলে টাকা না নিয়ে বরং সে যেভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে; তাতে প্রধানমন্ত্রীসহ উপস্থিত সকলেই তার প্রতি মুগ্ধ হয়েছেন এবং প্রশংসাও করেছেন। ইমাম শেখের সততার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে পরে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে তার জন্য একটি সুব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ কারণেই মোঃ ইমাম শেখের জন্য বিমানবাহিনীর এ উদ্যোগ। শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আরও বলেন, শেখ হাসিনার ধমনীতে যে বঙ্গবন্ধুরই রক্ত বইছে এবং বঙ্গবন্ধুর মতো তিনিও যে অসহায় দরিদ্র ও দুখী মানুষের প্রতি ভীষণভাবে দরদী, তা আবারও প্রমাণ হলো। তারই মহানুভবতায় আজ ইমাম শেখের চাকরিসহ অন্যান্য সুব্যবস্থা হতে যাচ্ছে। ভ্যানচালক মোঃ ইমাম শেখ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সন্তান, তিনি আমাদের ‘আপা’। সেদিন তিনি এতগুলো ভ্যানের মধ্য থেকে আমার ভ্যানে চড়ে বসেছিলেন, তাতেই আমি ধন্য হয়ে গেছি। টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নিয়ে আমার জীবন সার্থক হয়েছে। ইমাম শেখ জানায়, তার বাবা মোঃ আবদুল লতিফ শেখ একজন দরিদ্র বৃদ্ধ কৃষক। কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধীও। মা শাহানুর বেগম একজন গৃহিণী। তারা পাঁচ ভাই-বোন। দারিদ্র্যতার কারণে বড় ভাই মোঃ সাদ্দাম শেখ ছোটবেলা থেকেই ভ্যান চালায়। তিন বোনের দুজনের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট বোন নাদিরা চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে। অসচ্ছলতার কারণে সে নিজেও লেখাপড়া করতে পারেনি। পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করে একপর্যায়ে নিজেও ভ্যান চালানো শুরু করে। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মোঃ ইমাম শেখকে নিয়ে বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা টুঙ্গিপাড়া থেকে রওনা হন। এর প্রাক্কালে তারা টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী সরদারপাড়ায় ইমামদের বাড়িতে তার বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন এবং কুশলবিনিময় করেন। তারা বলে গেছেন, ইমামের জন্য যতটুকু সম্ভব তারা সুব্যবস্থা করবেন। ইমাম তাদের কাছে ভাল থাকবে।
×