ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সেমিফাইনালে অপ্রতিরোধ্য সেরেনা

প্রকাশিত: ০৬:২২, ২৬ জানুয়ারি ২০১৭

সেমিফাইনালে অপ্রতিরোধ্য সেরেনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টেনিস কোর্টের এক সাহসী যোদ্ধা। বয়সকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়তই। স্বপ্নের শুরুটা করেছিলেন দুই দশকেরও বেশি সময় আগে। এই সময়ের মধ্যে অসাধারণ সব কীর্তি গড়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। কিন্তু থেমে যায়নি তার শিরোপাক্ষুধা। টেনিস কোর্টে এখনও অপ্রতিরোধ্য সেরেনা উইলিয়ামস। আর মাত্র একটি গ্র্যান্ডসøামের প্রয়োজন; তাহলেই টেনিসের উন্মুক্তযুগে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ডসøাম জয়ের অবিস্মরণীয় রেকর্ড গড়বেন সেরেনা উইলিয়ামস। আর সঠিক পথেই হাঁটছেন আমেরিকান টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি। দারুণ জয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। বুধবার কোয়ার্টার ফাইনালে গ্রেট ব্রিটেনের জোহানা কন্টাকে হারিয়ে শেষ চারের টিকেট নিশ্চিত করেন তিনি। শেষ আটের লড়াইয়ে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় বাছাই সেরেনা উইলিয়ামস ৬-২ এবং ৬-৩ সেটে হারান জোহানা কন্টাকে। ম্যাচ শেষে সেরেনা প্রতিপক্ষের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তিনি বলেন, ‘কন্টা অসাধারণ পারফর্ম করেছে। এটা নিশ্চিত করেই বলা যায় যে এখানের ভবিষ্যত চ্যাম্পিয়ন।’ এরপর নিজের সম্পর্কে ৩৫ বছর বয়সী সেরেনা বলেন, ‘আমার সার্ভ নিয়ে শুরুতে হতাশ ছিলাম। কিন্তু ভেঙ্গে পড়িনি। বরং নিজের খেলায় মনোযোগী হয়ে উপভোগ করার চেষ্টা করেছি।’ এদিকে গত কয়েক মৌসুম ধরেই পাদপ্রদীপের আলোয় অবস্থান করছেন কন্টা। কিন্তু মেজর কোন শিরোপা নিজের শোকেসে তুলতে পারেননি তিনি। তবে ২৫ বছর বয়সী কন্টার মতে, সেরেনার বিপক্ষে খেলাটাই তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অভিজ্ঞতা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমার ক্যারিয়ারে সম্ভবত এটাই সবচেয়ে বড় অভিজ্ঞতা। তার বিপক্ষে ম্যাচ থেকে আমি অনেক কিছুই শিখেছি। যেখান থেকে নিজেকে আরও অনেক উন্নত করতে পারব। তবে সেরেনা যোগ্য খেলোয়াড় হিসেবেই ম্যাচ জিতেছে। সত্যি কথা বলতে সে অবিশ্বাস্য ভাল খেলেছে। প্রচ- শক্তি, ক্ষমতা এবং তীব্র গতির অধিকারী সে।’ সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে ২২টি গ্র্যান্ডসøাম জিতেছেন সেরেনা। গত বছর উইম্বলডনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ওপেনযুগে সর্বোচ্চ ২২ গ্র্যান্ডসøাম জয়ী জার্মান কিংবদন্তি স্টেফিগ্রাফের রেকর্ডে ভাগ বসান তিনি। আর মাত্র একটি মেজর শিরোপা নিজের শোকেসে তুলতে পারলেই স্টেফিকে ছাড়িয়ে যাবেন তিনি। সেজন্য বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নাম্বার তারকার প্রয়োজন আরও দুটি জয়। সেমিফাইনালে তার বাধা এখন ক্রোয়েশিয়ার অবাছাই মিরজানা লুসিস বারোনি। কোয়ার্টার ফাইনালের অন্য ম্যাচে যিনি ৬-৪, ৩-৬ এবং ৬-৪ সেটে পরাজিত করেন ক্যারোলিনা পিসকোভাকে। বছরের শুরুতেই ব্রিসবেন ইন্টারন্যাশনাল টেনিস টুর্নামেন্ট জিতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের মিশন শুরু করেছিলেন পিসকোভা। নতুন মৌসুমের প্রথম মেজর টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেও দুর্দান্ত শুরু করেন তিনি। কিন্তু অবশেষে থেমে গেল তার জয়রথ। টুর্নামেন্টের শেষ আটেই তাকে থামিয়ে দিলেন লুসিস বারোনি। সেমিফাইনালে সেরেনা উইলিয়ামসের বিপক্ষেও ম্যাচটা যে জমবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে এর আগেও দুইবার সেরেনা-বারোনির লড়াই দেখেছে টেনিস বিশ্ব। কিন্তু দীর্ঘ ১৯ বছর আগে। কিন্তু দুইবারই জয় পেয়েছেন সেরেনা। ১৯৯৮ সালে সিডনির হার্ড কোর্টে রাউন্ড অব ৩২-এ সেরেনার কাছে ৩-৬, ৬-৪ এবং ৭-৫ সেটে হার মানেন তিনি। একই বছর উইম্বলডনের ঘাসের কোর্টে রাউন্ড অব ৬৪তে সেরেনা উইলিয়ামস ৬-৩ এবং ৬-০ সেটে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ান তারকাকে। এদিকে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের অন্য সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছেন সেরেনার বড় বোন ভেনাস উইলিয়ামসও। কোয়ার্টার ফাইনালে এ্যানাস্তাসিয়া পাভলিউচেঙ্কোভাকে পরাজিত করে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে শেষ চারে জায়গা করে নেন আমেরিকান তারকা। ২০০৮ সালে সর্বশেষ কোন মেজর শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন উইলিয়ামস পরিবারের বড় মেয়ে। আর ২০০৯ সালে উইম্বলডনে শেষবার ফাইনাল খেলেন তিনি। প্রায় এক দশক পর আবারও কোন গ্র্যান্ডসøাম জয়ের সুযোগ সামনে তার। সেমিতে ৩৬ বছর বয়সী ভেনাসের প্রতিপক্ষ কোকো ভেন্ডেওয়েঘে।
×