ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পুঁজিবাজারে তিন মাসে বিও বেড়েছে ২৯ হাজার

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২৪ জানুয়ারি ২০১৭

পুঁজিবাজারে তিন মাসে বিও বেড়েছে ২৯ হাজার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ছে। এরই প্রতিফলন ঘটেছে বেনিফিসিয়ারি অনার্স বা বিও এ্যাকাউন্ট খোলার প্রবণতায়। এক মাসের ব্যবধানে বাজারে নতুন বিও খোলা হয়েছে ১০ হাজারের বেশি। আর গত তিন মাসে মোট বিও বেড়েছে ২৯ হাজারের বেশি। ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী কোম্পানি সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে এ খবর জানা গেছে। সিডিবিএলের তথ্য মতে, সোমবার পর্যন্ত মোট বিও রয়েছে ২৯ লাখ ৪৯ হাজার ৬৫২টি। এক মাস আগে যার সংখ্যা ছিল ২৯ লাখ ৩৯ হাজার ৬৫১টি। আর গত নবেম্বরে বিও সংখ্যা ছিল ২৯ লাখ ২০ হাজার ২৯টি। অর্থাৎ তিন মাসে বাজারে বিও বেড়েছে ২৯ হাজার ৬৩টি। বর্তমানে যে বিও রয়েছে এর মধ্যে পুরুষ এ্যাকাউন্টধারীর সংখ্যা ২১ লাখ ৪২ হাজার ৫২টি। অন্যদিকে নারী বিও সংখ্যা রয়েছে ৭ লাখ ৯৫ হাজার ৯১৮টি। আর বর্তমানে কোম্পানির বিও সংখ্যা রয়েছে ১১ হাজার ১২২টি। গত কিছুদিন আগেও বিও এ্যাকাউন্ট খোলার প্রবণতায় কিছুটা ভাটা ছিল। ২০১০ সালের পর থেকে মূলত বিনিয়োগকারী এবং সাধারণ জনগণের পুঁজিবাজারের প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হয়। যার ফলে বাজার ছাড়াতে শুরু করেন বিনিয়োগকারীরা। অপরদিকে সাধারণ জনগণও পুঁজিবাজারমুখী হননি। যে কারণে একেবারে থমকে যায় বিও খোলা। কোন কোন হাউসে দিনে একটি বিও খোলা হয়নি এমন নজিরও রয়েছে। এর পর ২০১২ সাল থেকে ধীরে ধীরে বিও বাড়তে থাকে। তবে বর্তমানে বাজার ভাল থাকায় আবারও নতুন এ্যাকাউন্ট খোলার পরিমাণ বাড়ছে। এ প্রসঙ্গে মিডওয়ে সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজার ভাল না হলে এখানে বিনিয়োগকারীরা আসবেন না। এটা খুবই স্বাভাবিক। এখন পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন এটা পুঁজিবাজারের ভাল লক্ষণ। আর এটা দেখে পুরাতন বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও পুঁজিবাজারে ফিরে আসছেন। একই প্রসঙ্গে জয়তুন সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, বাজারের সার্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে বিও এ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়টি জড়িত। বাজারে ভাল থাকলেই এ্যাকাউন্ট সংখ্যা। এর আগে সময় মতো বিও ফি না দেয়ায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ২ লাখের বেশি বিও হিসাব। সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রধানত দুই কারণে এবার অসংখ্য বিও বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে বাজারের মন্দা পরিস্থিতি অন্যটি প্রাইমারি মার্কেট থেকে বিনিয়োগকারীদের সুবিধা না পাওয়া। যে কারণে বিনিয়োগকারীরা ৫০০ টাকা দিয়ে বিও নবায়ন করেননি। যার ফলে এসব এ্যাকাউন্ট বাতিল হয়ে গেছে। সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) ডিপোজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা, ২০০৩ এর তফসিল-৪ অনুযায়ী, বিও হিসাব পরিচালনার জন্য ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারী বা বিনিয়োগকারীকে নির্ধারিত হারে বার্ষিক হিসাব রক্ষণ ফি দিয়ে হিসাব নবায়ন করতে হয়। এর আগে পঞ্জিকা বর্ষ হিসেবে প্রতি বছর ডিসেম্বরে এই ফি জমা নেয়া হতো। তবে ২০১০ সালের জুন মাসে বিএসইসি বিও হিসাব নবায়নের সময় পরিবর্তন করে বার্ষিক ফি প্রদানের সময় জুন মাস নির্ধারণ করে। এ সময়ে বিও নবায়ন ফি ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়। এরপর বিএসইসির জারি করা ২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল এক সার্কুলারে ৩০ জুনের মধ্যে বিও হিসাব নবায়নের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। না হলে তা বাতিল করা হবে বলে ওই সার্কুলারে বলা হয়েছিল।
×