ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী

ভাল তেল হতে পারে মন্দ রান্নার ধরনের জন্য

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ২৪ জানুয়ারি ২০১৭

ভাল তেল হতে পারে মন্দ রান্নার ধরনের জন্য

আমরা অনেক রান্নাই করি, তেল দিয়ে ভাজি, ভাজতে ভাজতে ধোঁয়া বের হয়। রান্নার ধরণই এমন। সেই রান্না খাবার স্বাস্থ্যকর আর থাকেনা। রাস্তার পাশে হোক, ভালো রেস্তোরা হোক ভাজা তেল ধোঁয়া বেরুচ্ছে, আবার সেই কালো তেল ব্যবহারও করা হচ্ছে দীর্ঘদিন। রঞ্জন বিজ্ঞানে স্মোক পয়েন্ট বলে একটা কথা আছে। তেল গরম করতে করতে যখন এমন একটি বিন্দুতে পৌঁছানো যায় যে ধোঁয়া বের হয়, বোঝাগেলো স্মোক পয়েন্ট অতিক্রম করা গেছে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, পাম তেলের উচ্চতাপে সহনীয়তা অন্য অনেক তেলের চেয়ে বেশি। রান্নার তেল গরম করতে করতে একটু ধোয়া বের হলে ক্ষতি কি? কোনও তেল যখন স্মোক পয়েন্ট ছাড়িয়ে উত্তপ্ত হয়, তখন এর আনবিক গঠন ভাঙতে শুরু করে। এমনকি উৎপন্ন হতে পারে বিপজ্জনক ট্রান্সফ্যাট। তেলটি তখন এর পুষ্টিগুন হারিয়ে ফেলে এবং খাদ্যকে দেবে তিক্তবা পোড়া স্বাদ। একবার এটি সেই বিন্দুতে পৌঁছলে, সেই তেল গ্রহণ করা উচিত নয়। অন্যান্য সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুকি হলোঃ অতিউত্তপ্ত তেলের থেকে ধোঁয়া ঘাসের সাথে গ্রহণ করাও স্বাস্থ্যকর নয়। এতে থাকে বিষাক্ত ধুম এবং ক্ষতির ফ্রি-বেডিক্যালস্ যা কনিক রোগ এমনকি ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। সেজন্য স্টোভের নির্গমন পথ খুলে দিতে হয় তেল থেকে ধোঁয়া বের হলে, খুলে দিতে হয় জানালাও। অবশ্য এটি স্মরণে রাখা ভালো প্রত্যেকটি তেলের রয়েছে স্মোক পয়েন্টি, রান্নার পদ্ধতির সঙ্গে তেলকে খাপ খাইয়ে নিতে হয়। দেখা গেছে রান্নার তেলগুলোর মধ্যে পামফলের তেলের স্মোক পয়েন্ট উচ্চতম, এবং যেহেতু কড়া ফ্লেভার নেই, সেজন্য এটি সবধরনের রান্নার সঙ্গে উপযোগী এপিটাইজার থেকে ডেজার্ট সব প্রস্তুতির জন্য মানানসই। যেসব তেলের স্মোক পয়েন্ট নিম্ন, সেগুলোও স্বাস্থ্যকর তবে স্যালাড ড্রেফির জন্য এটি উপযোগী যেমন জলপাইতেল বা ওয়ালনাট তেল। কেবল ডোজতেলই নয় নানা কাজের ব্যবহার করা যেতে পারে পাম তেল বিশেষ করে পামফলের তেল বা লাল পামতেল। ভোজ তেল হিসাবে বাংলাদেশেও এর প্রসার বাড়ছে। এটি ট্রান্সফ্যাট মুক্ত এবং গৃহতাপে এটি অর্ধকঠিন। ব্রেকিং কাজে এর উপযোগিতা খুব বেশি, কেক, পেস্ট্রি তৈরিতে বেশ মানানসই। এর শেলফ্ লাইক বেশ দীর্ঘ, এর গন্ধ নাই, স্বাদ নাই। একটেবিল কামচ তেলে আছে ১২০ ক্যালোরি, ১৫ গ্রাম চর্বি, ৭ গ্রাম স্যাচুবেটেড ফ্যাট, কোনও শর্করা নেই, কোলেস্টেবোল নাই। পাম তেলের বিশষগুন হলো এতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন, বিটা-ক্যারোটিন এবং উচু মাত্রায় ভিটামিন ট কোট্রাইনোল। রক্তের কোলেস্টেরোলের উপর রয়েছে এর হিতকরী প্রভাব। টকোট্রাইনোলস্ ঃ হার্ট এ- আর্টেরি প্রটেকটারস’ প্রবন্ধে বিজ্ঞানী রবার্ট ক্রেহন এবং জুলি ক্রেলফ উল্লেখ করেছেন, পাম তেলের টকোট্রাইনোল ক্যারোটিড ধমনী পথ রোধ হওয়া খত্তন করতে পারে, এবং এতে হ্রাস পেতে পারে স্টোকের ঝুকি। এই দুজন বিজ্ঞানী আরো লক্ষ্য করেছেন টকোট্রাইনোল টিউমারের বাড়ন, গঠন ঠেকাতে কার্যকর। স্নায়ু ও পেশীর স্বাস্থ্যরক্ষায় ভিটামিনই কার্যকর। চীনা একাডেমী অব সায়েন্সের ২০০৯ সালের এক গবেষনায় দেখা গেছে, পাম তেল দেহকোষকে ইনদুলিনের প্রতিবেশি সংবেদনশীল করে তোলে, টাইপ২ ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তশর্করা মান কমে আছে। রান্নাতে কেবল বেকিং নয়, অর্ধ কঠিন হওয়াতে ফ্রাইকরা এবং সোটেং এ রান্নায় ভালো। আমেরিকান পাম ওয়েল কাউন্সিলের বক্তব্য পাম তেল সাবধান ভোজ তেলের চেয়ে বেশি। পামওয়েলের বিশেষগুণ অন্তর্গত এন্টিঅক্সিডেন্ট বিটা ক্যারোটিনও ভিটামিন ই র জন্য। ডক্টর বেটি ক্যামেন ত্বক কোষ রক্ষাও সার্বিক স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য পামতেল ব্যবহারের পরামর্শ দেন বিমেষ করে উচ্চমাত্রায় ভিটামিনই থাকার জন্য। ডাঃ ক্যামেন বলেন, পাম তেলে আরও রয়েছে ভিটামিন ডি কে। পাম তেলের এই পুষ্টগুনের জন্য ত্বক ও কেশের স্বাস্থ্য রক্ষায় এটি অনন্য।
×