ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এবার দুর্নীতি কমেছে ॥ টিআইবি

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৬ জানুয়ারি ২০১৭

এবার দুর্নীতি কমেছে ॥ টিআইবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে দুর্নীতি বেড়েছে না কমেছে তা বলা কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। বুধবার রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে সংস্থাটি কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জার্মানির বার্লিনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) পক্ষে বাংলাদেশের ‘দুর্নীতির ধারণাসূচক’ প্রকাশকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে সোমালিয়া ও সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে যৌথভাবে সমান স্কোর পেয়ে ডেনমার্ক ও সুইজারল্যান্ড রয়েছে বলে জানানো হয়। সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান যৌথভাবে পনেরো নম্বরে রয়েছে। এ সময় টিআইবির চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এম হাফিজউদ্দিন খান ও আলী ইমাম মজুমদার, উপ-নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (আউটরিচ এ্যান্ড কমিউনিকেশনস) রিজওয়ান উল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিশ্বের ১৭৬ দেশ ও অঞ্চলের ২০১৬ সালের দুর্নীতির পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বার্লিনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান টিআই এই সূচক প্রকাশ করে। সূচকের উর্ধক্রম অনুযায়ী (ভাল থেকে খারাপ) বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১৪৫ নম্বরে। গতবছর ১৬৮ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩৯ নম্বরে। আবার অধঃক্রম অনুযায়ী (খারাপ থেকে ভাল) বিবেচনা করলে বাংলাদেশ আগের ১৩তম অবস্থান থেকে এবার ১৫তম অবস্থানে উঠে এসেছে। এর আগে ২০১৪ সালে ১৭৫ দেশের মধ্য বাংলাদেশের অবস্থান ১৪তম, ২০১৩ সালে ১৬তম এবং ২০১২ সালে ১৩তম, ২০১১ সালে ১৩তম স্থানে ছিল। ড. জামান বলেন, সূচকে এ বছর বাংলাদেশের যে অবস্থান দেখানো হয়েছে তাতে বাংলাদেশে দুর্নীতি কমেছে না বেড়েছে তা বলা কঠিন। এ সময় প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক এবং বাংলাদেশের দুর্নীতির পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সূচকে ৪৩ স্কোর একটু স্ট্যান্ডার্ড। যেসব দেশ ৪৩ বা তার বেশি স্কোর করতে পারে, ধরে নেয়া হয়, সেসব দেশ মধ্যম পর্যায়ের দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। বাংলাদেশের স্কোর ২৬। বিগত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ স্কোরে অগ্রসর হয়েছে। আর সূচকে অগ্রগতি হয়েছে অন্য দেশগুলোর সাপেক্ষে। ফলে বাংলাদেশের এই অগ্রগতি দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের কারণে, নাকি অন্য দেশগুলোর পিছিয়ে পড়ার কারণে সেটা বলা যাবে না। সূচক অনুযায়ী এ বছর একই স্কোর পেয়ে সূচকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে পঞ্চদশ অবস্থানে রয়েছে ক্যামেরুন, গাম্বিয়া, কেনিয়া, মাদাগাস্কার ও নিকারাগুয়া। ১০০ ভিত্তিতে তৈরি এই সূচকে বাংলাদেশের স্কোর এবার ১ পয়েন্ট বেড়ে ২৬ হয়েছে। এই স্কেলে শূন্য স্কোরকে দুর্নীতির ব্যাপকতার ধারণায় সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত এবং ১০০ স্কোরকে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত বা সর্বোচ্চ সুশাসনের দেশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। টিআইর প্রতিবেদন অনুযায়ী, তালিকায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় থাকা সোমালিয়ার স্কোর এবার ১০। এরপরে রয়েছে যথাক্রমে দক্ষিণ সুদান, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন, সুদান, আফগানিস্তান, ভেনিজুয়েলা ও ইরাক। অন্যদিকে সর্বোচ্চ ৯০ স্কোর নিয়ে তালিকায় সবচেয়ে ভাল অবস্থানে আছে ডেনমার্ক ও নিউজিল্যান্ড। এর পরে রয়েছে ফিনল্যান্ড, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, সিঙ্গাপুর, নেদারল্যান্ডস, কানাডা, জার্মানি, লুক্সেমবুর্গ ও যুক্তরাজ্য। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ৯০ স্কোর পেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকার শীর্ষে যৌথভাবে অবস্থান করছে ডেনমার্ক ও নিউজিল্যান্ড। ৮৯ স্কোর পেয়ে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড এবং তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সুইডেন যার স্কোর ৮৮। ১০ স্কোর পেয়ে ২০১৬ সালে তালিকায় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে সোমালিয়া। গত বছরের প্রতিবেদনে সোমালিয়ার সঙ্গে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে ছিল উত্তর কোরিয়া। অন্যদিকে সবচেয়ে কম দুর্নীতির দেশ হিসেবে এককভাবে শীর্ষে ছিল ডেনমার্ক। সংবাদ সম্মেলন থেকে জানান হয় যে, বিশ্বব্যাংক, আফ্রিকান উন্নয়ন ব্যাংক ও আইএমডি থেকে নেয়া তথ্যের ভিত্তিতে টিআই দুর্নীতির এই ধারণাসূচক তৈরি করা হয়েছে।
×