ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন

পুলিশের হাত পা বেঁধে দিলে কাজ করবে কিভাবে ॥ আদালতকে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২৪ জানুয়ারি ২০১৭

পুলিশের হাত পা বেঁধে দিলে কাজ করবে কিভাবে ॥ আদালতকে প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিচারকদের বুঝতে হবে তাদের নিরাপত্তা কারা দিচ্ছে। পুলিশের হাত-পা বেঁধে দেয়া হলে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে কিভাবে? সোমবার সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর পুুলিশ দরবার হলে আয়োজিত কল্যাণসভা নামে অনুষ্ঠানে এই প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। নির্যাতন, হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন নিয়ে উচ্চ আদালতের একটি রায়ের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ধরনের রায় বিচারকরা কেন দিলেন তা বোধগম্য নয়। গত বছরের নবেম্বরে প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে, পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামিকে নির্যাতন বা নির্যাতনে মৃত্যুর প্রমাণ পাওয়া গেলে মামলা দায়েরের অপেক্ষা না করে বিচারক স্বপ্রণোদিত হয়ে অপরাধ আমলে নেবেন। অনুষ্ঠানে পুলিশের দাবিদাওয়ার বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার সময়ে এসব প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ের কারণে অনেক সময় সরকারী কাজে সমস্যার সৃষ্টি হয়। আমরা কি আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করব না ? মানুষের জানমাল রক্ষা করব না? পুলিশ কাজ করবে না? পুলিশের হাত পা বেঁধে দেয়া হলে তারা দায়িত্ব পালন করবে কিভাবে? পুলিশ দশটা কাজ করতে গেলে দুই একটা কাজ ভুল হতেই পারে। সোমবার রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর পুলিশের দাবিদাওয়ার বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার সময়ে এই কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। দেশী-বিদেশী একটি চক্র দেশের উন্নয়নকে ব্যাহত করতে চায়। জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় পুলিশের সাফল্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সম্প্রতি আশুলিয়ার আশকোনা এবং মিরপুরের কল্যাণপুর পুলিশ জঙ্গীবিরোধী বিশেষ অভিযান সফলভাবে পরিচালনা করেছে। পুলিশ জঙ্গী হামলার মাস্টারমাইন্ড, অস্ত্রদাতা, প্রশিক্ষক এবং আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রশংসা করে বলেন, ‘শুধু দেশেই নয়, গত দুই যুগের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ পুলিশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে নিজেদের কর্মদক্ষতা ও পেশাদারিত্বের পরিচয় প্রদান করে বহির্বিশ্বে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ একটি আত্মমর্যাদাশীল এবং আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু দেশী-বিদেশী একটি চক্র বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রাকে বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। গণতান্ত্রিক পথে মানুষের মন জয় করতে ব্যর্থ হয়ে এরা সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোমলমতি যুবক-কিশোরদের ধর্মের নামে বিভ্রান্ত করে জঙ্গীবাদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ধর্মের অপব্যাখ্যা করে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে সহিংস আক্রমণের মাধ্যমে মানুষ হত্যার মতো বর্বরোচিত কর্মকা-ে প্ররোচিত করছে। সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদকে একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ এবং আমাদের উন্নয়নের প্রধান বাধা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি হলি আর্টিজান এবং শোলাকিয়ার জঙ্গী হামলা মোকাবেলায় ৪ জন পুলিশ সদস্য আত্মোৎসর্গ করেছেন। নির্ভীক এই ৪ পুলিশ সদস্যের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অসংখ্য প্রাণ রক্ষা পেয়েছে। ঔপনিবেশিক আমলের ধ্যান-ধারণার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সাথে একাত্ম হয়ে পুলিশের সেবাকে আরও জনবান্ধব করতে হবে। প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে অসহায় ও বিপন্ন মানুষের প্রতি অকুণ্ঠচিত্তে সেবার হাত প্রসারিত করতে হবে। শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে কমিউনিটি পুলিশিংকে আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার ভাষণের উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলেন, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ভাষণে যেকথা বলেছিলেন-আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। আমাদের পুলিশবাহিনী স্বাধীন দেশের