ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তৃতীয় টি২০ ম্যাচে ৫ উইকেটে পরাজিত দক্ষিণ আফ্রিকা

রুদ্ধশ্বাস জয়ে সিরিজ শ্রীলঙ্কার

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২৭ জানুয়ারি ২০১৭

রুদ্ধশ্বাস জয়ে সিরিজ শ্রীলঙ্কার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হাতের মুঠো থেকে ম্যাচটি প্রায় বেরিয়েই যাচ্ছিল। শেষ ২৪ বলে ৫২ রানের প্রয়োজন তখনও, হাতে আছে ৬ উইকেট। সেখান থেকে দলকে ১ বল বাকি থাকতেই দুর্দান্ত এক জয় এনে দিয়েছেন সিকুগে প্রসন্ন। কেপটাউনে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ টি২০ ম্যাচে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা। এমন রুদ্ধশ্বাস জয়ের ফলে টি২০ সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে গেছে লঙ্কানরা। এবি ডি ভিলিয়ার্সের প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে তার অর্ধশতকে ৫ উইকেটে ১৬৯ রান তুলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ১৯.৫ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য টপকে যায় শ্রীলঙ্কা। ওপেনার নিরোশান ডিকওয়েলা দুর্দান্ত এক অর্ধশতক হাঁকানোয় হয়েছেন ম্যাচসেরা। তিন ম্যাচেই দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখানোয় এ তরুণ সিরিজসেরাও হয়েছেন। উল্লেখ্য, টেস্ট সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে লঙ্কানরা। সিরিজের তৃতীয় টি২০ ম্যাচে ফিরলেন ভিলিয়ার্স। তিনদিন আগে প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে ফিরেই অপরাজিত ১৩৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। টস জিতে ব্যাট হাতে নেয় স্বাগতিকরা। জেজে স্মুটস ও রিজা হেনড্রিকস ভালভাবেই শুরু করেছিলেন। তবে দলীয় ৩৬ রানের সময় সাজঘরে ফিরে যান স্মুটস ১৯ রান করে। এরপর ভিলিয়ার্স ক্রিজে এসেই ঝড় তোলেন। হেনড্রিকস ও ভিলিয়ার্স দ্বিতীয় উইকেটে ৭১ রানের জুটি গড়েন মাত্র ৯ ওভার একসঙ্গে উইকেটে থেকে। মূলত এ জুটির কারণেই বড় একটি সংগ্রহের পথ পেয়ে যায় প্রোটিয়ারা। হেনড্রিকস ৩৪ বলে ৪ চারে ৪১ রান করে ফিরে গেলেও ভিলিয়ার্স পেয়ে যান ফিফটি। গত বছর ২৪ জুনের পর এই প্রথম তিনি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ফিরলেন। ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি হাঁকিয়ে তিনি সাজঘরে ফেরেন ৪৪ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৩ রান করে। এরপর লঙ্কান বোলাররা দ্রুত কয়েকটি উইকেট তুলে নেয়। কিন্তু শেষদিকে ম্যাঙ্গালিসো মোসেলে মাত্র ১৫ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৩২ রানের হার না মানা এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলে দলকে বড় সংগ্রহ পাইয়ে দেন। ৫ উইকেটে ১৬৯ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাব দিতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৩৬ রান পায় শ্রীলঙ্কা। রানের গতিটাও সঠিক পথে রাখেন ডিকওয়েলা। অবশ্য অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল ফিরে গেছেন দ্রুতই। তৃতীয় উইকেটে ৭১ রানের জুটি গড়েন তিনি ধনঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে। ডিকওয়েলা ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক পেয়ে যান। ৫১ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ৬৮ রানে তিনি সাজঘরে ফেরার পরই ধীরস্থির ধনঞ্জয়াও ফিরে গেছেন (২৭ বলে ২০)। ততোক্ষণে ১৬ ওভার শেষ হয়ে গেছে। ৪ উইকেটে ১১৮ রান লঙ্কানদের। এ ম্যাচে একেবারেই ভঙ্গুলর দল গড়া দলটির জন্য শেষ ২৪ বলে প্রয়োজনীয় ৫২ রান করাটা ছিল বেশ কঠিন। তবে এ কঠিন কাজটাকেই বাস্তব করে ফেলে সফরকারীরা। যার পুরোপুরি অবদান সিকুগের। ওয়েন পারনেলের করা ১৭তম ওভারে ১৯ রান তুলে নেন তিনি। আর এতেই আবার জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে শ্রীলঙ্কা। শেষ পর্যন্ত ১৯.৫ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় তারা। সিকুগে মাত্র ১৬ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন। ৫ উইকেটের জয়ে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে নিজেদের করে নেয় লঙ্কানরা। স্কোর ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস- ১৬৯/৫; ২০ ওভার (ভিলিয়ার্স ৬৩, হেনড্রিকস ৪১, মোসেলে ৩২*; সিকুগে ১/২১, সানদাকান ১/২৩)। শ্রীলঙ্কা ইনিংস- ১৭০/৫; ১৯.৫ ওভার (ডিকওয়েলা ৬৮, সিকুগে ৩৭*, থারাঙ্গা ২০, ধনঞ্জয়া ১৯; তাহির ৩/১৮)। ফল ॥ শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ নিরোশান ডিকওয়েলা (শ্রীলঙ্কা)। সিরিজ ॥ তিন ম্যাচের সিরিজে শ্রীলঙ্কা ২-১ ব্যবধানে জয়ী। সিরিজসেরা ॥ নিরোশান ডিকওয়েলা (শ্রীলঙ্কা)।
×