ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কাবিননামার কপি পুলিশকে দিলেন নাসরিন

আরাফাত সানির জামিন নামঞ্জুর ॥ রিমান্ড শেষে কারাগারে

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২৫ জানুয়ারি ২০১৭

আরাফাত সানির জামিন নামঞ্জুর ॥ রিমান্ড শেষে কারাগারে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানির সঙ্গে বিয়ের প্রমাণ হিসেবে পুলিশের কাছে কাবিননামার ফটোকপি হস্তান্তর করেছেন মামলার বাদী নাসরিন। কাবিননামাটি সঠিক কি-না সে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। বিষয়টি নিশ্চিত হতে ইতোমধ্যেই কাজী অফিসের ঠিকানা মোতাবেক তদন্ত শুরু হয়েছে। এদিকে, একদিনের রিমান্ড শেষে ক্রিকেটার সানিকে ঢাকার সিএমএম আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। গত ৫ জানুয়ারি নাসরিন নামে এক তরুণী তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মোহাম্মদপুর থানায় আরাফাত সানির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। গত রবিবার পুলিশ আরাফাত সানিকে ঢাকার আমিনবাজারের সোজানগরের সরকার বাড়ি এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের জি ব্লকের ১/২ নম্বর সড়কের ৫৪ নম্বর নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। সোমবার নাসরিন ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে যৌতুকের দাবিতে মারধরের অভিযোগ এনে সানির বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন। ওই মামলায় ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে নাসরিনকে মারধর করার অভিযোগ আনা হয় সানির বিরুদ্ধে। বাদীর আইনজীবী মোঃ কামাল উদ্দিন জানান, আরাফাত সানির সঙ্গে ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর নাসরিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা বাসা ভাড়া নিয়ে একসঙ্গে থেকেছেন। একসঙ্গে তারা বিদেশে বেড়াতেও গেছেন। বাদীর অভিযোগ, সানির পরিবার তাদের বিয়ে মেনে না নেয়ায় তাকে তুলে নেয়া হয়নি। একপর্যায়ে সানি তার কাছে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা দিলে ঘরে তুলে নেবেন বলে জানান। যৌতুকের টাকার জন্য নাসরিনকে মারধরও করেন সানি। মামলার আর্জিতে আরাফাত সানির মা নার্গিস বেগমকেও আসামি করার আবেদন করেছিলেন নাসরিন। আদালত কেবল সানির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়। বিচারক নালিশী মামলাটি আমলে নিয়ে সানির বিরুদ্ধে সমন জারি করে। সানিকে ৫ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার একদিনের রিমান্ড শেষে সানিকে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। আদালত সানির জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। সন্ধ্যায় সানিকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে পঠানো হয়। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, মামলার বাদী ইতোমধ্যেই কাবিননামার ফটোকপি তার কাছে হস্তান্তর করেছেন। কাবিনামাটি সঠিক কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই কাবিনামায় থাকা কাজীর নাম ও কাজী অফিসের ঠিকানা মোতাবেক তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে আরাফাত সানির কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা সম্ভব নয়। যৌতুক আইনে দায়েরকৃত মামলা সংক্রান্ত আদালতের কোন আদেশ বা নির্দেশ সম্পর্কে তিনি অবহিত নন। ইতোপূর্বে মামলার বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার ও আরাফাত সানির মোবাইল ফোন সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্ট পাওয়ার পরই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। যদিও ঘটনার পর থেকেই আরাফাত সানির পরিবার দাবি করে আসছে, এটি একটি সুগভীর ষড়যন্ত্র। মূলত মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতেই এমন ষড়যন্ত্রে মেতেছে অভিযোগকারী তরুণী নাসরিন। প্রায় এক বছর ধরে নাসরিন এমন ষড়যন্ত্র করছে। আর নাসরিনের দাবি, আরাফাত সানির বিরুদ্ধে আনা তার অভিযোগ সত্য। তারা একত্রে দেশ-বিদেশ ঘুরেছেন। সর্বশেষ দুজনে থাইল্যান্ডে বেড়িয়ে এসেছেন। তার প্রমাণাদিও রয়েছে। জানা গেছে, আরাফাত সানির পিতার নাম আব্দুর রহিম (মৃত)। তিনি ব্যবসায়ী ছিলেন। তিন ভাই, দুই বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। মিরপুর মফিদ-ই-এম স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে ২০০৩ সালে তার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ক্রিকেটে ব্যস্ততার কারণে তার আর পড়াশোনা হয়নি। ব্যক্তিজীবনে সানি বিবাহিত। স্ত্রী আফসানার বাড়ি আমিনবাজারের পাশের বড়দেশী গ্রামে। ২০১০ সালের ২০ জানুয়ারি তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। আদালতে সানি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন বলে পরিবারের বিশ্বাস।
×