পুলিশবাহিনী। আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে দায়িত্ববোধ মানসিকতা নিয়ে জনসেবা করতে হবে। শান্তিময় ও নিরাপদ সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমকে সরকার আরও জোরদার করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর পুলিশকে আধুনিক ও জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছি। বাংলাদেশ একটি আত্মমর্যাদাশীল এবং আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত উল্লেখ করে বলেন, আইন-শৃঙ্খলা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থকে আমরা ব্যয় নয়, বিনিয়োগ মনে করি। আমাদের সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কার্যক্রমের বিস্তৃতি দেশের প্রধান আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাংলাদেশ পুলিশেও সমভাবে বিস্তৃত হয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্বায়নের প্রেক্ষিতে পুলিশের কর্মক্ষেত্র ও কর্মব্যাপ্তি প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেবল চুরি-ডাকাতি, হত্যা-রাহাজানি বন্ধ নয়, পুলিশের কাজের ক্ষেত্র আজ বিস্তৃত হয়েছে-সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং, মাদক পাচার এবং পণ্য চোরাচালান ও নারী-শিশু পাচার প্রতিরোধে, এমনকি জলজ ও বনজ সম্পদ এবং পরিবেশ সংরক্ষণেও। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের নারী সদস্যগণ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে। বৈশ্বিক পরিম-লে আমাদের পুলিশ সদস্যদের অর্জিত অভিজ্ঞতা দেশের আইন-শৃঙ্খলাসহ গণতন্ত্রের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ বাহিনীর আধুনিকায়ন পরিবর্তনশীল বিশ্বে প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সাথে সাথে নিরাপত্তা ও অপরাধের নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশের আধুনিকায়নের বিকল্প নেই। বাংলাদেশ পুলিশের কৌশলগত পরিকল্পনা, অবকাঠামো এবং মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করে কর্মক্ষেত্রে পুলিশের সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। তিনি পুলিশের উন্নয়নে গৃহীত সরকারে বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, তাঁর সরকারই ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশ পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে ৭৩৯টি ক্যাডারপদসহ ৩২ হাজার ৩১টি পদ সৃজন করে। দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের জনবল যথেষ্ট নয়। তাঁর সরকার বাংলাদেশ পুলিশে আরও ৫০ হাজার জনবল নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৪১ হাজার পদ সৃজন করা হয়েছে। বর্ধিত জনবলের সাথে প্রয়োজনীয় যানবাহন ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহের বিষয়টিও আমাদের বিবেচনায় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কাউন্টার টেররিজম ইউনিট গঠন করে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ গঠন করা হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ গঠনের ফলে শিল্প প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে গার্মেন্টস সেক্টরে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, আরও বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট যেমন-পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশ এবং ২টি স্পেশাল সিকিউরিটি এ্যান্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয়েছে। একইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ব্যক্তির নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও সুসংহত ও জোরদারের করতে তাঁর সরকার বিশেষায়িত ব্যাটালিয়ন গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর এসআই/সার্জেন্ট পদকে ৩য় থেকে ২য় শ্রেণীতে এবং ইন্সপেক্টর পদকে ২য় থেকে ১ম শ্রেণীতে উন্নীত করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির জনক প্রদত্ত আইজিপি’র র‌্যাংক ব্যাজ পুনঃপ্রবর্তনপূর্বক আইজিপি’র পদকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় উন্নীতকরণ এবং পুলিশ বিভাগের ২টি গ্রেড-২ পদকে গ্রেড-১ পদে উন্নীত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এপিবিএন বিশেষায়িত ট্রেনিং সেন্টারসহ সারাদেশে ৩০টি ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। সেই সাথে পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে সিআইডিতে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেন্টার এবং সাইবার ক্রাইম ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের জন্য ঝুঁকি ভাতা প্রবর্তন, পুলিশের আবাসন, চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধিসহ পুলিশের