ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নাজনীন বেগম

তারাশঙ্করের গল্পের তিন নারী

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২৭ জানুয়ারি ২০১৭

তারাশঙ্করের গল্পের তিন নারী

উনিশ শতকজুড়ে নতুন জোয়ারের যে স্রোত অবিভক্ত বাংলাকে প্লাবিত করে তার কীর্তিমান প্রথম পুরুষ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। আরও একজনের নাম এই নবজোয়ারের পথিকৃৎ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে তিনি রাজা রামমোহন রায়। আর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন এই সুবর্ণ সময়ের বলিষ্ঠ পথিক। গতানুগতিক, রক্ষণশীল সামাজিক অব্যবস্থাকে দৃঢ়চিত্ত এবং জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করে নতুন সম্ভাবনা তৈরিতে আরও অনেক প্রাণপুরুষের অবদান চিরস্মরণীয়। সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবক্তা মাইকেল মধুসূদন দত্ত যুুগস্রষ্টা সাহিত্যিক মীর মোশাররফ হোসেনসহ অনেকে। এরপর আবির্ভূত হন নতুন সময়ের আর এক স্থপতি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যার সৃষ্টিশীল সাম্রাজ্যে উনিশ শতকের শেষ তিন দশক এবং বিশ শতকের প্রথম চার দশক নিরবচ্ছিন্ন এবং স্বমহিমায় চালকের আসনে রাজত্ব চালায়। ঊনবিংশ শতাব্দীর ক্রান্তিলগ্নে সারা বাংলা যখন নতুন কিরণে আলোকিত সেই যুগ সন্ধিক্ষণে জন্মগ্রহণ করেন আরও অনেক বিশিষ্ট গুণীজন। ১৮৯৮ সালে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সাহিত্যিক জন্ম নেয়া বিংশ শতাব্দীর জন্য এক বিশিষ্ট মাইলফলক। ১৮৯৯ সালে ভিন্নমাত্রার কাব্য প্রতিভার দুই দিকপাল কাজী নজরুল ইসলাম এবং জীবনানন্দের জন্ম ও বিশ শতকের অগ্নিঝরা কালপর্বকে নানাভাবে উদ্দীপ্ত করে। আর এসব সময়োপযোগী এবং যুগের প্রয়োজনে এগিয়ে যাওয়া মানুষের কাতারে অনিবার্যভাবে যুক্ত হয় নারী চেতনার নতুন অধ্যায়। সমাজের অর্ধেক এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশকে এগিয়ে যাওয়ার কাতারে শামিল করতে নবজাগরণের সিদ্ধ পুরুষরাই যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেন। সঙ্গতকারণেই সৃজনশীল তারও অনিবার্যভাবে এসে যায় নারীর অবস্থান এবং জোরালো আবেদন। সমাজের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে নারীর সরাসরি অংশগ্রহণকে প্রয়োজনীয় শর্ত হিসেবে ভাবা হয়। শিক্ষা থেকে আরম্ভ করে সব ধরনের অধিকার, স্বাধীনতা, সম্মান এবং মর্যাদাকে নারীর সার্বিক অগ্রযাত্রার সূচক হিসেবে সামনে চলে আসে। এর যুগান্তকারী ছাপ পড়ে বিশিষ্টজনের মননশীল ভাবনা এবং সৃষ্টিশীল দ্যোতনায়। আর তারাশঙ্কর ছিলেন সেই সময়ের একজন অনন্য স্রষ্টা। সমকালীন সমাজের কঠিন-কঠোর প্রথা এবং বিধি শৃঙ্খলের আওতায় নারী অবস্থান যে কত বিপন্ন, ভাগ্যহত এবং অসহায় ছিল তার বিভিন্ন উপন্যাস এবং ছোটগল্পের অসংখ্য নারী চরিত্রে