ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব

ছোটদের বড় আয়োজন দারুণ সব সিনেমা দেখার সুযোগ

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৫ জানুয়ারি ২০১৭

ছোটদের বড় আয়োজন দারুণ সব সিনেমা দেখার সুযোগ

মোরসালিন মিজান ॥ ছোট ছোট ছেলে মেয়ে। বড় বড় কাজ। ‘ফ্রেমে ফ্রেমে আগামী স্বপ্ন’ দেখছে। সিনেমা দেখার বয়স যখন, নির্মাণ শুরু করে দিয়েছে তারা। ক্ষুদে পরিচালকদের ছবি নিয়ে এখন চলছে উৎসব। আয়োজক চিলড্রেন্স ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশ। এরপর আর বিশেষ কিছু বলতে হয় না। উদ্যোগটি সম্পর্কে সবাই মোটামুটি জানেন। এর আগে নয়টি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। দশম আসরের পর্দা উঠল মঙ্গলবার। প্রধান ভেন্যু জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন। না, ভেতরে প্রবেশ করতে হয় না। তার আগেই উৎসবের আমেজ। গোটা এলাকা সুন্দর করে সাজিয়ে নেয়া হয়েছে। খোলা প্রাঙ্গণে অনেকগুলো বুথ। একেকটির একেক কাজ। সব কাজ ‘ঠাস ঠাস’ করে ফেলছে কিশোর-কিশোরীরা। তাদের শত রকমের ব্যস্ততা। যার যে দায়িত্ব তা পালন করছে। সেইসঙ্গে চলছে হৈ হুল্লোড়। আনন্দ আড্ডা। এবার উৎসবে বিভিন্ন দেশ থেকে যোগ দিয়েছেন ১৮ জনের মতো বিদেশী অতিথি। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছে ১২৫ জন শিশু প্রতিনিধি। ঢাকা ছাড়াও উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে রাজশাহী ও রংপুরে। চট্টগ্রামে শুরু হবে ৩ মার্চ। সারাদেশে মোট ভেন্যু থাকছে ১১টি। শিশুরা তাদের অভিভাবককে সঙ্গে নিয়ে বিনামূল্যে চলচ্চিত্র উপভোগ করতে পারবে। ফুটফুটে শিশুমুখগুলোকে পাশে নিয়ে বিকেলে গণগ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে উৎসবের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আয়োজকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উৎসব উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান মুস্তাফা মনোয়ার, উপদেষ্টা মোরশেদুল ইসলাম, আয়োজক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মুনিরা মোরশেদ মুন্নী প্রমুখ। এ সময় জাতীয় সঙ্গীত গাইতে গাইতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। একইসময় উত্তোলন করা হয় উৎসব ও সোসাইটির পতাকা। ছিল কপোত ও বেলুন ওড়ানোর আনুষ্ঠানিকতা। দ্বিতীয় পর্বে ছিল আলোচনা। বক্তারা বলেন, আজ যারা ছোটকাল তারা বড় হবে। সৃজনশীল চলচ্চিত্র নির্মাণ করবে। তাদের ছবি দেশে নয় শুধু বিদেশেও প্রশংসা কুড়াবে। অনুষ্ঠানে উৎসব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে উৎসব পরিচালক মোহাম্মদ আবীর ফেরদৌস। আয়োজকরা জানায়, সাত দিনব্যাপী আয়োজনে বাংলাদেশসহ ৫৪টি দেশের দুই শতাধিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। জাতীয় গণগ্রন্থাগারের মিলনায়তনে প্রতিদিন ৪টি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ১১টা, দুপুর ২টা, বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা ৬টায় দেখা যাবে ছবি। আরেকটি উল্লেখযোগ্য ভেন্যু জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের ধানম-ি ও উত্তরা শাখা, ব্রিটিশ কাউন্সিল ও ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি মিলনায়তন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে উৎসব। উৎসবে এবারও থাকছে ইয়াং বাংলাদেশী ট্যালেন্ট শীর্ষক বিভাগ। এতে ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সী তরুণ নির্মাতারা অংশ নেবে। থাকছে সোস্যাল ফিল্ম সেকশন। এই সেকশনে আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক চলচ্চিত্র নিয়ে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে অংশ নেবে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের মোট ২১টি চলচ্চিত্র। এবার প্রথমবারের মতো বিভিন্ন দেশের শিশুদের বানানো চলচ্চিত্র নিয়ে একটি প্রতিযোগিতা বিভাগ থাকছে। এখান থেকে একটি চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য মনোনীত হবে। উৎসবে ছবি প্রদর্শনীর পাশাপাশি থাকছে কয়েকটি সেমিনার। আজ বুধবার জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে সকাল ১০টায় একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। পরিচালনা করবেন বিলি জে.ডি. পোর্টার। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থাকছে চলচ্চিত্র নির্মাণ কর্মশালা। পরিচালনা করবেন মেজবাহ রহমান সুমন। শুক্রবার নির্মাতা অমিতাভ রেজার পরিচালনায় থাকছে আরও একটি কর্মশালা। একই দিনে আবহাওয়া ও পরিবেশ পরিবর্তনের ওপর অনুষ্ঠিত হবে একটি সেমিনার। সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন ড. তৌহিদা রশিদ। শনিবার ভারতের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইন’ এর শিক্ষক শেখর মুখার্জীর পরিচালনায় কর্মশালায় অংশ নিবে ক্ষুদে নির্মাতারা। উৎসব শেষ হবে ৩০ জানুয়ারি।
×