জনসেবা বুদ্ধির জন্য সরকারের চালু করা ‘বিডি পুলিশ হেল্প লাইন’ নামক এ্যাপ চালুর প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার পথ অনুসরণ করে আমরা বাংলাদেশ পুলিশে নারীদের নিয়োগ দিচ্ছি। প্রথমবারের মতো ২০১৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশে ট্রাফিক সার্জেন্ট হিসেবে নারীদের নিয়োগ প্রদান করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশে সর্বপ্রথম ১৯৭৪ সালে নারীদের নিয়োগ প্রদান করেন। বাংলাদেশ পুলিশ পদক ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এত বিপুল সংখ্যক পদক আর কখনও প্রদান করা হয়নি। এ পদক আপনাদের কাজের স্বীকৃতির পাশাপাশি আপনাদেরকে ভবিষ্যতেও আরও পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করবে। পাশাপাশি আপনারা সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে ব্রতী হবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর রাজনৈতিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নে দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা অব্যাহত থাকলে আমরা অচিরেই জাতির জনকের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো। এ সময় দেশের দারিদ্র্যের হার ২২ শতাংশে কমিয়ে আনা, ১২৩ ভাগ বেতন বৃদ্ধি, বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জজন্য বৃত্তি, উপবৃত্তি প্রদানসহ তাঁর সরকারের সময়ে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে তা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রেখেছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। আমরা কারও কাছে হাত পেতে নয়, ভিক্ষা করে নয়- নিজেদেরকে আত্মনির্ভরশীল, মর্যাদাবান জাতি হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এই দেশকে আমরা ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের তালিকায় স্থান পাবে ইনশাল্লাহ। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ হবে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ। সেই লক্ষ্য অর্জনেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি বলে বক্তৃতায় উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। সোমবার রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইজিপি একেএম শহীদুল হক এবং প্যারেড কমিটির সভাপতি অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ মোখলেসুর রহমান। ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭’ উপলক্ষে পুলিশ সদস্যদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন প্রধানমমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্যারেড কমান্ডার পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারকে সঙ্গে করে একটি খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সদস্যদের মাঝে ৪টি ক্যাটাগরিতে ১৩২ জন পুলিশ সদস্যের মাঝে বাংলাদেশ পুলিশ পদক ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক বিতরণ করেন। পদক বিতরণের পর প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সিআইডি’র ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি, সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেন্টার এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও একাত্তরের বীর শহীদদের স্মরণে নির্মিত ‘রাজারবাগ-৭১’ নামের আবক্ষ মূর্তির নামফলক উšে§াচন করেন। প্রধানমন্ত্রী উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশ সপ্তাহ ২০১৭ উদযাপন উপলক্ষে একটি কেক কাটেন। মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তরের মেয়রসহ সামরিক ও বেসামরিক পর্যায়ের উর্র্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিদেশী কূটনীতিক, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ, দাতা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। দ্বিতীয় পুলিশ ব্যারাক প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত ॥ বাসস জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পুলিশের আবাস হিসেবে বর্তমান রাজারবাগ পুলিশ লাইন অপ্রতূল হয়ে পড়ায় সরকার নগরীতে দ্বিতীয় পুলিশ ব্যারাক প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ব্যারাক প্রতিষ্ঠার জন্য উপযুক্ত জমি খোঁজা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব পালনকালে পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধানের জন্য পুলিশ সদস্যদের বছরে ৪ সেট ইউনিফর্ম দেয়ার আশ্বাস দেন। তিনি পুলিশ বাহিনীর চিকিৎসার জন্য সকল সরকারী হাসপাতালে পৃথক ব্যবস্থায় পদক্ষেপ গ্রহণেরও আশ্বাস দেন। শেখ হাসিনা বলেন, দেশে ও বিদেশে পুলিশ বাহিনীর প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×