ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

খন্দকার মাহবুবুল আলম

আইনের উর্ধে কেউ নন

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ২৬ জানুয়ারি ২০১৭

আইনের উর্ধে কেউ নন

আমরা স্বাভাবিকভাবে বুঝি ও জানি আইনের বিধিবদ্ধ নিয়ম ও শাসনের কারণে মানুষ খারাপ অভ্যাস (যাদের মধ্যে থাকে) ত্যাগ করে ভাল অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়। ফলে মানব সমাজের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরে আসে। আইনের বেড়াজালের মধ্যেও কিছু মানুষ আইন ভঙ্গ করে অপরাধ কর্মকা- ঘটিয়ে থাকে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই এমন প্রবণতা লক্ষণীয়। ‘আইন’ থাকলেই হয় না, আইনকে শিরোধার্যে মান্য করতে হয়। আইন প্রয়োগকারীকেও যথাযথভাবে আইন প্রয়োগ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে শৈথিল্য প্রদর্শন অপরাধীদের বেপরোয়া করে তোলে। কোন এক সময় এমন পরিস্থিতি থাকলেও এখন আছে বলে মনে হয় না। আইনের শাসন ও বিচার বিভাগ এখন অনেকটা উন্নত ও দায়িত্ববান বলা যায়। আমাদের দেশে আইনের শাসন এখন প্রতিষ্ঠিত। আর তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পর্যন্ত অপরাধ করে প্রাপ্য শাস্তি থেকে রেহাই পাচ্ছে না। রায়ে নারায়ণগঞ্জ ৭ খুন মামলায় ২৬ জনের ফাঁসির দ-াদেশ হয়। এ মামলার আসামিদের অধিকাংশই র‌্যাব সদস্য। জনৈক সাবেক র‌্যাব কর্মকর্তা (এ মামলার অন্যতম আসামি) বর্তমান সরকারের এক প্রভাবশালীর জামাতা হয়েও দ-াদেশ থেকে বাঁচতে পারেননি। একেই বলে আইনের শাসন এবং সঠিক বিচার ব্যবস্থা। বর্তমানে আইন-আদালত বা বিচার ব্যবস্থা এমনভাবে পরিস্ফুটিত হয়ে উঠছে যে, শাসক দলেরও কেউ অপরাধ করে পার পাবে না। যে ‘আইন’ সভ্যতার বিকাশ সাধনে অবদান রাখে, সেই আইন সম্পর্কে মানুষ কতটুকু সচেতন? অধিকাংশ সাধারণ মানুষের মধ্যেই আইন বিষয়ক সাধারণ জ্ঞানের অভাব বিদ্যমান। এ কথা উপলব্ধি করতে হবে যে, ‘আইনের যেমন দৃষ্টি আছে তেমনি আবার আইন অন্ধও বটে।’ আইনের এই ‘দৃষ্টি’ ও ‘অন্ধত্ব’কে স্থান-কাল-পাত্র ভেদে বুঝে নিতে হয়। দেখা যায়, আইন সম্পর্কিত সচেতনতার অভাবে অনেক মানুষ নিরপরাধ হয়েও পরিস্থিতি বা ঘটনার শিকার হয়ে আইনী জটিলতার কারণে কষ্ট পায়। আইন যেমনি মানুষের নিরাপদ-নিশ্চয়তার বিধান করে তেমনি এ সম্পর্কিত সচেতনতার অভাবে অনেককে বিপদ ও অনিশ্চয়তায় পতিত হতে হয়। আইনের ছোঁয়া থেকে বাঁচতে হলে ব্যক্তিকে সঠিক অবস্থানে যুক্তিনির্ভরতার মধ্যে থাকতে হবে। সেই আইনের শাসন সঠিকভাবে যেখানে প্রতিষ্ঠিত, সেখানকার পরিবেশ পরিস্থিতি উন্নত। তারপরও আইনের শাসনের সার্বিক পথে কিছু সঙ্কট তো আছেই। যেমন ত্রুটিপূর্ণ পুলিশী তদন্ত, তদন্ত কাজে অনভিজ্ঞতা বা কিছু পুলিশ কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্য ইত্যাদি। এসব কারণে অনেক সময় প্রকৃত অপরাধী পার পেলেও অনেক নিরপরাধ লোক কষ্ট পায়। মামলার দীর্ঘসূত্রতাও এর অন্যতম কারণ। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা আন্তরিক ও সচেতন হলে এবং কাজের পদ্ধতিগত পরিবর্তনে উন্নয়ন ঘটানো গেলে এমন সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। চট্টগ্রাম থেকে
×