তা দীপ্ত হয়ে আছে। ক্ষুদ্র এবং সঙ্কীর্ণ গ্রাম থেকে বৃহত্তর এবং আধুনিক শহরাঞ্চল পর্যন্ত নারীদের চলার পথ যে কোন ভাবেই মসৃণ ছিল না তা বিংশ শতাব্দীর এই খ্যাতিমান সাহিত্যিকের লেখায় স্পষ্ট এবং মূর্ত হয়। তারাশঙ্করের রচিত বিখ্যাত তিনটি গল্প ‘সন্ধ্যামণি’, ‘ডাইনীর বাঁশী’ এবং ‘জলসাঘর’ এর নারী চরিত্র রূপায়ণ তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থারই এক বাস্তবোচিত রূঢ় চিত্র। ‘সন্ধ্যামণি’ গল্পটি খুব সাধারণ একটি কাহিনী নিয়ে রচিত। লেখকের নান্দনিক চেতনা এবং শৈল্পিক সুষমায় এই আট পৌরে গল্পটির যে গতি নির্ণীত হয় তা যেমন অসাধারণ একইভাবে বাস্তবতার এক নির্মম আখ্যান। আধ্যাত্মবাদের দেশ বলে খ্যাত অবিভক্ত ভারতের ধর্মীয় ভাবানুভূতির যে আত্মিক বৈভব তা গল্পের সূচনায় ভিন্নমাত্রা যোগ করে। গঙ্গাতীরবর্তী এক স্নানাঘাট যেখানে অসংখ্য পুণার্থীর উপচেপড়া ভিড়ে চারপাশ কাণায় কাণায় পূর্ণ। ভোর থেকে শুরু হয় তীর্থযাত্রীদের এই সমাবেশ। তার রেশ চলতে থাকে মধ্যগগণ পর্যন্ত। গ্রামবাংলার চিরায়ত কিছু ঐতিহ্যিক নিদর্শন পরিবেশটিকে আরও মহিমান্বিত করে লেখকের জবানীতেÑ ‘সড়কটির দুই পাশে ঘাটের ঠিক উপরেই ছোট্ট একটি বাজার। বাজার মানে খানকুড়ি-বাইশ দোকান খানকয় মিষ্টির, দুখানা মুদির, ছয় সাত খান কুমারের মনিহারী, পান বিড়ি তো আছেই। ঘাটের একেবারে উপরে জনাদুই গঙ্গাফল কলা ও ডাব বিক্রি করে।’ আরও আছে শবদেহ সৎকারের শ্মশানঘাট। অন্তিম যাত্রার বিষণœ আবহ পুরো পরিবেশকে ভারি করে তোলে। লেখকের সৃষ্টির অভিনব কৌশলে ঘাট সংলগ্ন পুরো জায়গাটিতে পাঠকের দৃষ্টি নিবন্ধ করে। ঘটনাক্রমে এসে যোগ হয় গল্পটির আকর্ষণীয় এবং কেন্দ্রীয় চরিত্র কুসুমের উপস্থিত। নারীরা প্রচলিত সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন কোন অংশ নয়। সমাজের চাহিদায় নারীদের সংসার জীবন আবর্তিত হয়। পুরো গল্পটিতে আধুনিকতার কোন ছোঁয়া নাই তাই পল্লী মায়ের স্নিগ্ধ ছায়ায় লালিত শান্ত আর মাধুরীর যুগল সম্মিলনে গড়ে ওঠা এক রূপময় মূর্তির আঁধার কুসুম। সহায় সম্বলহীন কুসুম মাদুর বুনে তার জীবন চালায়। বয়স অল্প, সুশ্রী কিন্তু ভাগ্যবিড়ম্বিত। গ্রামবাংলায় দীর্ঘদিন চলে আসা সামাজিক অভিশাপ বাল্যবিয়ের প্রকোপে পড়া অসহায় কুসুমের আপন বলতে কেউ নেই। স্বামী গৃহছাড়া, কন্যা সন্তানটি অকালেই মারা যায় আর মা-বাবা গত হয় তারও আগে। এমন নিঃসঙ্গ এবং দীনহীন অবস্থায় সমাজে বেঁচে থাকা যে কত কষ্টকর কুসুমের চরিত্রে তা স্পষ্টভাবেই ফুটে ওঠে। মাঝে মধ্যে প্রবল ঝড়ো হাওয়ার মতো স্বামীর উপস্থিতি টের পায় আবার স্বামী যে কোথায় হারিয়ে যায় তা অবোধ কুসুমের পক্ষে জানা-বোঝা সত্যিই দুঃসাধ্য। নানা টানাপোড়েনের দুর্বিপাকে পড়া কুসুমের জীবন সংগ্রাম গ্রামবাংলার অসহায় নারীদের দুঃসহ অভিঘাতের এক হৃদয়বিদারক অনুভব। সন্তানহীন, ছন্নছাড়া স্বামীর