ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করবিনের বিরুদ্ধে লেবার পার্টির তৃণমূলে বিদ্রোহ

প্রকাশিত: ০৪:০০, ৩০ জানুয়ারি ২০১৭

করবিনের বিরুদ্ধে লেবার পার্টির তৃণমূলে বিদ্রোহ

তৃণমূল পর্যায়ের সমর্থকদের বদৌলতেই ব্রিটেনের লেবার পার্টির নেতা হয়েছিলেন জেরেমি করবিন। কিন্তু আজ সেই তৃণমূল সমর্থকদেরই বড় ধরনের বিদ্রোহ মোকাবেলা করতে হচ্ছে তাকে এবং ব্রেক্সিট নিয়ে দলের সঙ্কট দ্রুত বাড়ছে। খবর গার্ডিয়ানের। করবিনের দলের প্রভাবশালী অনেক সদস্য পদত্যাগের কথা বিবেচনা করছেন। ওয়েলসের ছায়ামন্ত্রী জো স্টিভেন্স শুক্রবার ছায়া মন্ত্রিসভা থেকে প্রথম পদত্যাগ করেন। বিদ্রোহ এখন দলের তৃণমূল পর্যায়ের সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। তৃণমূল সমর্থকরা ব্রেক্সিট থেকে বেরিয়ে আসতে ৫০ অনুচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরুর প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’র পরিকল্পনায় করবিনের সমর্থকরা বেশ ক্ষুব্ধ। শনিবার রাতে লেবার নেতার কড়া সমালোচনা করে একটি খোলা চিঠি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হয়। চিঠিতে সারাদেশ থেকে দলের অন্তত দুই হাজার সদস্য স্বাক্ষর করেন। ধারণা করা হচ্ছে, স্বাক্ষর করা এসব সদস্যের প্রায় অর্ধেকই করবিনকে নেতা বানাতে ভোট দিয়েছিলেন। ‘লেবার এগেইনস্ট ব্রেক্সিট’ নামের একটি গ্রুপের উদ্যোগেই এই চিঠি। এতে অভিযোগ করা হয়, করবিন সমাজতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন এবং এমনই এক নীতির পক্ষে গেছেন যা শ্রমজীবী মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আয়োজকদের একজন জোনাথন প্রক্টর অবজার্ভারকে বলেন, করবিনকে ক্ষমতাহীন করতে তাদের এই পদক্ষেপ নয়। বরং এর উদ্দেশ হচ্ছেÑ লেবার পার্টির নীতি মূল্যবোধের পক্ষে সোচ্চার হওয়া। তিনি বলেন, শুক্রবার এই চিঠি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার পর থেকে দলের সদস্যদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। করবিন তার দলে শীর্ষ পদে যাওয়ার পর এই চিঠি তার বিরুদ্ধে তৃণমূল পর্যায়ে অস্থিরতা ও বিদ্রোহের প্রথম প্রকৃত আলামত। এতে স্পষ্ট হয়, তার সমর্থকরা তার প্রতি এই বিশ্বাস রেখেছিলেন যে, তিনি দলকে আরও গণতান্ত্রিক করবেন। যে দল সত্যিকার অর্থেই লেবার মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে এবং ইইউ সদস্যপদের পক্ষে কথা বলবে। চিঠিতে বলা হয়, ‘আমরা (তৃণমূল সদস্যরা) আমাদের বিশ্বাসে ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু আপনি ও আপনার নেতৃবৃন্দ ব্রেক্সিট নিয়ে দলের নীতি অনুযায়ী ভুল আহ্বান জানিয়েছেন।’ করবিন দলের এমপিদের ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শুরু করতে পার্লামেন্টারি বিলের পক্ষে ভোট দেয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, লেবার এমপিদের ভোটের ক্ষেত্রে অতি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা (থ্রি লাইন হুইপ) মেনে চলতে হবে। এমন নির্দেশনা দেয়ার পর তিনি দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। মঙ্গল বা বুধবার ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শুরু করা নিয়ে হাউস অব কমন্সে বিতর্ক হওয়ার কথা। বেক্সিটের সমর্থনে বিলের পক্ষে ভোট দিতে বলায় হ্যাম্পস্টিড ও কিলবার্ন আসনের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক তার দলের সামনের সারির পদ থেকে সরে দাঁড়ান। করবিনের কাছে লেখা পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের বিষয়টি আমার নির্বাচনী এলাকায় বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে, যেখানে বেশিরভাগ মানুষ বিশ্বাস করে, ইউনিয়ন ছেড়ে আসার বিষয়টি সম্ভাব্য সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি তৈরি করবে।’ পার্লামেন্টের দুই হুইপ টাঙ্গম ডেবোনায়ার ও জেফ স্মিথও বলেছেন, তারা এই বিলের পক্ষে ভোট দেবেন না। ছায়া মন্ত্রিসভার আরেক সদস্য র‌্যাচেল মাস্কেলকে তার সতীর্থরা পদত্যাগ করার কথা বিবেচনা করতে বলেছেন। করবিনের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ক্লাইভ লিউইস বলছেন, তিনিও এই বিলের বিপক্ষে ভোট দেবেন।
×