ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হয়রানির শিকার ঋণগ্রহীতা

ঘুষ না দেয়ায় তিন বছরেও পৌঁছেনি প্রত্যয়নপত্র

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৮ জানুয়ারি ২০১৭

ঘুষ না দেয়ায় তিন বছরেও পৌঁছেনি প্রত্যয়নপত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ২৭ জানুয়ারি ॥ আমতলী অগ্রণী ব্যাংক থেকে আবদুল মান্নান ঋণ নিয়েছিল। ওই ঋণের জামিনদার ছিলেন শ্বশুর শাহ আলম। ঋণ খেলাপীর কারণে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বরগুনা অর্থঋণ আদালতে ঋণ গৃহীতা ও জামিনদারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। আদালতের নোটিস পেয়ে আবদুল মন্নান ব্যাংকে সুদসহ সমুদয় টাকা পরিশোধ করেন। পরিশোধিত প্রত্যয়নপত্র ব্যাংক থেকে আদালতে তিন বছরেও পৌঁছেনি। এ কারণে ঋণ গৃহীতা ও জামিনদারের বিরুদ্ধে আদালত থেকে ওয়ারেন্ট জারি করা হয়। পুলিশ ঋণ গৃহীতা আবদুল মন্নানকে বুধবার গ্রেফতার করে। অবশেষে তিন বছর পরে গত ২৫ জানুয়ারি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রত্যয়নপত্র বরগুনা অর্থঋণ আদালতে পাঠালে বিচারক নুরুল আলম মোহাম্মদ নিপু (যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত) বৃহস্পতিবার জামিন মঞ্জুর করেছেন। জানা গেছে, আমতলী অগ্রণী ব্যাংক থেকে আবদুল মন্নান ২০০৫ সালে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেয়। ওই ঋণের কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ না করায় ওই সময়ের ব্যাংক ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে বরগুনা অর্থঋণ আদালতে ২০১০ সালে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার প্রেক্ষিতে আদালত থেকে নোটিস পেয়ে ২৭ জুন ২০১৩ সালে সুদসহ সমুদয় টাকা ব্যাংকে পরিশোধ করেন। আবদুল মন্নান অভিযোগ করেন টাকা পরিশোধের পরে বহুবার অগ্রণী ব্যাংকে গিয়ে ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফার কাছে ঋণ পরিশোধের প্রত্যয়নপত্র চাইলে তিনি ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। তার (গোলাম মোস্তফা) দাবিকৃত টাকা পরিশোধ না করায় তিনি প্রত্যয়নপত্র দেয়নি এবং আদালতে পাঠানোর কথা বলে পাঠায়নি। এদিকে ওই প্রত্যয়নপত্র আদালতে না পৌঁছার কারণে ঋণ গৃহীতা আবদুল মন্নান ও জামিনদার শাহ আলমের বিরুদ্ধে ২৯ জুন ২০১৪ সালে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পুলিশ বুধবার আবদুল মন্নানকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার পুলিশ তাকে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেন। আদালতের বিচারক বৈজয়ন্ত বিশ্বাস তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। পরে ওইদিনই (২৬ জানুয়ারি) আদালতে অগ্রণী ব্যাংক আমতলী শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ এনায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত অর্থঋণ মামলা থেকে দায়মুক্তি প্রত্যয়নপত্র বরগুনা অর্থঋণ আদালতে জমা দেয়। বরগুনা যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতের বিচারক নুরুল আলম মোহম্মদ নিপু প্রত্যয়ন পেয়ে আসামিদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন। অভিযুক্ত সাবেক অগ্রণী ব্যাংক ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা মুঠোফোনে বলেন, আমার কাছে কেউ প্রত্যয়ন নিতে আসেনি। অতএব প্রত্যয়নপত্র দেয়ার প্রশ্নই আসে না। তবে কেন তিন বছরেও আদালতে প্রত্যয়নপত্র পৌঁছেনি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ প্রত্যয়নপত্র আসামিদের নিয়ে জমা দেয়ার কথা, আমার না।
×