ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সুজন চন্দ্র দে

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ২৪ জানুয়ারি ২০১৭

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ

সহকারি শিক্ষক (বিজ্ঞান), রণিখাই হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, কোম্পানীগঞ্জ, সিলেট মোবাইল : ০১৭১৬-৬৯১৫০৯ প্রিয় এস.এস.সি পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, অল্প কিছুদিন পরেই শুরু হতে যাচ্ছে তোমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এস.এস.সি পরীক্ষা সাধারণ একটি পরীক্ষার মতই; কিন্তু তার ফলাফল তোমাদের জীবনকে প্রভাবিত করবে। ভবিষ্যতে যখন তোমরা ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিবে তখন এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি পরীক্ষার ফলাফল বিবেচনা করা হবে। তাই বলা হয়, এস.এস.সি পরীক্ষা উন্নত জীবন গঠনের প্রথম ধাপ। তবে প্রস্তুতি নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করা যাবে না। ভাল ফলাফল করার জন্য আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। কথায় আছে, ছাত্রনং অধ্যয়নং তপঃ। ছাত্রজীবন হচ্ছে অধ্যবসায় করার সময়। যে যত বেশি অধ্যবসায় করবে, সে জীবনে ততই সফল হবে। ভাল ফলাফল পেতে নিয়মিত পড়ালেখার কোন বিকল্প নেই। অসদুপায় করে সাময়িকভাবে ভাল ফলাফল পেতে পার, কিন্তু এই ফলাফল তোমার জীবনে তেমন কাজে আসবে না। স্মরণ রেখ, ঈশ্বর তাকেই সাহায্য করেন, যে নিজেকে সাহায্য করে। পরীক্ষার ১০ দিন আগে- সবগুলো বিষয় ভালভাবে রিভিশন দিবে। ঐচ্ছিক বিষয়কেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। ঐচ্ছিক বিষয়ে প্রাপ্ত অতিরিক্ত নম্বর অ+ প্রাপ্তিতে নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে। যদি কোন কারণে প্রস্তুতি তেমন ভাল না থাকে তবে কিছু কৌশল অবলম্বন করবে। যেমন- কোনো একটি বিষয়ের গুরত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো আগেই ভালভাবে শেষ করবে। যে বিষয়ে দূর্বল সে বিষয়ে বাড়তি সময় দিবে এবং যে বিষয়ে ভাল প্রস্তুতি আছে সে বিষয়ও চর্চায় রাখবে; নতুবা ঐ বিষয়ে ঘাটতি দেখা দিবে। গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের গাণিতিক সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় সূত্রগুলো ভালভাবে আয়ত্ব করতে হবে। অনেক শিক্ষার্থীকেই বলতে শোনা যায়, সূত্র মনে থাকে না। সূত্র মনে রাখতে অনুশীলনের কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে তোমার দৈনিক পড়ার রুটিনে সূত্রের জন্য কিছু সময় বরাদ্দ রাখ। প্রয়োজনে নিজস্ব কিছু কলাকৌশল প্রয়োগ করতে পার। কোন গ্রুপ থেকে কতটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে কিংবা কোন গ্রুপ থেকে সর্বোচ্চ কতটি উত্তর দিতে হবে তা সম্পর্কে পূর্বধারণা থাকা আবশ্যক। পরীক্ষা পূর্ববর্তী সময়টাকে যে যত বেশি কাজে লাগাবে, সে তত সফল হবে। স্মরণ রাখবে- যতই সহজ বিষয় হোক না অন্তত ২/৩ দিন পূর্বে তোমার প্রথম দিনের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিবে। প্রথম পরীক্ষা ভাল হলে তোমার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে। পরীক্ষার আগের দিন- প্রবেশপত্র, রেজিঃ কার্ডসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (যেমন: কলম, পেন্সিল, ক্যালকুলেটর, জ্যামিতি বক্স) সাদা ফাইলের মধ্যে গুছিয়ে রাখবে। এতে কোনো তাড়া থাকবে না এবং ঠিক সময়ে পরীক্ষার হলে পৌঁছতে পারবে। ঐদিন অবশ্যই তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়তে হবে। পরীক্ষার দিন- সকালে বইয়ের সবগুলো অধ্যায় একনজরে দেখে নিবে এবং পরীক্ষার হলে ১০/১৫ মিনিট পূর্বে পৌঁছার চেষ্টা করবে। উত্তরপত্র পাওয়ার পর খুবই সাবধানে ওএমআর ফরম পূরণ করবে। যদি কোন ভুল হয় তবে বিনয়ের সাথে পরীক্ষার হলে কর্তব্যরত স্যারের সাহায্য চাইবে। এরপর পেন্সিল দিয়ে উত্তরপত্রের বামে ও উপরে মার্জিন দিবে এবং চেষ্টা করবে উত্তপত্রে যেন কোনরূপ কাটাকাটি না হয়। যদি কোন লাইন কাটতেই হয় তবে সমান্তরালে এক দাগ দিয়ে কেটে দিবে। সুন্দর ও পরিছন্ন খাতা তোমায় পরীক্ষকের সামনে মেধাবী রূপে উপস্থাপন করবে যা ভাল মার্কস পেতে সহায়ক হবে। তবে কোন অবস্থাতেই উত্তরপত্রে ঘষা-মাজা বা ভাঁজ করা যাবে না। প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর প্রথমেই তোমরা ৫-৬ মিনিট ধরে সকল প্রশ্ন ভালভাবে বুঝবে এবং প্রতিটি উত্তরের জন্য সময় বন্টন করে নিবে। উত্তর করতে গিয়ে যদি কোন প্রশ্নের উত্তর ভুলে যাও তবে অনুমান করে কিছু জায়গা রেখে দিবে। যদি শেষে উত্তর করতে না পার তবে এক দাগ দিয়ে কেটে দিবে। মনে রাখবে, সৃজনশীল প্রশ্নের প্রতিটি অংশের উত্তরে প্রশ্নের নম্বর লিখতে হবে যেমন- ১-ক, ১-খ, ১-গ, ১-ঘ। প্রশ্ন কমন না পড়লে জানা প্রশ্নের উত্তর শেষ করে অনুমান করে অন্য প্রশ্নের উত্তর লিখার চেষ্টা করবে। তবে অতিরিক্ত ও অপ্রাসঙ্গিক লিখে সময় এবং খাতা দুটোই নষ্ট করা অযৌক্তিক। এতে বেশি মার্ক পাওয়া তো যাবেই না; বরং তোমার সম্পর্কে পরীক্ষকের বিরূপ ধারণা জন্মাবে। খাতা জমা দেয়ার পূর্বে প্রশ্নের ক্রমিক নম্বর ঠিক আছে কিনা দেখে নিবে। সবশেষে স্যারকে সালাম দিয়ে বাড়ি ফিরবে। বিশ্রাম নিয়ে পরবর্তী পরীক্ষার প্রস্তুতি নিবে। আজকের পরীক্ষা কেমন হল? তা নিয়ে অনেকেই রীতিমত গবেষণা শুরু করে। যা পরবর্তী পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং আত্মবিশ্বাসে বিঘœ সৃষ্টি করে। আশা রাখি, তোমরা সবাই ভাল ফলাফল করতে সক্ষম হবে। দৈনিক জনকন্ঠ পরিবার ও আমার পক্ষ থেকে সবার জন্য শুভ কামনা রইল।
×