ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শহীদ মতিউরের রক্ত আমরা বৃথা যেতে দেইনি ॥ তোফায়েল

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৬ জানুয়ারি ২০১৭

শহীদ মতিউরের রক্ত আমরা বৃথা যেতে দেইনি ॥ তোফায়েল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ‘মা-গো, মিছিলে যাচ্ছি, যদি ফিরে না আসি মা, মনে করো তোমার ছেলে বাংলার মানুষের মুক্তির জন্য, শেখ মুজিবের মুক্তির জন্য জীবন দিয়েছে।’ শহীদ মতিউরের পকেটে এক টুকরো কাগজে নাম ঠিকানাসহ এ কথাটি লেখা ছিল। ঘটনাটি ২৪ জানুয়ারি উনিশ শ’ ঊনসত্তরের। বঙ্গবন্ধুর মুক্তিসহ স্বাধীনতা অর্জনে দেশে তখন গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়েছে। এভাবেই বুধবার ঢাকার উত্তরায়-ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের শহীদ মতিউর রহমানের বাসায় স্মৃতিচারণ করছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এ সময় তিনি মতিউরের বৃদ্ধ বাবা মোঃ আজাহার আলী মল্লিক এবং তার পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ২৪ জানুয়ারি একটি ঐতিহাসিক দিন। আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসি দেয়ার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দেয়নি। বাংলার মানুষ রাজপথে নেমে এসেছিল বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে। ঢাকার নবকুমার ইনস্টিটিউটের দশম শ্রেণীর ছাত্র মতিউর রহমান কর্মসূচী পালনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়, পরবর্তীতে তার লাশ নিয়ে মিছিল করি। কারফিউয়ের মধ্যে মতিউরের লাশ নিয়ে আমরা মতিউরের বাসায় গেলে মতিউরের মা বলেছিলেন, ‘যে জন্য আমার ছেলে জীবন দিয়ে গেল, সে রক্ত যেন বৃথা না যায়।’ তিনি বলেন, আমরা শহীদ মতিউরের রক্ত বৃথা যেতে দেইনি। মতিউর তার বাবার কাছে বলেছিল, ‘বাবা যারা শহীদ হন, তাদের জানাজায় লাখ লাখ মানুষ হয়।’ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু মুক্ত হয়েছেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। শহীদ মতিউরের অসুস্থ বাবা মোঃ আজাহার আলী মল্লিক উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময় ২৪ জানুয়ারি আমার ছেলে মতিউর রহমান বঙ্গবন্ধুর মুক্তি এবং আইয়ুব খানের পতনের আন্দোলন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছিল। সেদিন প্রার্থনা করেছিলাম, মতিউরের রক্ত যেন বৃথা না যায়। সেদিন গণঅভ্যুত্থানের মুখে তারা বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। শহীদ মতিউরের রক্ত বৃথা যায়নি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নামমাত্র ১ হাজার এক টাকা মূল্যে পাঁচ কাঠা জমি দিয়েছেন উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে। ডেভেলপারকে দিয়ে ৬ তলা ফ্ল্যাট বাড়ি তৈরি করে ৬টি ফ্ল্যাট পেয়েছি, ৭০ লাখ টাকা পেয়েছি। মতিউরের মা এখন বেঁচে নেই, সন্তান ও নাতি-পুতি নিয়ে জীবনের শেষ প্রান্তে আছি। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সহযোগিতার কথা আমি এবং আমার পরিবার কোনদিন ভুলব না। তিনি সব সময় আমার পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং সহযোগিতা করেন। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
×