ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

রূপকল্প ’২১ ৫শ’ কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা;###;তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তৈরির উদ্যোগ ;###;ফ্রিল্যান্সাররাই মূলত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে কাজ করবেন

তিন স্তরের ‘পিরামিড স্ট্রাকচার’ নিয়ে কাজ চলছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৪ জানুয়ারি ২০১৭

তিন স্তরের ‘পিরামিড স্ট্রাকচার’ নিয়ে কাজ চলছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে তিন স্তরে তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ স্তরে থাকবেন ‘ইনোভেটররা’। তাদের মেধা কাজে লাগিয়ে ‘এচিভাররা’ কাজ করবেন। সর্বশেষ স্তরে থাকবে ‘ফ্রিল্যান্সিং’। ফ্রিল্যান্সাররা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে কাজ করবেন। এজন্য বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচী। সোমবার রাজধানীর কাওরানবাজারে জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ‘ক্রিয়েটিং এ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইকো-সিস্টেম-গবর্নমেন্টস রোল’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ কথা বলেন। তথ্য ও যোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে উক্ত গোলটেবিল আলোচনায় সান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক সিপিএ ভেঞ্চার ক্যাপিটালের কনসালট্যান্ট টিনা জাবিন, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান জামিল আজহার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের মহাপরিচালক বনমালী ভৌমিক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সুশান্ত কুমার সাহা, বেসিসের সাবেক সভাপতি শামীম আহসান, সহজ ডট কমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মালিহা এম কাদির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দেশে স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম তৈরির জন্য তিন স্তরের ‘পিরামিড স্ট্রাকচার’ নিয়ে কাজ করছে সরকার। প্রথম স্তরে থাকবেন ইনোভেটররা। পরের স্তরে থাকবেন এচিভারররা। সবশেষে থাকবেন ফ্রিল্যান্সাররা। ইনোভেটররা হয়ত সংখ্যায় অল্প হবেন কিন্তু দেশে আইটি শিল্পে তারা বিশাল অবদান রাখবেন। এর পরের স্তরে থাকবেন এচিভারররা, যারা আইটি ও আইটিএস গ্র্যাজুয়েশন করে কোম্পানির সিইও বা সিএফও হবেন। তাদের মেধা লালন করতে সরকার সহযোগিতা দেবে। সবশেষে থাকবেন যারা আমাদের ফ্রিল্যান্সিং খাতসহ অন্যান্য খাতে সংশ্লিষ্ট এবং এ খাতকে এগিয়ে নিতে ছোট ছোট উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছেন। এ তিন স্তরে কাজ হলে দেশ আগামী কয়েক বছরের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশ্বমানের পর্যায়ে চলে যাবে। সরকারের ভিশন ’২১ বাস্তবায়নের জন্য সব ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। দেশের প্রতিটি মানুষকে প্রযুক্তি সুবিধা দেয়া হবে। ২০২১ সালের মধ্যে সবার হাতের নাগালে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দেয়ার জন্য কাজ চলছে। তথ্যপ্রযুক্তি হবে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম খাত। এ খাতে তাই দক্ষ জনবল তৈরি করা জরুরী। দক্ষ জনবল তৈরির জন্য ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিকাশে জেলায় জেলায় আইসিটি পার্ক নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে কয়েকটি জেলায় আইসিটি পার্ক নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেÑ সিলেটে ইলেক্ট্রনিক সিটি, ঢাকার মহাখালীতে আইটি ভিলেজ, রাজশাহী আইটি ভিলেজ, কাওরানবাজারে জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, যশোর সফটওয়্যার পার্ক, নাটোর ফ্রিল্যান্সার ইনস্টিটিউট, গাজীপুরে আইসিটি পার্কসহ পর্যায়ক্রমে সব জেলায় আইসিটি পার্ক হবে। ফ্রিল্যান্সিং তথ্যপ্রযুক্তির খাতে আয়ের অন্যতম উৎস। ঘরে বসেই এ খাত থেকে বড় অঙ্কের টাকা আয় করা সম্ভব। সরকার এজন্য দেশে ৫৫ হাজার ফ্রিল্যান্সার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। দক্ষ ফ্রিল্যান্সার গড়ে উঠলে ভিশন ২০২১-এর মধ্যে এ খাতে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হবে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে ‘ইনোভেশন ডিজাইন এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ একাডেমি’ (আইডিইএ) নামে নতুন একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। নতুন প্রকল্পে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক উদ্ভাবন, সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তাদের সিড ফান্ড প্রদান ও গবেষণা ও উন্নয়নে সহায়তা দেয়া হবে। এভাবেই দেশে একটি অনন্য ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইকো-সিস্টেম তৈরি করতে আমরা কাজ করছি। গোলটেবিল আয়োজনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, দেশে একটি স্টার্ট-আপ ইকো-সিস্টেম, ইনোভেশন কালচার তৈরি করতে আমরা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শুনতে চাই যে, সরকারের কী কী করণীয়। আমরা প্রাইভেট সেক্টরগুলোর কাছ থেকে জানতে চাই তাদের প্রবৃদ্ধিতে সরকারের কাছে কোন্ ধরনের সুযোগ-সুবিধা চান। এজন্য বিশেষজ্ঞ ও প্রাইভেট সেক্টরের মতামত প্রয়োজন। আইসিটি ডিভিশন এ খাতসংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে একযোগে কাজ করার মাধ্যমে একটি ক্রিয়েটিভ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইকো-সিস্টেম সৃষ্টি করা হবে। গোলটেবিল আলোচনায় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইকো-সিস্টেম গড়ে তুলতে করণীয় ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের বেস্ট প্র্যাকটিসগুলো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো স্টেট ইউনির্ভাসিটির ড. মাহমুদ হুসাইন কি-নোট উপস্থাপন করেন। দেশী তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সংযোগ, স্টার্ট-আপদের সহযোগিতা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ গৃহীত ইনোভেশন ডিজাইন এ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিওরশিপ একাডেমির (আইডিয়া) উদ্যোগে গোলটেবিল আলোচনায় বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
×