মাতৃসদন থেকে চুরি হওয়া শিশু এক সপ্তাহ পর উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ নগরের নওদাপাড়া মাতৃসদন (আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার) থেকে এক সপ্তাহ আগে চুরি যাওয়া সেই নবজাতককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে নগরীর টিকাপাড়া বাসার রোড এলাকার একটি বাড়ি থেকে এ নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। এ সময় নবজাতক চুরির দায়ে এক চিকিৎসককের স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে বলে জানান নগরীর শাহ মখদুম থানার ওসি জিল্লুর রহমান। আটক নারীর নাম শাহীন আক্তার সুভ্রা। তিনি চিকিৎসক আক্তারুজ্জামানের স্ত্রী। ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় তারা ভাড়া থাকেন। ওসি জিল্লুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর টিকাপাড়া বাসার রোডের আমিরুল হকের ‘সপ্তষি’ নামের ৫০৭ নম্বর বাড়িটি ঘিরে তল্লাশি চালানো হয়। পুলিশের নারী সদস্যরা ওই বাড়িতে তাল্লাশি চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে। এ সময় নবজাতক চুরির সঙ্গে জড়িত শাহীন আক্তার সুভ্রাকে আটক করা হয়। সে নিজেই ওই নবজাতককে চুরি করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে নবজাতকটি তার বাড়িতেই ছিল বলে জানান ওসি জিল্লুর রহমান। গত ১৯ জানুয়ারি বিকেলে নগরের নওদাপাড়া আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ারে ছেলে সন্তান জন্ম দেন রাজশাহীর পবা উপজেলার চরশ্যামপুর এলাকার দিনমজুর নাসির উদ্দিনের স্ত্রী মুক্তি খাতুন। এরপর ওইদিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে এক নারী নিজেকে খালা পরিচয় দিয়ে নবজাতককে চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পুলিশ তোহুরা খাতুন নামের আরবান হেলথ কেয়ারের এক মাঠ কর্মীকে আটক করে। তাকে রিমান্ডে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তবে তার কাছ থেকে কোন তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি। পরে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে এক নারীকে শনাক্ত করে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত গোপানে সংবাদ পেয়ে পুলিশ হানা দিয়ে ওই শিশুকে উদ্ধার করে একই সঙ্গে চুরির অভিযোগে শাহীন আক্তার সুভ্রা নামের ওই নারীকে আটক করে। নবজাতকটি চুরি করার আগের দিন নগরীর বিনোদপুর এলাকার একটি সিসিটিভির ফুটেজের ছবির সঙ্গে হুবুহু মিল রয়েছে তার। এছাড়াও মিল রয়েছে তার ভ্যানেটি ব্যাগ, হাত ঘড়িসহ পোশাকেরও। পুলিশ ধারণা করছে, ওই নারীই নগরীর নওদাপাড়া আরবান হেলথ কেয়ার থেকে চুরি হওয়া নবজাতকটি চুরি করে নিয়ে এসেছেন। তিনি নবজাতকটিকে নিজের বলে লালন-পালন করছিলেন। বাড়ির মালিক আমিনুল ইসলাম বলেন, শুভ্রা তার বাড়িতে দেড় বছর ধরে ভাড়া থাকেন। তিনি রাজশাহীর একটি বেসরকারী ইউনির্ভাসিটির শিক্ষক। তার স্বামী বাঘায় ডাক্তারি পেশায় কর্মরত। আর শুভ্রার ক্লাস কেজিতে পড়া অহনা নামের একটি মেয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, শুভ্রা গর্ভবতি ছিলেন বলে আগেই দাবি করেছিলেন। গত ১৯ বা ২০ তারিখে রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে তার একটি ছেলে সন্তান হয় বলেও তিনি আমাদের জানান। পুলিশের মতিহার থানা জোনের এসি শুশান্ত কুমার রায় জানায়, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যাকে আটক করা হয়েছে, তিনি ক্লিনিক থেকে শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে এসেছেন। শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।