ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাষ্ট্রপতি যোগ্যদের সার্চ কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২৭ জানুয়ারি ২০১৭

রাষ্ট্রপতি যোগ্যদের সার্চ কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর ও নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মহাকবি মধুসূদন পদক ২০১৭ ভূষিত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামকে সার্চ কমিটির সদস্য করায় রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তার মতো একজন অরাজনৈতিক ও যোগ্য ব্যক্তিকে সার্চ কমিটির ছয়জনের একজন করেছেন রাষ্ট্রপতি, এটি অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার বিষয়। ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার দুপুরে কেশবপুরের সাগরদাঁড়িতে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৩তম জন্মবার্ষিকীতে আয়োজিত মধুমেলার ষষ্ঠ ও সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। সেতুমন্ত্রী বলেন, অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামের কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই, তিনি কখনই আওয়ামী লীগ করেননি। তেমন একজন গুণী মানুষের সার্চ কমিটিতে উপস্থিতির বিষয়টি যারা প্রশ্নবিদ্ধ করছেন তাদের ব্যাপারটা আমাদের ভাবতে হবে। অতীতে ক্ষমতায় থাকাকালে তারা সাংবিধানিক নানা পদে দলীয় লোক বসিয়েছিলেন বলে এখন সার্চ কমিটির সদস্যদের নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। সমাপনী দিনে মন্ত্রী মহাকবি মধুসূদন পদক ২০১৭ প্রাপ্ত দেশের অন্যতম প্রধান কবি নির্মলেন্দু গুণের হাতে এবং আরেক পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজীর অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামের পদক ও সম্মাননাটি অপর কবি মারুফুল ইসলামের হাতে তুলে দেন। মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মধুমেলার সাজসজ্জা বিষয়ে আয়োজকদের উদ্দেশে বলেন, আমি আগেও মধুমেলায় এসেছি। কিন্তু সাজসজ্জায় আওয়ামী লীগের নেতা, মন্ত্রীদের ছবি ও দলীয় সেøাগানের প্রকট উপস্থিতি লক্ষ্য করিনি। এখানে থাকবে মধুমেলার বিষয়, মহাকবি মধুসূদনের ছবি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সাজসজ্জা আর সেøাগান শুনে মনে হচ্ছে, এটি আওয়ামী লীগের সমাবেশ, মহাকবির বিষয়টি এখানে ক্ষীণ হয়ে গেছে। আগামীতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে আয়োজকদের নজর রাখতে বলেন মন্ত্রী। মন্ত্রী সমাপনী অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় অন্য বক্তাদের উদ্দেশে বলেন, এ মঞ্চ মধুসূদনের বিষয়ে কথা বলার জন্য। রাস্তাঘাটের বিষয়ে দাবি করার জন্য নয়। এখানে মধুকবির বিষয়ে আলোচনা করলে কেউ হাততালি দেয় না, কিন্তু রাস্তাঘাটের কথা বললে হাততালি দেয়া হয়। এটি ঠিক নয়। তিনি বলেন, দেশের রাস্তাঘাটের সব তথ্য আমার কাছে আছে, সংস্কার করার মতো রাস্তা থাকলে তা সংস্কার করা হবে। তার জন্য মধুমেলায় দাবি জানানোর কোন মানে নেই। তিনি মহাকবি মাইকেল মধুসূদনের কাব্য প্রতিভা, দেশপ্রেম এবং বাংলা ভাষার প্রতি ভালবাসার বিষয় উল্লেখ করে বলেন, তার কারণে বাংলা ভাষার আন্দোলন, ভাষা আর দেশের প্রতি ভালবাসার কারণে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। আর এই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি বাঙালী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে; যিনি আমাদের সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি আমরা। অনুষ্ঠানে মধুসূদন পদকপ্রাপ্ত কবি নির্মলেন্দু গুণ তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ১২ বছর বয়সে কবি মাইকেল মধুসূদনের একটি কবিতা চুরি করে ঢাকায় এক পত্রিকা অফিসে পাঠাই। তখন পত্রিকার সম্পাদক আমাকে লেখেন, এই কবিতাটি মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের। নিজের চিন্তা ও ভাবনার বিষয়টি কবিতা আকারে লেখার পরামর্শ দেন তিনি। সেই থেকে এই ৬০ বছর আমি মহাকবির কারাগারে বন্দী ছিলাম। আজ ৭২ বছর বয়সে মহাকবির নামাঙ্কিত ছবিসমৃদ্ধ পুরস্কারটি পেয়ে মনে হচ্ছে, তিনি আমাকে মুক্তি দিয়েছেন। যশোরের জেলা প্রশাসক ড. মোঃ হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম মিলন ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন যশোর সদরের এমপি কাজী নাবিল আহমেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ হাদীউজ্জামান ও স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি।
×