ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাইকেলের লাইফ জার্নি নাটকে উঠে এসেছে ॥ অনন্ত হিরা

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২৮ জানুয়ারি ২০১৭

মাইকেলের লাইফ জার্নি নাটকে উঠে এসেছে  ॥ অনন্ত হিরা

অভিনয়শিল্পী অনন্ত হিরা। নাট্যাভিনেতা, নাট্যকার, নাট্যনির্দেশক। প্রাঙ্গণে মোর নাট্যদলের কর্ণধার। দীর্ঘদিন ধরে নিজের অভিনয়শৈলী ও নির্দেশনায় দেশের থিয়েটার অঙ্গন আলোতিক করে চলেছেন। দেশে এই প্রথমবারের মতো দলটির প্রযোজনায় মঞ্চে এসেছে মাইকেল মধুসূদন দত্তকে নিয়ে নাটক ‘দাঁড়াও...জন্ম যদি তব বঙ্গে।’ নাটকটি নির্দেশনার পাশাপাশি মাইকেলের ভূমিকায় অভিনয়ও করছেন গুণী এই অভিনেতা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়। নাটক নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়। মাইকেল মধুসূদনকে নিয়ে নাটক কেন? অনন্ত হিরা : বাংলা ভাষার প্রথম নাটক ‘শর্মিষ্ঠা’ রচনা, ‘রতœাবলী’ নাটক অনুবাদ, প্রহসন রচনার কৃতিত্ব, ট্র্যাজেডি নাটক রচনা, অমিত্রাক্ষর ছন্দে মহাকাব্য রচনা, বাংলা ভাষার বই উৎসর্গ করা রীতি, পত্রকাব্য রচনা এবং প্রথম সনেট অথবা চতুর্দশপদী কবিতার রচয়িতা যিনি তাকে নিয়ে এ নাট্য প্রযোজনা ও দর্শন বাংলা নাটকের যে কোন প্রয়োগ কর্তার দায়। বাংলা নাটকে এত বড় অবদান যার, একজন নাট্যকর্মী হিসেবে তার প্রতি এক প্রকার দায় শোধ করার কিঞ্চিত প্রয়াস এটি। পুরোটা তো করা যাবে না, এটা একটা প্রণতি। নাটকটি মঞ্চে আনার প্রথম দিকের কথা বলুন... অনন্ত হিরা : মাইকেলকে নিয়ে বাংলা ও বিভিন্ন ভাষায় অনেক লেখা এবং নাটক হয়েছে, এখনও হচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে হয়নি। তাকে নিয়ে যাত্রা করেছিলেন অমলেন্দু বিশ্বাস। গ্রামের সাধারণ মানুষদের এ যাত্রা দিয়ে মাতিয়েছেন তিনি। নাটকের ক্ষেত্রে এটি একটি নাচাষ জমি ছিল। সেখানে অপূর্ব কুমার কু-ু যখন মাইকেলকে নিয়ে তার রচিত নাটকটি আমাকে দিল, নাটকটির গ্রহণযোগ্যতা মনে করলাম। এতে বাহুল্য ছিল, আবার খুঁজে নেয়ার অমূল্য সম্পদও ছিল প্রচুর। গত বছরের অক্টোবর থেকে এ নাটকের কাজ শুরু করি। দলের প্রযোজনায় গত বছর তিনটি নাটক মঞ্চে এনেছি। চেষ্টা করেছিলাম বছরের শেষের দিকে এ নাটকটিও আনব কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় আনতে পারিনি। অবশেষে নাটকটি মঞ্চে আনা গেল। নাটকে মাইকেলের কোন্ বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে? অনন্ত হিরা : মাইকেল যখন ভারতের আলীপুর দাতব্য হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায়। মারা যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে তার জীবনে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও স্মৃতি তুলে ধরা হয়েছে। খৃষ্টান ধর্ম গ্রহণের ফলে তার বাবা তাকে ত্যাজ্যপূত্র করে। অভিমানে মাইকেল মাদ্রাজে চলে যায়। মা মারা গেলে তাকে মায়ের মুখও দেখতে দেয়া হয়নি। তার জীবনের বিভিন্ন সঙ্কটে বিদ্যাসাগর ছায়ার মতো এসে দাঁড়ায়। প্রথম প্রেম হেন্ড্রিয়েটার ভূমিকাও তুলে ধরা হয়েছে। মোট কথা সে তার পুরো জীবনটাকে রিকভারি করেছে। মাইকেলের লাইফের জার্নিটা উঠে এসেছে এ নাটকে। বলা যায় নতুন এই নাটকে মাইকেলের জীবনস্মৃতি তুলে ধরা হয়েছে। নাটকটি মঞ্চোপযোগী করতে যাদের সহযোগিতা পেয়েছেন? অনন্ত হিরা : নাটকটি রচনা করেছেন অপূর্ব কুমার কু-ু, মঞ্চ ও পোশাক পরিকল্পনা করেছেন নুনা আফরোজ, সঙ্গীত পরিকল্পনা করেছেন রামিজ রাজু এবং আলোক পরিকল্পনা করেছেন আহমেদ সুজন। আমি ছাড়া আর যারা অভিনয়ে রয়েছে তারা হলেন-রামিজ রাজু, শুভেচ্ছা রহমান ও আল-আভী জাহান তুসি। নাটকের সবগুলো উইক অনেক ব্যয়বহুল হয়েছে। ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত রূপসজ্জা শিল্পী পদ্মশ্রী মোহাম্মদ আলী করেছেন মাইকেলসহ অন্যান্য চরিত্রের মেকাপ। যার কাছে যা চেয়েছি পেয়েছি তার অধিক। -গৌতম পাণ্ডে
×