ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফেসবুক চ্যাটে বার্নিকাট

জিএসপি ইস্যুতে ট্রাম্প কী পদক্ষেপ নেন তার অপেক্ষা করতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৬ জানুয়ারি ২০১৭

জিএসপি ইস্যুতে ট্রাম্প কী পদক্ষেপ নেন তার অপেক্ষা করতে হবে

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের সব দেশের মার্কিন দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করে নেয়ার খবরকে ‘আংশিক সত্য’ বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। এছাড়া তিনি বলেছেন, জিএসপি ইস্যুতে ট্রাম্প সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশ সরকার জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে সক্ষম হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। বুধবার ঢাকার মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত ফেসবুক আলাপে তিনি এই আশা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে ২৫ জানুয়ারি মার্শা বার্নিকাটের দুই বছর পূর্তি হয়েছে। বাংলাদেশে দুই বছর দায়িত্ব পালন উপলক্ষে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস এক ফেসবুক আলাপের আয়োজন করে। বুধবার এক ঘণ্টাব্যাপী তিনি ফেসবুক আলাপে অংশ নেন। ফেসবুক আলাপে কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীরও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বার্নিকাট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বারাক ওবামা প্রশাসন থেকে নিয়োগ পাওয়া সকল মিশনের রাষ্ট্রদূতকে ট্রাম্প প্রশাসন প্রত্যাহার করে নেয়ার গুজব রয়েছে। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে মার্শা বার্নিকাট বলেন, এটা আংশিক সত্য। কেননা প্রতিটি প্রেসিডেন্ট তার দল থেকে মনোনীত হয়ে থাকে। আপনি সেসব রাষ্ট্রদূতকে এখন জিজ্ঞাসা করতে পারেন, যারা পূর্বসূরীদের পদত্যাগের প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক নিয়োগ পেয়েছিলেন। তবে দুই-তৃতীয়াংশ রাষ্ট্রদূত যারা আমার মতোই ফরেন সার্ভিস কর্মকর্তা তারা এখনও স্বাভাবিকভাবেই অবস্থান করছেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে কখনও কখনও যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতি হতে পারে। তবে পরস্পরের মধ্যে আস্থা, সদিচ্ছা ও পদ্ধতিগত বিষয় নিশ্চিত করতে পারলে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। আমি মনে করি, আমাদের দুই দেশের মধ্যে এ বিষয়গুলোকেই প্রাধান্য দেয়া প্রয়োজন। মার্শা বার্নিকাট বলেন, পোশাক শ্রমিকদের কর্ম নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিশেষ উন্নতি হয়েছে। তবে শ্রমিক অধিকার রক্ষার বিষয়ে এখনও অনেক কিছু করার রয়েছে। ঢাকার সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজেনা বাংলাদেশের ৬৪ জেলা ভ্রমণ করেছিলেন। তার মতো আপনিও সকল জেলা ভ্রমণ করবেন কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে মার্শা বার্নিকাট বলেন, ড্যান মজেনা আমার খুবই প্রিয় একজন বন্ধু। তবে আমি তার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় যেতে চাই না। আমি যতটা পারি বাংলাদেশ দেখে যেতে চাই। বারাক ওবামার প্রশাসনের আমলে বাংলাদেশে জিএসপি সুবিধা বন্ধ হয়েছে। তবে ট্রাম্প সরকার আসার পর জিএসপি সুবিধা খুলতে পারে কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্নিকাট বলেন, জিএসপি ইস্যুতে ট্রাম্প সরকার কি পদক্ষেপ নেয়, তার জন্য আমাদের একটু অপেক্ষা করতে হবে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কিÑ এমন প্রশ্নের উত্তরে মার্শা বার্নিকাট বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার নিশ্চিতের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এর মধ্যে মিয়ানমারও রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই মিয়ানমারের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে জাতিগত ও ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সে দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে বার্নিকাট বলেন, আমি প্রবলভাবে আত্মবিশ্বাসী যে, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের যে ধরন ও তারা যে সংস্কৃতি লালন করে, তার মাধ্যমেই সরকার জঙ্গী ও সস্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে সক্ষম হবে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেদনাদায়ক কি দেখেছেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে মার্শা বার্নিকাট বলেন, আমার কাছে শিশুর প্রতি সহিংসতা বাংলাদেশে সবচেয়ে বেদনাদায়ক। আমাদের যেভাবেই হোক এসব শিশুদের রক্ষা করতে হবে। তবে বাংলাদেশে ক্রমশ এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে। আমি আশাবাদী যে শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হবে। আর এই কার্যক্রমের সঙ্গে বাংলাদেশের পাশে থাকবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার সুযোগ বাড়বে কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে মার্শা বার্নিকাট বলেন, আমাদের নাগরিক, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আমাদের দেশ সারা বিশ্বের শিক্ষার্থীদের দ্বারা সমৃদ্ধ। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্যও সে সুযোগ বিস্তৃত। বর্তমানে সাড়ে ৬ হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করছে। এজন্য আমি গর্বিত। সাধারণ মানুষের কাছে আপনি এদেশের অন্যতম একজন জনপ্রিয় রাষ্ট্রদূত- এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মার্শা বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশের যেখানেই গিয়েছি, সাধারণ মানুষের উষ্ণ আন্তরিকতা পেয়েছি। তবে আমি এখানে কার্যকর একজন রাষ্ট্রদূত হতে চাই। জনপ্রিয়তার চেয়ে আমার কাছে এটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নাগরিকদের সতর্ক করল ঢাকার মার্কিন দূতাবাস ॥ রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদে ডাকা বৃহস্পতিবারের হরতালের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে বসবাসরত মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক বার্তা জারি করেছে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। বুধবার ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে এই সতর্ক বার্তা জারি করা হয়।
×