ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আ ব ম রবিউল ইসলাম (রবীন)

বিলম্বিত বিচার!

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২৬ জানুয়ারি ২০১৭

বিলম্বিত বিচার!

চারদিকে যেন অবক্ষয়ের আবর্তে নিমজ্জিত আমরা। সড়কে, মহাসড়কে, অফিস, আদালতে যে যেমন পারে নিজস্ব শক্তি ব্যবহার করে অর্থ-উর্পাজন করে অনৈতিকভাবে। রাজনীতিবিদরা তার রাজনৈতিক সাইন বোর্ডকে ব্যবহার করছে, কোন কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার ক্ষমতাকে অপব্যবহার করছে, অফিস-আদালতে প্রতিদিন বিচারের বাণী নীরবে কেঁদে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে, কার কাছে সুবিচার চাইবে? ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে একদল বিপথগামী সেনা সদস্য আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে প্রকাশ্যে রাজনীতি করেছিল, নির্বাচনে পযর্ন্ত অংশ নিয়েছিল। জেলখানায় ১৯৭৫ সালের ৩ নবেম্বর জাতীয় চার নেতাকে বিপথগামী খুনী চক্র হত্যা করেছিল। তখনও বিচারের বাণী নীরবে কেঁদেছিল। আইনের শাসন সেই সময় অনেকটা নির্বাসনে গিয়েছিল। যদিও পরবর্তী সময়ে এই রাষ্ট্রেই সেই খুনীদের কারও কারও বিচার হয়েছে। খুনীরা শাস্তি পেয়েছে। এখনও আমরা দেখি বিনা অপরাধে অনেক ব্যক্তি জেলখানায় বন্দী থাকে। বিচার বিলম্বের কারণে সামান্য অপরাধ করা অনেকে বছরের পর বছর জেলখানায় বন্দী থাকে। একটি রাষ্ট্রে একজন অপরাধী যদি ভাবে অপরাধ করে সে সহজেই পার পেয়ে যাবে। যদিও সে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তাহলে সে জেলখানায় অবৈধ উপায়ে ডিভিশন পাবে, মোবাইলে অপরাধ প্রক্রিয়া চালতে পারবে। তাহলে অপরাধ বাড়বে। একটি সভ্য রাষ্ট্রে একটি অপরাধ সংঘটিত হলে ২৪ অথবা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধী শনাক্ত হয়। আমাদের দেশে পুলিশ সদস্য বাবুল আক্তারের স্ত্রী প্রকাশ্যে দিবালোকে হত্যা হলো, তুর্কী হত্যা, গাইবান্ধায় সংসদ সদস্যকে হত্যা করা হলো, সাংবাদিক হত্যা হয়েছে, সর্বোপরি আওয়ামী লীগের জনসভায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা প্রচেষ্টা করা হলো, এই জঘন্য অপরাধগুলোর বিচার হয়নি। সচিবালয় থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের প্রায় সর্বত্র অফিসে ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় না। এমনকি স্কুল, কলেজে একটি পিয়নের চাকরি পেতে লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। পৃথিবীর কোন সভ্য রাষ্ট্রে এমন দেখা যায় না। বিচারের বাণী এখানেও নীরবে কাঁদে। প্রকাশ্যে ধূমপান করলে শাস্তির বিধান আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। আইন করেও আমরা অবৈধ পলিথিন উচ্ছেদ করতে পারিনি। কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করতে পারিনি। তাহলে আইনের শাসন কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে? আদমদীঘি, বগুড়া থেকে
×