ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জ্যামাইকার বিশ্বখ্যাত স্প্রিন্টারের দাবি- আইন মানতে হবে সবার

স্বর্ণপদক ফিরিয়ে দিলেন বোল্ট

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২৯ জানুয়ারি ২০১৭

স্বর্ণপদক ফিরিয়ে দিলেন বোল্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টানা তিন অলিম্পিকে দুর্বার ছিলেন। পুরুষদের ১০০ ও ২০০ মিটার স্প্রিন্ট এবং দলগত ৪*১০০ মিটার রিলে ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন সর্বকালের সবচেয়ে গতিধর মানব জ্যামাইকার উসাইন বোল্ট। প্রতিবার এগিয়ে থেকে স্বর্ণ জিতেছেন। বিখ্যাত এ্যাথলেটদের ড্রাগ পাপের কলুষতা কিংবা চরম প্রতিপক্ষ- কোনকিছুই ছুঁতে পারেনি তাকে। ৯টি স্বর্ণপদক জিতে বিশ্বরেকর্ড গড়ার পাশাপাশি হয়ে গেছেন কিংবদন্তি। কিন্তু সতীর্থ নেস্তা কার্টার ছিলেন বিপথগামী, তার পাপেই কালির ছিঁটে লাগল বোল্টের ক্যারিয়ারে। ২০০৮ সালের বেজিং অলিম্পিকে ৪*১০০ মিটার রিলেতে বোল্টের তিন সঙ্গীর মধ্যে ছিলেন নেস্তাও। কিন্তু ওই সময় প্রদান করা রক্তের নমুনা পরীক্ষার পর নেস্তা হয়েছেন পজিটিভ। নিয়ম অনুসারে জ্যামাইকার কাছে দলগত স্বর্ণপদক ফেরত চেয়েছিল আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)। সেই নিয়ম অনুসরণ করে বোল্ট ফিরিয়ে দিলেন তার স্বর্ণপদক। পদক ফিরিয়ে দিতে বেশ হতাশবোধ করেছেন। কিন্তু বোল্ট মনে করেন এতে ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডে তার শ্রেষ্ঠত্বে বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়বে না। বেজিং, লন্ডনের পর রিও ডি জেনিরো অলিম্পিকেও অপ্রতিরোধ্য বোল্ট তিনটি স্বর্ণপদকই জিতেছেন। একটি করে দলগত ৪*১০০ মিটার রিলে এবং বাকি দুটি ১০০ ও ২০০ মিটার স্প্রিন্টে। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বিন্দুমাত্র সমালোচনা ছোঁয়নি বোল্টকে। অথচ অনেক স্প্রিন্টার, ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডে বোল্টের সতীর্থ অনেকেই বিভিন্ন সময়ে ডোপপাপের ছোবলে শাস্তি পেয়েছেন। আর সতীর্থের পাপটাই তার ক্যারিয়ারে একটা কলঙ্কের দাগ এঁকে দিল। বেজিং অলিম্পিক গেমসে অংশ নেয়া এ্যাথলেটদের মধ্যে থেকে নেয়া হয়েছিল রক্তের কয়েক শ’ নমুনা। সেই সময়ে এ্যাথলেটদের দেয়া নমুনা পুনরায় পরীক্ষার পর দেখা গেছে বোল্টের সতীর্থ নেস্তার রক্তে ছিল নিষিদ্ধ পদার্থ মিথাইলহেক্সেনএ্যামিন। রিলেতে এই নেস্তা ছাড়াও আসাফা পাওয়েল ও মাইকেল ফ্রেটার দৌড়েছিলেন বোল্টের সতীর্থ হিসেবে। এ কারণে এবার স্বর্ণপদকটা ছেড়ে দিতে হয়েছে। স্বর্ণপদক ফিরিয়ে দেয়ার সময় বোল্ট বলেন, ‘এটা খুবই হৃদয়বিদারক বিষয়। কারণ বছরের পর বছর ধরে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে স্বর্ণপদকগুলো জড়ো করতে হয়। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য যে শ্রম দিতে হয় সেটা দুঃসহ কষ্টের। কিন্তু খারাপ অনেক কিছুই জীবনে ঘটে। নিয়ম অনুসারে আমার একটা স্বর্ণপদক ফিরিয়ে দিতে হবে, সেটা আমি দিয়ে দিলাম। কারণ নিয়ম তো নিয়মই- সবাইকে এটা পালন করতে হবে।’ আইওসি এক বিবৃতিতে কার্টারের ডোপ টেস্টে পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি জানায়। স্বর্ণপদক হারাতে হলেও আইওসির ডোপের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপগুলোর ভূয়সী প্রশংসা করেন বোল্ট। জ্যামাইকার সান্তা ক্রুজে এক হাইস্কুলের জিমনেসিয়ামের উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি পুরোপুরি খুশি হতে পারছি না সার্বিক পরিস্থিতিতে। পদক ফিরিয়ে দেয়াটা খুবই হতাশার। কিন্তু আইন মানা জরুরী।’ অবশ্য, নেস্তা এবং জ্যামাইকার এ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন আইওসির এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আপীল করতে যাচ্ছে। ক্যারিয়ারের একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছেন বোল্ট। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ক্যারিয়ারজুড়ে যা করেছি সেটা কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। কারণ আমি ব্যক্তিগত ইভেন্টগুলোতে ভালভাবে জিতেছি এবং এটাই মূল বিষয়।
×