ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টেলিফোনে বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা

মোদিকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে ট্রাম্পের আমন্ত্রণ

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ২৬ জানুয়ারি ২০১৭

মোদিকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে ট্রাম্পের আমন্ত্রণ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের চার দিনের মাথায় মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তিনি মোদিকে যুক্তরাষ্ট্র সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তারা বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষায় ভারত-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্ব আরও এগিয়ে নেয়ার সম্ভাবনাসহ বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ঠেকাতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। খবর বিবিসি ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের। ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আগামী বৈঠকে বিশ্বের দুই বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের মধ্যে ভবিষ্যৎ সম্পর্কের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা হবে। নয়াদিল্লীর প্রত্যাশা, দুর্বোধ্য বিষয়গুলো নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা শুরু হতে পারে যেগুলোকে দেশের শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিক এম জয়শংকর গত সপ্তাহেই ২০১৭ সালের বিশ্বকে জ্ঞাত ও অজ্ঞাত সমস্যাপূর্ণ বলে অভিহিত করেছেন। ইউরোপে গোলযোগপূর্ণ পরিস্থিতি ও চীনের শক্তি বৃদ্ধির এ সময়ে ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের সঙ্গে বিশ্ব দৃশ্যপটের দ্রুত পরিবর্তন বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে জয় শংকরের মন্তব্যে। হোয়াইট হাউস বলেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ বছরই যুক্তরাষ্ট্র সফর করতে পারেন। দুই নেতার মধ্যে পাঁচটি প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং প্রসঙ্গগুলো হচ্ছে পাকিস্তান, চীন, এইচআইবি ভিসা, রাশিয়া ও এনএসজি সদস্যপদ। ট্রৃাম্প সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে কঠিন হওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন দুই নেতা। কিন্তু ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী পাকিস্তান বিষয়ে নতুন মার্কিন প্রশাসনের মনোভাব কী রূপ নেবে তা স্পষ্ট নয়। পাকিস্তানের ভূখ-ে সন্ত্রাস উচ্ছেদে দেশটির ওপর আরও বেশি শক্তি প্রয়োগের জন্য এবং ইসামাবাদকে সাহায্য ও অস্ত্র সরবরাহের জন্য ট্রাম্প ইচ্ছুক কিনা এ বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবে ভারতের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান। দুদেশের মধ্যে সম্পর্কে দীর্ঘ দিনের কাঁটা হয়ে আছে বিষয়গুলো। চীনকে মোকাবেলার জন্য ট্রাম্পের কী পরিকল্পনা রয়েছে সে বিষয়ে ধারণা পাওয়ার জন্য গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ভারত। মোদি গত সপ্তাহে চীনের নাম উচ্চারণ না করে এক ভাষণে এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান উচ্চভিলাষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি উল্লেখ করেন। কিন্তু মার্কিন-চীন বিরোধ কোন সামরিক সংঘর্ষে রূপ নিলে ভারত কীভাবে তার জবাব দেবে তা স্পষ্ট নয়। ভারত এর শক্তিশালী প্রতিবেশী চীনের সঙ্গে আঞ্চলিক বিরোধে জড়িত দীর্ঘদিন যাবত। ট্রাম্প ভিসা আইন কড়াকড়ি করবেন কিনা এ বিষয়টি উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছেন ভারতীয় কর্মকর্তারা। এ ভিসা দেশের টাটা কনসালট্যান্সি সার্ভিসেস লিমিটেড, ইনফোসিস লিমিটেড ও উইপ্রো লিমিটেডের মতো বিশাল কোম্পানিগুলোর তৎপরতাকে যুক্তরাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচার অভিযানের সস্তা শ্রমিক পাঠানোর জন্য এ কোম্পানিগুলোর প্রোগ্রামের সমালোচনা করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসনে সবচেয়ে বড় সম্ভাব্য পরিবর্তনের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা। ভারত এ ধরনের অগ্রগতির প্রতি অভিনন্দন জানাবে। মস্কোর সঙ্গে দিল্লীর সুসম্পর্ক রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত। ভারতে বিশ্লেষকরা মনে করেন, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনের সময় মার্কিন-রুশ উত্তেজনার কারণে প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন চীনের দিকে ঝুঁকেছেন। রাশিয়ার ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বিষয় ট্রাম্প বিবেচনা করবেন কিনা এদিকটিতেও তাকিয়ে আছে ভারত।
×