কাছ থেকে প্রায়ই বিচ্ছিন্ন কুসুমের জীবনতরী পিছিয়ে পড়া অবহেলিত নারী সমাজের এক যন্ত্রণাদায়ক কষ্টের নির্মম পরিণতি। নদীমাতৃক বাংলার স্রোতস্বিনীর অববাহিকায় নদীই যে জীবনের প্রাণশক্তি এবং অপার সম্ভাবনা তাও লেখকের নির্মোহ আবেগে পাঠক সমাজ আলোড়িত হয়। ‘ডাইনীর বাঁশি’ গল্পটিও নিম্নবর্ণ আর বিত্তের জাঁতাকলে পিষ্ট এক বিপন্ন মেয়ের করুণ জীবনালেখ্য, গল্পটির মূল চরিত্র স্বর্ণও বাল্যবিবাহের আবর্তে অকাল বৈধব্যের মতো দুঃখজনক পরিস্থিতির শিকার হয়। পিতৃ-মাতৃহীন স্বর্ণের জীবন চলে সবজি বিক্রি করে। মৌসুমী সবজির নানা বৈচিত্র্য তার প্রতিদিনের পেশাতেও ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। পিছিয়ে পড়া সমাজ ব্যবস্থায় অবহেলিত মেয়ে স্বর্ণ জীবনের তীব্র অভিঘাতে পীড়িত এক স্নেহময়ী নারীর অনুপম রূপমাধুর্য। মায়া, মমতা আর ভালবাসায় নারী সৌন্দর্যের যে মহিমা যা তার আর্থিক দীনতাকে ছাপিয়ে যায় তা যেমন অনন্য একইভাবে শৈল্পিক সুষমায় সমৃদ্ধ। পৈত্রিক পেশা সবজি বিক্রিকে সম্বল করে স্বর্ণের দিন কাটে। নিম্নবিত্ত আর অসহায় মেয়েদের যে বিড়ম্বনার সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হয় তা স্বর্ণের এক কষ্টদায়ক অনুভূতিতে প্রকাশ পায়। ‘আমার আবার মানমর্যাদা। ভগবানই যার মান রাখলেন না, তার মান কি মানুষে রাখতে পারে?Ñ না রাখতে গেলে থাকে? পাঁচ বছরে যার মা যায়, এগারো বছরে যে বিধবা হয়, আটারো বছরে যার বাপ মরে,Ñ তার আবার মর্যাদা?’ গল্পজুড়ে নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে এসবই স্বর্ণের প্রতিদিনের জীবনের এক অনিবার্য নিয়মবিধি। অবহেলা, উপেক্ষা, কটাক্ষ এবং উপহাসকে সঙ্গে নিয়ে জীবন সংগ্রামের বৈতরণী পার হওয়া স্বর্ণ লেখকের এক অনিবার্য দীপ্তি। যা আপন বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল হয়, লেখকের শৈল্পিক সত্তায় গতি পায় সর্বোপরি সমকালীন সমাজ ব্যবস্থার প্রতিনিধিত্বশীল অবয়বের এক অপূর্ব নির্মাণ শৈরীর রূপ নেয় ৫ বছরের শিশু সন্তান টুকুর প্রতি যে অভাবনীয় মায়ায় স্বর্ণ জড়িয়ে পড়ে তাও নারীর স্নেহাতিশর্যের এক নির্মল আঁধার। নিঃসন্তান স্বর্ণ মাতৃস্নেহ ধারায় টুকুকে নিবিড় মমতায় আঁকড়ে ধরে যা মাতৃমহিমার এক অপূর্ব দীপ্তি। এলাকাজুড়ে সহায়-সম্বলহীন নারীর বিরুদ্ধে যে বৈরী প্রতিবেশ তাও বিদ্যমান সমাজেরই এক বিদগ্ধ চিত্র। লেখকের ব্যক্তিগত বোধ যেমন তার শিল্প সত্তাকে তাড়িত করে একইভাবে সামাজিক অব্যবস্থা ও তার সৃষ্টিশীলতাকে জাগিয়ে তোলে। আর তাই যে কোন সাহিত্যিকের সৃষ্ট চরিত্র তার সময়েরই এক বিপর্যস্ত রূপ যাকে ছাড়িয়ে যাওয়া আসলে দুঃসাধ্য। ‘জলসাঘর’ ছোটগল্পের চরিত্রগুলো ভিন্নমাত্রার অন্য ধাঁচের। এখানে আর্থিক ও বর্ণাশ্রমের নির্মম যাতনা নেই, গল্পটির অংশজুড়ে আছে বংশাভিমান, ঐতিহ্যিক ঐশ্বর্যের সর্বশেষ অংশের জৌলুস