উত্তর মেরুতে গত বছর তাপমাত্রা ছিল রেকর্ড পরিমাণ। অস্বাভাবিক উষ্ণ বাতাসে সেখানে ব্যাপক পরিমাণ বরফ গলে গেছে এবং গলে পড়েছে বিলম্ব শরতের তুষার। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারী বিজ্ঞানীরা এ কথা বলেছেন। খবর এএপপির।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক এ্যান্ড এ্যাটমোসফিয়ারিক এ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ) ইস্যুকৃত বিশ্বের ৬১ জন বিজ্ঞানীর এক মিলিত পর্যালোচিত দলিল আর্কটিক রিপোর্ট কার্ড, ২০১৬-এ ওই ভয়ানক মূল্য নিরূপণ করা হয়। এনওএএ’র রিপোর্টটিতে অক্টোবর ২০১৫ থেকে সেপ্টেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত সময়ের পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, সুমেরুতে বার্ষিক বাতাসের গড় তাপমাত্রা ছিল অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে উচ্চে। এনওএএ’র আর্কটিক রিসার্চ প্রোগ্রামের পরিচালক জেরেমি ম্যাথিস সানফ্রান্সিসকোয় অনুষ্ঠিত আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়নের সম্মেলনে বলেন, রিপোর্টে ১৯০০ সাল থেকে অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে এ বছরের রিপোর্ট কার্ডে উষ্ণতার ওপর সতর্কতার আভাস দেয়া হয়েছে স্পষ্ট করে। বলা হয়েছে, সুমেরুতে ওই উষ্ণতার প্রভাব পরিবেশের মাধ্যমে খাড়াভাবে পতিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা এই বার্ষিক রিপোর্ট কার্ড তৈরি শুরুর পর থেকে পরিবেশের ক্রমেই অবনতি ঘটছে। এ ধরনের পরিস্থিতি চলছে ১১ বছর ধরে। রিপোর্টের সহযোগী ডোনাল্ড পেরোভিক বলেছেন, পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট তৈরি যখন শুরু হয়, সুমেরু তখন পরিবর্তনের আভাস দিতে শুরু করেছে। নিউ হ্যাম্পশায়ারে ডার্টমাউথ কলেজের থ্যায়ার স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কর্মরত পেরোভিক বলেন, সুমেরু এখন আর সে অবস্থায় নেই। এখানে পরিবর্তন ঘটছে এবং তা স্পষ্টই। জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলেছেন, তাপ বেড়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার, যা থেকে গ্যাস নির্গত হয়ে পরিবেশকে উষ্ণ করে তুলছে এবং দক্ষিণ দিক থেকে প্রবাহিত বাতাস যা গরম বাতাসকে ঠেলে দিচ্ছে উত্তর দিকের মধ্য-অক্ষাংশ রেখাগুলোর দিকে। রিপোর্টে বলা হয়, সুমেরুর স্থলে বাৎসরিক বাতাসের তাপমাত্রা ১৯৩০ সালের চেয়ে ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রী ফারেনহাইট (৩ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস) বেশি। ২০১৬ সালের আগস্টে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রী ফারেনহাইটে (পাঁচ ডিগ্রী সেলসিয়াম) পৌঁছে। এ তাপমাত্রা ব্যারেন্টস ও চুকচি সাগরে এবং গ্রীনল্যান্ডের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলের অদূরে ১৯৮২ থেকে ২০১০ সালের গড় উষ্ণতার চেয়ে বেশি।