ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সার্চ কমিটি গঠনে কেএম হাসানের নাম প্রস্তাব করেনি বিএনপি ॥ নজরুল ইসলাম খান

আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতিকে বিতর্কিত করতে চায় ॥ মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৪ জানুয়ারি ২০১৭

আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতিকে বিতর্কিত করতে চায় ॥ মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগের নেতারা রাষ্ট্রপতিকে বিতর্কিত করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সার্চ কমিটি বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে বিতর্কিত করতেই আওয়ামী লীগের নেতারা ভিন্ন ভিন্ন কথা বলছেন। সোমবার সন্ধ্যায় সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী ফোরামের আয়োজনে জিয়াউর রহমানের ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন। এদিকে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান দাবি করেছেন ইসি নিয়োগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপির বৈঠকে সার্চ কমিটি গঠনের কেএম হাসানের নাম প্রস্তাব করেনি বিএনপি। তিনি বলেন, আমরা যদি কেএম হাসানের নাম প্রস্তাব করেও থাকি তাহলেও তো কারও তা জানার কথা নয়। অথচ ওবায়দুল কাদের বলেছেন আমরা কেএম হাসানের নাম প্রস্তাব করেছি। তার কথা সত্য নয় উল্লেখ করেন নজরুল। সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত আরাফাত রহমান কোকো’র ২য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এদাবি করেন। বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে নিরপেক্ষ যোগ্য সার্চ কমিটি তৈরির প্রক্রিয়া বানচাল হলে জনগণ তা মেনে নেবে না। নিরপেক্ষ, যোগ্য, সাহসী নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য যে ব্যক্তিগুলোকে খুঁজে বের করতে হবে তার জন্য যোগ্য-নিরপেক্ষ সার্চ কমিটি দরকার। সেই প্রস্তাবই বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দিয়েছেন ১৩ দফা প্রস্তাবের মাধ্যমে। এটাকে বানচাল করার চেষ্টা হলে জনগণ গ্রহণ করবে না। তিনি বলেন, জনগণের স্বার্থে, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে, জবাবদিহিতামূলক দায়বদ্ধ একটা নির্বাচিত সরকার গঠনের স্বার্থে নেত্রীর ১৩ দফা মানা হোক। একটা নিরপেক্ষ সার্চ কমিটি গঠন করা হোক রাষ্ট্রপতির কাছে এ আহ্বান জানাচ্ছি। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে সেখানে কার নাম দিয়েছি দলের মহাসচিব এর জবাব দিয়েছেন। যে কথা শুধুই রাষ্ট্রপতি জানার কথা, সেই কথা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলতে পারেন, প্রকাশ করতে পারেন। কথাটা মিথ্যা। অথবা কথাটা সত্যও হতো, তার জানার কথা না, তার বলার কথা না, তারপরও বলছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে বড় ধরনের অস্থিরতা ও ভীতি কাজ করছে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপির বেঠকে সার্চ কমিটি গঠনে কে এম হাসানের নাম প্রস্তাব করেনি। ওবায়দুল কাদের এমন কথা বলে বেড়াচ্ছেন। ভয়ে ও অস্থিরতায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কী করবে, কী বলবে বুঝে উঠতে পারছে না উল্লেখ করেন। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের একটি বক্তব্যের কথা তুলে ধরে বলেন, ওবায়দুল কাদের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন- ক্ষমতা হারালে জানে বাঁচবেন না। তার এই কথায় প্রমাণ হয়, আওয়ামী লীগ সীমাহীন দুর্নীতি করেছে। আওয়ামী লীগ নিজেরাই জানে তারা অন্যায় করেছে। নির্যাতন করছে, দুর্নীতি করেছে, জুলুম করেছে। আর ক্ষমতা হারালে তা প্রমাণ হয়ে যাবে। তারা এত ভয়ে আছে যে, এ ধরনের অনুভূতি পাবলিকলি ব্যক্ত করছেন। তিনি আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আগেই বলেছেন দল ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগের মতো প্রতিহিংসাপরায়ণ হবে না। তারা বিএনপির ওপর ইচ্ছামতো নির্যাতন জুলুম করছে, কোন কিছুতে জিয়ার নাম দেখলেই সেটা পরিবর্তন করছে ভেঙ্গে ফেলেছে। জিয়া পরিবারকে বিপদাপন্ন করছে। কিন্তু আমরা ক্ষমতায় গেলে এমন প্রতিহিংসাপরায়ণ হবো না। তিনি আরাফাত রহমান কোকো প্রসঙ্গে বলেন, কোকো ছিলেন সাধারণ নাগরিক। রাজনীতির অঙ্গনের কেউ না হয়েও সরকারের রোষানলে পড়েছিলেন। তার অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, কোকো বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে বিরাট পরিবর্তন এনে দিয়ে গেছেন। আজ দেশে ক্রিকেটের যে বিশ্বব্যাপী নাম তার প্রথম ধাপই শুরু হয়েছে প্রচারবিমুখ কোকোর হাত ধরে। কোকো সব সময়ই প্রচার বিমুখ ছিলেন। কোন রাজনীতিবিদ ছিলেন না। কোন পদ-পদবির জন্য কাঙাল ছিলেন না। কিন্তু তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ অনেক অপপ্রচার চালিয়েছে। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে করা হয়েছিল উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, কেএম হাসান প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের যা বলছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাদের কাছেও খবর আছে তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সবচেয়ে অসভ্য নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) জাবেদ আলীর নাম প্রস্তাব করেছেন। সেসব বিষয় নিয়ে তো হৈচৈ করছি না। কারণ, রাষ্ট্রপতির প্রতি আমাদের আস্থা আছে। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতিকে বিতর্কিত করতে এসব কথা বার্তা ছড়াচ্ছে উল্লেখ করেন। সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ফারজানা লিলি, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
×