সর্বোপরি জমিদার বাড়ির জলসাঘরে গাইয়ে-নাচিয়েদের আনাগোনায় উৎসব মুখরিত ঝঙ্কার। ফলে নারী চরিত্রেও আসে ব্যতিক্রম আবহ। ধনাঢ্য পরিবারের বংশানুক্রমিক বৈভবে হাতীশালে হাতী, ঘোড়াশালে ঘোড়া এসবের চমক যেমন আছে পাশাপাশি নটীনর্তকীদের আলোকিত আসরে নূপুরের চমকপ্রদ শব্দে পুরো পরিবেশ নিমগ্ন হওয়ার আবেশ ও সবাইকে আচ্ছন্ন করে রাখে। জমিদারি বৈভবের এই এক অবিচ্ছেদ্য সংযোজন। সবকিছুর ওপর যেন এক মায়াঘন, আবেগময় প্রলেপ যা আসর কিংবা উৎসবের মন মাতানো অপরিহার্য অলঙ্কার। এদেশে জমিদারি ব্যবস্থার এক আবশ্যিক আয়োজন। এখানেও গঙ্গানদীর রূপময় জলরাশির অনুপম বর্ণনা পাঠককে মনে করিয়ে দেয় নদীই এদেশের শক্তি আর সম্পদ। নিরন্তর গতি পাওয়া গল্পের ঘটনা পরম্পরা নির্দেশ করে পুরুষানুক্রিমক চলে আসা জমিদার বাড়ির ক্ষয়িষ্ণু ঐশ্বর্যের সর্বশেষটুকু নব্য ধনিকদের আধুনিক সাড়ম্বরতা অনিবার্যভাবে নতুন-পুরনোর সংঘর্ষের আবর্তে পড়ে। আর এই অভিঘাতে পারস্পরিক পাল্লা দেয়ার মনোবৃত্তিও নতুন উদ্যমে জেগে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় গল্পের মূল বার্তা সুসংবদ্ধ হয়, গতি পায় এবং পরিণতির দিকে এগিয়ে যায়। কেন্দ্রীয় নারী বলতে দুই নর্তকী পিয়ারী এবং কৃষ্ণাবাঈ। কর্তা মহাশয়ের মনোরঞ্জন করাই যাদের অন্যতম দায়িত্ব। নাচ-গানের অমৃতময় সুর ধারায় উপস্থিত সমঝদারদের মাতিয়ে রাখতে এসব পেশাদার শিল্পীদের বিশেষ দৃষ্টি থাকে। কাহিনীকারও সেভাবে কৃষ্ণাবাঈ ও পিয়ারীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অলঙ্করণ করেছেন। এক জলসাঘর থেকে অন্য বিলাসভবনে এদের গতিবিধি অবাধ এবং নিরপেক্ষ। অবস্থা এবং পরিস্থিতি অনুধাবন করেই এসব নটী কর্তা মহাশয়কে তাদের প্রতি আকৃষ্ট করে, পরিবেশকে অভিনব কায়দায় রাঙিয়ে তোলে সর্বোপরি পুরো আয়োজনটি জমজমাট করে দেয়। এ ধরনের নারীও সমাজের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। অভিজাত এবং বিত্তবান শ্রেণীর সাময়িক আনন্দের খোরাক জোটাতে জমিদার বাড়ির জলসাঘরে এদের সঙ্গীতের মূর্ছনায় বার্তা মহাশয়রা মাতোয়ারা হয়ে যায়। জগত সংসার ভুলে যায়। এক আবেগতাড়িত উন্মাদনায় কর্তাব্যক্তিরা আপ্লুত হয়। নারী চরিত্রের ভিন্নমাত্রার স্খলন। সমাজের প্রয়োজনে এ ধরনের সামাজিক আবেদন ও বিদ্যমান ব্যবস্থাকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। তারাশঙ্কর বিংশ শতাব্দীর একজন খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক। তার গল্প উপন্যাস এবং প্রবন্ধের বিচিত্র অঙ্গনে নারী সমাজের একটি বিশেষ স্থান তৈরি হয়। সময়ের দাবিতে, যুগের প্রয়োজনে নারীরা নিজেদের জায়গা করে নিলেও বৃহত্তর সমাজ ব্যবস্থায় তা ছিল অপ্রতুল। সেই সময়ে সিংহভাগ নারী সব অধিকার নিয়ে শক্ত আসনে নিজেকে বসাতে পারেনি। লেখক তারই পরিচ্ছন্ন ছবি তার নির্মিত চরিত্রগুলোতে স্পষ্ট করতে চেয়েছেন।
×